দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মধ্যে একমাত্র রূপালী ব্যাংক মোবাইল ব্যাংকিং সেবা প্রদান করছে। রূপালী ব্যাংক শিওরক্যাশ একটি পূর্ণাঙ্গ মোবাইল ব্যাংকিং এবং পেমেন্ট সেবা- যার মাধ্যমে প্রায় ২ কোটি গ্রাহক সারাদেশে টাকা পাঠাতে, বিল দিতে, মোবাইল রিচার্জ করতে এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বেতন দিতে পারছেন। এছাড়াও দেশব্যাপী ১ লক্ষ ৮০ হাজার্রেও বেশি এজেন্টের মাধ্যমে টাকা লেনদেন করতে পারছেন গ্রাহকেরা। তবে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে সারাদেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের মায়েদের হাতে উপবৃত্তি পৌঁছে দিয়ে এই প্রকল্পে ধারাবাহিক সফলতা অর্জন করেছে ব্যাংকটি।
জানাগেছে, গত তিন বছর ধরে ’মায়ের হাসি’ নামে এই মোবাইল ব্যাংকিং প্রকল্পটি পরিচালনা করছে রূপালী ব্যাংক। এই প্রকল্পের আওতায় এখন পর্যন্ত ১ কোটি ৭৮ লক্ষ মায়ের মোবাইলে ব্যাংক একাউন্ট খোলা হয়েছে এবং ডিজিটাল পদ্ধতিতে উপবৃত্তির টাকা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে অ্যাকাউন্টগুলোতে। নিজস্ব ব্যাংক একাউন্ট থাকায় এ উদ্যোগ নারীর ক্ষমতায়নেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। আর উপবৃত্তির টাকা পেতে আগের মতো সংসারের কাজ ফেলে দূরের বিতরণ কেন্দ্রে যেতে হচ্ছে না মায়েদের।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন বলেন, “মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে সারাদেশে প্রাথমিক শিক্ষা উপবৃত্তি বিতরণ বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ডিজিটালাইজেশন প্রকল্প। ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপকার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ‘মায়ের হাসি’ নামের এই উদ্যোগকে সর্বোচ্চ গুরূত্ব দিয়ে থাকেন। এর মাধ্যমে আমরা প্রতি বছর সারা দেশে ১ কোটি মায়েদের কাছে উপবৃত্তির টাকা পৌঁছে দিচ্ছি।”
মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেন বলেন,“এই প্রকল্পের মাধ্যমে সারাদেশে ৬৭ হাজার স্কুলকে ডিজিটালাইজেশনে অভ্যস্থ করতে পেরেছি। এখন আমরা প্রতি তিন মাসে সবগুলো সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ডিজিটাল পদ্ধতিতে তথ্য এবং উপাত্ত সংগ্রহ করছি, যা প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।”
রূপালী ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ বলেন, “সরকারের সবচেয়ে বড় ডিজিটাল পেমেন্ট সেবায় অংশগ্রহণ করতে পেরে রূপালী ব্যাংক অত্যন্ত গর্বিত। সারাদেশে প্রায় ১ কোটি ৫০ লক্ষ মানুষ সরকারের আর্থিক সুবিধা পায় এবং সর্ববৃহৎ এই প্রকল্পে সুবিধাভোগীর সংখ্যা ১ কোটি। আমরা অন্যান্য সামাজিক নিরাপত্তা প্রকল্পগুলোর ডিজিটালাইজেশনে একইভাবে সরকারের সাথে কাজ করতে চাই।”
শিওরক্যাশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. শাহাদাত খান বলেন, “এই প্রকল্পের জন্যে আমরা একটি কাস্টমাইজড সফটওয়্যার এবং ইন্টারনেট পোর্টাল তৈরি করেছি, যা সারাদেশে ব্যবহার হচ্ছে। প্রকল্পের প্রয়োজন অনুযায়ী এই সফটওয়্যার তৈরি করেছে এ দেশের কিছু মেধাবী তরুণ-তরুণী, যা আমাদের জন্য অত্যন্ত আনন্দের।”