১৩০০ কর্মী ছাঁটাইয়ের মাস না যেতেই চাকরি হারালেন ভিডিও কনফারেন্সিং প্লাটফর্ম জুমের প্রেসিডেন্ট গ্রেগ টম্ব। ‘কোনো কারণ ছাড়াই’ তাকে বিদায় দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি। অবশ্য নিয়োগকালীন চুক্তি অনুসারে, বিদায়লগ্নের সব সুযোগ-সুবিধা পাবেন তিনি।
জুম কর্তৃপক্ষের খবর, টম্বের জায়গায় অন্য কাউকে আপাতত নেয়ার চিন্তা করছে না প্রতিষ্ঠানটি।
২০১১ সালে জুম প্রতিষ্ঠা করেন এরিক ইউয়ান। বর্তমানে তিনিই প্রধান নির্বাহীর দায়িত্ব পালন করছেন। এরিক এখন বিশ্বের ১৩৩ নম্বর ধনী। ফোর্বসের জরিপ বলছে, তার মোট সম্পদের পরিমাণ ১ হাজার ৩২০ কোটি মার্কিন ডলার।
২০২২ সালে এই পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছিল ব্যবসায়ী ও গুগলের সাবেক কর্মকর্তা টম্বকে। এরপর থেকেই তিনি আয় ও বিক্রয় সংক্রান্ত কাজ পরিচালনা করে আসছিলেন। সংস্থাটির উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা পালন করেন তিনি। তিনি সরাসরি জুমের সিইও এরিক ইউয়ানকে জবাবদিহি করেন।
২০২০ সালে করোনাভাইরাসের কারণে লকডাউন শুরু হলে ব্যাপকভাবে চাহিদা বাড়তে থাকে জুমের। তবে করোনাভাইরাসের ভয়াবহতা কমে আসায় ও লকডাউন উঠে যাওয়ায় চাহিদা কমতে থাকে এই প্লাটফর্মটির। এরপরই এটি কর্মী ছাঁটাই শুরু করে।
করোনার ভয়াবহতার সময় সবার কাছেই অত্যন্ত প্রয়োজনীয় হয়ে ওঠা এই অ্যাপটি গত মাসের ৭ ফেব্রুয়ারি ঘোষণা করে, এটি প্লাটফর্মটির ১৫ শতাংশ বা ১৩০০ কর্মী ছাঁটাই করছে। কোম্পানিটির ব্লগপোস্টে লেখা হয়, এ বছরে ইউয়ান বেতনের ৯৮ শতাংশ নিচ্ছেন না এবং তার নির্বাহী বোনাসও ত্যাগ করেছেন। ইউয়ান জানিয়েছেন, নির্বাহী নেতৃত্বে থাকা সদস্যরাও বোনাস ছেড়ে দিয়েছেন এবং বেতনের ২০ শতাংশ কেটে রাখায় সম্মত হয়েছেন।
এর আগে, গুগলের মূল প্রতিষ্ঠান অ্যালফাবেট ইনকরপোরেটেড এক সঙ্গে প্রায় ১২ হাজার কর্মী ছাঁটাই করার সিদ্ধান্তের কথা জানায়। যা তাদের মোট কর্মীর ছয় শতাংশ। প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, কঠিন অর্থনৈতিক বাস্তবতার সম্মুখীন হওয়ায় এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে তারা।
সম্প্রতি কর্মী ছাঁটাই করে আলোচনায় আসে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটার। এরপর একই পথে হাটে ফেসবুকের মূল কোম্পানি মেটা। এরপর বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় আরেক প্রতিষ্ঠান অ্যামাজন তাদের ১০ হাজার কর্মী ছাঁটাই করবে বলে সাফ জানিয়ে দেয়।
করোনা মহামারির ধাক্কা কাটিয়ে উঠে বিশ্ব অর্থনীতির চাকা যখন সচল হচ্ছে তখন প্রযুক্তিবিষয়ক প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মী ছাঁটাইয়ের কারণে চাকরির বাজারে খেই হারাচ্ছেন অনেকে।