বিশ্বজুড়ে নতুন এক প্রযুক্তি এনেছে বিশ্বের বৃহত্তম প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান মেটা। প্রযুক্তিটি একটি ওপেন সোর্স সফটওয়্যার টুল; যার নাম ‘হ্যাশার-ম্যাচার-অ্যাকশনার’। সংক্ষেপে ‘এইচএমএ’। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যুক্ত এই টুলটিকে জঙ্গিবাদ মোকাবিলার মোক্ষম হাতিয়ার হিসেবে দেখছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের মালিকাধীন প্রতিষ্ঠানটি।
আগামী জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য গ্লোবাল ইন্টারনেট ফোরাম টু কাউন্টার টেরোরিজমের (জিআইএফসিটি) পরিচালনা বোর্ডে সভাপতিত্ব করবে মেটা। ২০১৭ সালে প্রতিষ্ঠিত এই অলাভজনক সংস্থাটি। সংস্থার অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা-সদস্য হিসেবে আগেভাগেই এইচএমএ উন্মোচনের ঘোষণা দিয়েছে মেটা।
বলা হচ্ছে, এই এইচএমএ টুলের মাধ্যমে ‘জঙ্গিবাদ সংশ্লিষ্ট’ হতে পারে এমন কনটেন্টের জন্য একটি ‘ডিজিটাল ফুটপ্রিন্ট’ আগে থেকেই তৈরি থাকবে। এরপর যখনই এমন কোনো কনটেন্ট প্রকাশ পাবে তখন এইচএমএ টুল আগের ডিজিটাল ফুটপ্রিন্টের সাথে মিলিয়ে সেই কনটেন্ট নিজেই শনাক্ত ও মুছে ফেলতে পারবে।
মেটার গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স বিষয়ক প্রেসিডেন্ট নিক ক্লেগ জানিয়েছেন, এইচএমএ টুলটি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংস্থাকে ব্যাপক হারে জঙ্গিবাদ সংশ্লিষ্ট কনটেন্ট (ছবি, ভিডিও ইত্যাদি) শনাক্ত ও মুছে ফেলতে সাহায্য করবে। জঙ্গিবাদ ছাড়াও শিশুদের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানিমূলক কনটেন্টসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক ও আপত্তিজনক কনটেন্ট শনাক্ত এবং মুছে ফেলতেও সক্ষম হবে এই টুল।
মেটা জানিয়েছে, জিআইএফসিটি সদস্যভুক্তি প্রতিষ্ঠান ও সদস্যগুলো নিজেদের মধ্যে এমন ডিজিটাল ফুটপ্রিন্ট বিনিময় করে থাকে। ফলে এইচএমএ টুলে যত বেশি প্রতিষ্ঠান সম্পৃক্ত হবে তত বেশি কার্যকরভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জঙ্গিবাদ মোকাবিলা করা যাবে।
তথ্য বলছে, গত বছর বিশ্বজুড়ে সাইবার নিরাপত্তা ও সুরক্ষায় প্রায় ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ করেছে মেটা। পাশাপাশি মেটা’র প্রায় ৪০ হাজার কর্মী এই কাজে নিয়োজিত আছেন।
সামাজিক মাধ্যমে বিদ্বেষমূলক কনটেন্ট মোকাবিলায় বেশ কয়েক বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে কাজ করার বিষয় তুলে ধরে মেটার গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স বিষয়ক প্রেসিডেন্ট নিক ক্লেগ জানিয়েছেন, তিন বছরেরও কম সময় আগে প্রতি ১০ হাজার কনটেন্টের মধ্যে ১০-১১টি বিদ্বেষমূলক কনটেন্ট থাকত। এখন সেটি এক থেকে দুটি। প্রতিদিন ফেসবুকের ১০ লক্ষাধিক ভুয়া অ্যাকাউন্ট ব্লক করা হয় যেন মিথ্যা তথ্য না ছড়ায়।
এমন পিরিস্থিতিতে অধিকসংখ্যক প্রতিষ্ঠান ও সংস্থা বিশেষ করে ক্ষুদ্র প্রতিষ্ঠান যাদের এ বিষয়ে বেশি সংখ্যক সম্পদ বিনিয়োগের সামর্থ্য নেই, তারা ‘এইচএমএ টুল ব্যবহার করবেন বলে আশা করছেন নিক।