দেশের এক হাজার ১৭১ জন ব্যবহারকারীর তথ্য দিতে ফেসবুককে অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত কয়েক দফায় ফেসবুকের মূল প্রতিষ্ঠান মেটার কাছে এই তথ্য চাওয়া হয়েছে।
ফেসবুকের প্যারেন্ট কোম্পানি মেটার সবশেষ ট্রান্সপারেন্সি প্রতিবেদন সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশের সহস্রাধিক ফেসবুক ব্যবহারকারীর তথ্য জানতে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে মোট ৬৫৯টি অনুরোধ করা হয়েছে। এরমধ্যে ৪৯টি আবেদনই ছিল জরুরি (ইমারর্জেন্সি ডিসক্লোজার রিকোয়েস্ট)। যার প্রেক্ষিতে ইতোমধ্যেই ৬৬ দশমিক ০১ শতাংশ ব্যবহারকারীর তথ্য বাংলাদেশ সরকারের কাছে সরবরাহ করেছে ফেসবুক।
মেটার ট্রান্সপারেন্সি প্রতিবেদন বলছে, গত কয়েক বছরের মধ্যে ছয় মাসের হিসাবেও এবারই সবচেয়ে বেশি তথ্য চেয়ে ফেসবুকের কাছে অনুরোধ করেছে বাংলাদেশ সরকার। এরমধ্যে ব্যবহারকারীদের তথ্য দিতে ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ২৭১টি অনুরোধ করা হয়েছিল। এছাড়া পরের ৬ মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) নতুন করে আরও ৫২৫টি অনুরোধ করা হয়েছিল।
- ব্যবহারকারীদের তথ্য চেয়ে মেটার কাছে বিভিন্ন দেশের সরকারের করা আবেদনের সংখ্যা বাড়ছে।
- বছরের প্রথম ৬ মাসে আবেদন বৃদ্ধির হার ১০.৫%
- যুক্তরাষ্ট্রে ছয় মাসের তুলনায় ১৫.৬% বেশি
- এ সময় কনটেন্ট সীমিত করা হয় ৮৯ হাজার ৩৬৮টি
- সীমাবদ্ধ করা কনটেন্টের হার বেড়েছে ৭৫%
পরবর্তীকালে বাংলাদেশ সরকারের অনুরোধে সাড়া দিয়ে গত বছর যথাক্রমে ৫০ ও ৬৬ দশমিক ৮৬ শতাংশ ব্যবহারকারীর তথ্য সরবরাহ করেছিল ফেসবুক। তবে এই হিসাবে চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে সরকারের অনুরোধে ফেসবুক কিছুটা কম সাড়া দিয়েছে।
তবে মেটা আবেদনের শতভাগ সাড়া দেবে বলে আশা করছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
তিন বলেন, ‘মেটা এখন আমাদের ৬৬ শতাংশ আবেদনে সাড়া দিচ্ছে। কিন্তু আমাদের আশা, তারা আমাদের শতভাগ আবেদনে সাড়া দেবে। ২০১৮ সালে যখন আমি দায়িত্ব নেই, তখন এটি শূন্যের কোঠায় ছিল। সেখান থেকে এটি ৬৬ শতাংশে আনতে বুকের মাটি ছিঁড়ে গেছে। তবে আমাদের এই চেষ্টা অব্যাহত থাকবে। রাষ্ট্র ও জনগণের জন্য ক্ষতিকর কোনো কিছু আমরা হতে দিতে পারি না।’
মেটার ট্রান্সপারেন্সি প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়েছে, সম্প্রতি বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ফেসবুক ব্যবহারকারীদের তথ্য চাওয়ার হার অনেকাংশেই বেড়েছে। এরমধ্যে চলতি বছরের প্রথম ৬ মাসেই (জানুয়ারি-জুন) বিভিন্ন দেশ থেকে মোট দুই লাখ ৩৭ হাজার ৪১৪টি অনুরোধ পেয়েছে ফেসবুক। যা ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত সময়ের তুলনায় ১০ শতাংশেরও বেশি। এরমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে ব্যবহারকারীদের তথ্য চেয়ে সবচেয়ে বেশি অনুরোধ জানানো হয়েছে। এরপরই তালিকায় নাম আছে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত ছাড়াও জার্মানি, ব্রাজিল, ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যের মতো দেশগুলোর।
প্রসঙ্গত, ফেসবুকের মূল প্রতিষ্ঠান মেটা বছরে দুইবার (প্রতি ছয় মাস পর) ট্রান্সপারেন্সি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। যেখানে প্রতিষ্ঠানটির কাছ থেকে কোন দেশের সরকার কী ধরনের সেবা চায়, তা তুলে ধরা হয়। তবে কোন দেশ কোন অ্যাকাউন্টের তথ্য চেয়েছে, ট্রান্সপারেন্সি প্রতিবেদনে সে বিষয়গুলো প্রকাশ করা হয় না।