ছাঁটাই- ইস্তফার মধ্যেই নতুন ‘অশান্তি’ যোগ হয়েছে টুইটারে। আপাতত ৪ দিনের জন্য বন্ধ টুইটারের অফিস। কিন্তু কেন বন্ধ? স্পষ্ট কোনও কারণ জানানো হয়নি কর্মীদের! অফিস আবার খুলবে ২১ নভেম্বর,সোমবার। তার আগে পর্যন্ত সবার অফিস ব্যাজ অকার্যকর থাকবে। অর্থাৎ, কর্মীরা অফিসে বা টুইটারের ইন্টারনাল নেটওয়ার্ক সিস্টেমে প্রবেশ করতে পারবেন না।
কর্মীদের পাঠানো বার্তায় বলা হয়েছে- ‘দয়া করে কোম্পানির নীতিমালা মেনে অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে সামাজিক মাধ্যম, গণমাধ্যম বা অন্য কোনোখানে আলোচনা করবেন না।’ বার্তাটি আরও এক একবার টুইটারের নতুন মালিক ইলন মাস্ক ও টুইটারের কর্মীদের অশান্তির আগুনে ঘি ঢাললো।
ঠিক টুইটারের এমন চরম মুহূর্তে ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষায় দারুণ মনযোগী হয়েছে শীর্ষে থাকা অনলাইন যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক। প্রোফাইল থেকে ব্যবহারকারীর যোগাযোগের ঠিকানাসহ ব্যক্তিগত চারটি তথ্য দেখানোর অপশন বন্ধ করে দিচ্ছে।
এরই মধ্যে ব্যবহারকারীদের এই পরিবর্তন সম্পর্কে জানানো শুরু করেছে ফেসবুক। ব্যবহারকারীদের নোটিফিকেশন পাঠিয়ে বলা হচ্ছে, ১ ডিসেম্বর থেকে ‘অ্যাড্রেসেস’, ‘ইন্টারেস্টেড ইন’, ‘রিলিজিয়াস ভিউজ’ এবং ‘পলিটিক্যাল ভিউজ’ ঘরের তথ্যগুলো আর প্রোফাইলে দেখা যাবে না।
ফেসবুকের মূল কোম্পানি মেটার মুখপাত্র এমিল ভ্যাসকেজ প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট গিজমোডোকে বলেছেন, যেসব ব্যবহারকারী আগে এসব তথ্য শেয়ার করেছেন, আমরা তাদের নোটিফিকেশন পাঠিয়ে জানাচ্ছি যে এই শ্রেণিগুলো মুছে দেয়া হবে।
এদিকে টুইটারের নতুন পতি ইলন মাস্কের নানা শর্ত না মেনে অনেক কর্মী এরইমধ্যে টুইটার ছাড়তে শুরু করেছেন। কোম্পানির এক সাবেক কর্মী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিবিসিকে বলেছেন, ‘সর্বশেষ এই মেইলের পর টুইটারে দুই হাজার বেশি কর্মী থাকবে বলে মনে হয় না।’
কঠোর পরিশ্রম করার মানসিকতা থাকা সত্ত্বেও কর্মীরা কেন টুইটার ছাড়ছেন, বিবিসির এমন প্রশ্নের জবাবে সেই কর্মী বলেছেন, ‘যে লোকটা সারাক্ষণ আমাদের হুমকি দিয়ে চলেছে যে টুইটারে অসাধারণ মানুষ ছাড়া কেউ কাজ করতে পারবে না, তার সঙ্গে আমি কাজ করতে চাই না, যদিও আমি আগে থেকেই সপ্তাহে ৬০-৭০ ঘণ্টা কাজ করছি।’ ব্লুমবার্গ জানিয়েছে, পদত্যাগী কর্মীদের দলে বিপুল সংখ্যক প্রকৌশলীও আছেন। সে কারণেই চার দিনের জন্য টুইটারের সব অফিস বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
বিশ্বের অন্যতম ধনী ব্যক্তি ইলনের হাতে টুইটারের মালিকানা আসার পরই একের পর এক নতুন নিয়মের জন্ম হচ্ছে। ঘন ঘন পরিবর্তনের ধাক্কা সামলাতে রীতিমতো খাবি খাচ্ছেন টুইটারের কর্মীরা। শঙ্কা তৈরি হয়েছে ফেসবুক শিবিরে। তবে তার প্রকাশটা অনেকটাই নমনীয়। কেননা, সম্প্রতি মেটার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মার্ক জাকারবার্গ এক ব্লগ পোস্টে বলেছেন, আমাদের মেধাবী ১১ হাজারের বেশি কর্মীকে ছেড়ে দিতে হচ্ছে। ফেসবুকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যেসব কর্মীকে ছাঁটাই করা হবে তারা ১৬ সপ্তাহের মূল বেতনের সঙ্গে প্রতিবছরের হিসেবে দুই সপ্তাহের বাড়তি বেতন পাবেন।
এমন পরিস্থিতে ব্লুমবার্গে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এসেছে আশার বার্তা। ফেসবুক এবং টুইটার থেকে ছাঁটাই হওয়া কর্মীদের জন্য সুখবর দিয়েছে টাটাদের মালিকানাধীন সংস্থা জাগুয়ার ল্যান্ড রোভার৷ সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মেটা অথবা ট্যুইটারের মতো সংস্থা থেকে ছাঁটাই হওয়া কর্মীদের নিয়োগ করবে তারা৷ এই কর্মীদের অটোনমাস ড্রাইভিং, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, ক্লাউড সফটওয়্যারের মতো কাজে নিয়োগ দেওয়া হবে৷