সন্তানের কাছ থেকেই শিখেছেন কম্পিউটার পরিচালনা। শিখেছে সংগঠন। এরপর তার পরামর্শেই আজ বাস্তবায়িত হয়েছে ডিজিটাল বাংলাদেশ। ডিজিটাল কানেক্টিভিটির কল্যাণে অতিমারি করোনা যে ভাবে ‘ঘরে থাকো, কিছুই কোরো না’ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিলো তাও মোকাবেলা করা সম্ভব হয়েছে। গ্রামে বসেও তরুণ-তরুণীরা শিক্ষাগ্রহণ করে ঘরে বসেই বিদেশ থেকে অর্থ উপার্জন করতে পারছে। কিন্তু এরমধ্যে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং ইউরোপিয় অর্থনৈতিক অবরোধের কারণে কিছুটা উন্নয়ন যাত্রা কিছুটা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। তবে সব বাধা অতিক্রম করেই ২০৪১ সালের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশকে আরো উন্নত করে স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
২০৪১ সালের সেই বাংলাদেশের রূপরেখাও এরই মেধ্যে তৈরি হয়েছে জানিয়ে সরকার প্রধান বলেছেন, আমরা এতোদিন একটি মাত্র পণ্য রপ্তানির ওপর নির্ভরশীল ছিলাম। এটাকে বহুমুখী করে আইসিটি অর্থাৎ ডিজিটাল ডিভাইস বাংলাদেশেই তৈরি করে বিদেশে রফতানি করা হবে। অনেকগুলো কোম্পানি ইতিমেধ্যই বাংলাদেশে আসতে শুরু করেছে। বিনিয়োগ করেছে। তাদের ফলে দেশের উন্নতি হচ্ছে। দেশে এখন ১৫টি কোম্পানি মোবাইল উৎপাদন করছে। এই উৎপাদিত ফোন দেশের প্রয়োজন মিটিয়ে দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়া, দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের বড় মার্কেটে রফতানি হচ্ছে। পোশাক শিল্প’র মতো দেশে তৈরি ডিভাইস নিয়ে বাংলাদেশ এখন হাইটেক শিল্পে রফতানিকারক দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করছে।
তিনি আরো বলেন, আজ দেশে আইসিটি শিল্পের ব্যাপক প্রসার ঘটছে। যার ফলে আমরা এখন ল্যাপটপ, মোবাইল, ট্যাব সব কিছু কিন্তু নিজেরাই উৎপাদন করতে পারছি। এগুলো প্রস্তুত করতে যেসব ক্ষুদ্র যন্ত্রাংশ দরকার হয় এবারের বাজেটেও তার ওপর আমদানি শুল্ক কমিয়ে দিয়েছি। চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে আইওটি, রোবোটিক ও সাইবার সিকিউরিটিসহ উচ্চপ্রযুক্তির ৩৩টি বিশেষায়িত ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে। স্কুলে কম্পিউটার ল্যাব,গবেষণার জন্য বিশ্বমানের সুযোগ ও পরিবেশ নিশ্চিত করতে বিভিন্ন ইনস্টিটিউট তৈরি করে দিচ্ছি।
বুধবার বুধবার (৬ জুলাই) সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (চুয়েট) স্থাপিত এ ইনকিউবেটরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলে তিনি।
গণভবন প্রান্ত থেকে এই অনুষ্ঠানে আরো সংযুক্ত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া। একই প্রান্ত থেকে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব এন এম জিয়াউল আলমের সঞ্চালনায় আইসিটি টাওয়ারের সম্মেলন কেন্দ্র প্রান্তে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রী শাহাব উদ্দিন ও ভূমিমন্ত্রী সাঈফুজ্জামান চৌধুরী সংযুক্ত ছিলেন।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব মোঃ খলিলুর রহমান, বিটিআরসি চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার, সাবেক চেয়ারম্যান জহুরুল হক. হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকর্ণ কুমার ঘোষ, সাবেক এমডি হোসনে আরা বেগম প্রমুখ।
চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রান্ত থেকে চট্টগ্রাম-৬ সংসদীয় আসনের সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী, চুয়েটের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতারসহ উর্ধ্বতন প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও উপকারভোগীরা।