পদ্মা সেতু প্রকৌশল পাঠে অন্তর্ভূক্ত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২৫ জুন) মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে স্বপ্নের পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এমন প্রত্যয়ের কথা জানান তিনি। বক্তব্যে ডিজিটাল বাংলাদেশে গ্রাম পর্যায়ে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পৌঁছে দেয়ার কথা তুলে ধরেন বঙ্গবন্ধু কন্যা।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে বলেন, ‘সুকান্ত ভট্টাচার্যের কথায় বলতে হয় সাবাস বাংলাদেশ, এ পৃথিবী অবাক তাকিয়ে রয়। জ্বলে পুড়ে মরে ছারখার, তবু মাথা নোয়াবার নয়। জাতির পিতা শেখ মুজিব মাথা নোয়াননি। মাথা নোয়াতে শেখাননি। তারই নেতৃত্বে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। আমরা তারই অনুসারী।’
বক্তব্যের শুরুতেই তিনি এই সেতু বাস্তবায়নে প্রযুক্তিবিদ প্রকৌশলী জামিলুর রেজা চৌধুরীসহ সংশ্লিষ্ট যারা পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন তাঁদের আত্মার শান্তি কামনা করেন।
প্রযুক্তি এবং কারিগরি নানা বিষয়ে পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন কঠিন চ্যালেঞ্জ ছিলো জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করেই আমাদের প্রকৌশলী, কর্মীর এবং বিদেশী পরামর্শক, আমরা সকলে মিলে এর নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করেছি। সেতুর গুণগত মানে কোনো আপোস করা হয়নি। এই সেতু নির্মিত হয়েছে বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ও উপকরণ দিয়ে। এর ভিত্তি এখন পর্যন্ত বিশ্বের গভীরতম। ভূমিকম্প প্রতিরোধে ব্যবহৃত হয়েছে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি। এ রকম আরো বিশেষ বৈশিষ্টের করাণে এই সেতুর নির্মাণ পদ্ধতি বিশ্বজুড়ে প্রকৌশলী বিদ্যার পাঠে অন্তর্ভূক্ত হবে বলে আমি বিশ্বাস করি। কারণ, এটা একটা আশ্বর্য সৃষ্টি। এটি থেকে মানুষের অনেক কিছু শেখার সুযোগ রয়েছে। প্রজন্মের পর প্রজন্ম এ থেকে শিখতে পারবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
‘এ সেতু কেবল সেতু নয়। এর ৪২টি স্তম্ভ স্পর্ধিত বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, কেউ দাবায়ে রাখতে পারবা না। কেউ দাবায়ে রাখতে পারেনি। আমরা বিজয়ী হয়েছি’ – যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।
মঞ্চের সামনে উপস্থিত রয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আমির হোসেন আমু, মাহবুব-উল হক হানিফ, বিশ্ব ব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি টেম্বন, ভারতের হাই কমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) হাসানুল হক ইনু, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন প্রমুখ।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে এতে স্বাগত বক্তব্য দেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব আনোয়ারুল ইসলাম। অংশ নিয়েছেন জাতীয় সংসদের স্পিকার, মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, দেশের রাজনৈতিক নেতা, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার প্রতিনিধি, সাংবাদিক, শিক্ষকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধিরা।