সাধারণ ও সফল নারী উদ্যোক্তা এবং উপদেষ্টাদের নিয়ে রাজধানীর গুলশান ক্লাবে সভা করেছে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্যানেল অগ্রগামী। ই-ক্যাব নির্বাচনকে সামনে রেখে নারী উদ্যোক্তাদের রীতিমতো মেলা বসেছিলো এই আয়োজনে। কে ছিলেন না এই বৈঠকে। উদ্যোক্তা, বিনিয়োগকারী, শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, মনোবিজ্ঞানী, সমাজবিদ নারীরা উপস্থিত ছিলেন আড়াই ঘণ্টার এই সেশনে। অগ্রগামী’র আমন্ত্রণে নারী অংশীজনদের জয়জয়কার ছিলো পুরো আয়োজনে।
ব্যবসায়ের ক্ষেত্রকে আরো সম্প্রসারণের মাধ্যমে তাদের এগিয়ে নিতে রবিবার রাতে অনুষ্ঠিত হয় এই পর্যালোচনা ও লক্ষ্য নির্ধারনী সভা।
প্যানেল প্রধান শমী কায়সারের সঙ্গে যৌথভাবে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন এই প্যানেলের অগ্রগামী প্রার্থী আম্বারীন রেজা। শুরুতেই বাচ্চাকে স্কুলে দিয়েই ক্যারিয়ার জলাঞ্জলি না দিয়ে ই-কমার্স ব্যবসার মাধ্যমে দেশীয় পণ্যকে জনপ্রিয় করে নারীদের ক্ষমতায়নের পেছনের গল্প তুলে ধরেন প্যানেলের অপর সদস্য নাসিমা আক্তার নিশা।
এরপর ই-ক্যাবের প্রথম দিকের উদ্যোক্তা তানিয়া ওয়াহাব, স্কুটি উদ্যোক্তা জেরিন মারজান খান, আইন উপদেষ্টা টিউলিপ বক্তব্য রাখেন। এসময় তারা অনলাইন কেনাকাটায় মেয়েদের সাইবার হ্যারাজমেন্ট কমাতে ভোক্তাদের মধ্যে ডিজিটাল স্বাক্ষরতা এবং অনলাইন ব্যবসায়ে স্বয়ংক্রিয়ভাবে অভিযোগ নিষ্পত্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে ই-ক্যাবের চলমান কার্যনির্বাহী কমিটির প্রশংসা করেন।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে ডেটার উচ্চ মূল্য নিয়ে কথা বলেন, সহজ ডটকম প্রতিষ্ঠাতা মালিহা কাদের। ভ্যাট-ট্যাক্স না দিয়ে বরং এই খাতের উদ্যোক্তাদের প্রেষণা ও প্রণোদনা দিয়ে অনলাইন কেনাকাটাকে জনপ্রিয় করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
এছাড়াও ই-কমার্স খাত নিয়ে একটি পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন তুলে ধরেন উইমেন ইন টেকনোলজি’র সভাপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. লাফিফা জামাল। এসময় তিনি অগ্রগামী প্যানেলের প্রত্যেক সদস্যের জন্য শুভ কামনা করে ডিভাইসের মালিক হিসেবে লিঙ্গ ভিত্তিক ডিজিটাল বৈষম্য, ডিজিটাল পেমেন্ট এবং প্রান্তিক পর্যায়ের নারী উদ্যোক্তাদের মূলধারায় নিয়ে আসার ওপর পরামর্শ দেন।
বিক্রয় ডট কম সিইও ঈশিতা শারমীন বলেন, কোভিড কালে আমরা ই-ক্যাবের এই প্যানেলের শমী আপা-তমাল ভাইদের কাছে অনেক সহায়তা পেয়েছি। আগামীতেও পেতে চাই। আমরা আগামীতে নারীদের নিয়ে আরও বড় বিনিয়োগ নিয়ে আসতে চাই।
অনুষ্ঠানে নিজেদের উদ্যোগের পেছনের গল্প তুলে ধরেন মোছাঃ জেসমিন।
কথার ফাঁফে ফাঁকে স্বেচ্ছাসেবী সামিয়া আম্বারিন, নওরিনের পরিচালনায় স্টেগেটি, মার্সফেলো ও টেপ ব্যবহার করে সর্বোচ্চ টাওয়ার বানানোর প্রতিযোগিতায় অংশ নেনে উপস্থিত দম্পতি উদ্যোক্তারা।
পর্যায়ক্রমে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন মা-মেয়ে উদ্যোক্তা নাবিলা কুলসুম ও লুবাবা নাবিল। এছাড়াও বিশিষ্টজনদের মধ্যে বিনিয়োগ বিশেষজ্ঞ মনিজা, জেসিআই সাবেক সভাপতি সারা, ড. নুজহাত চৌধুরি, সাবহা ইসলাম, রেজওয়ানা সহ আরো অনেকে।
অনুষ্ঠানে শমী কায়সার বলেন, কোভিডে আমরা নানা চ্যালেঞ্জের মধ্যে দিয়ে গিয়েছি। প্রধানমন্ত্রীর ঐকান্তিক সহযোগিতায় আইসিটি খাতের সব সংগঠনের অংশগ্রহণের মাধ্যমে যখন সাবাই কাজ হারাচ্ছিলো তখন ২ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পেরেছে ই-ক্যাব। অনভিপ্রেত স্ক্যাম রোধ করতে আমরা এক বছর আগেই লন্ডনের আদলে একটি ভোক্তা অধিকারের সঙ্গে একটি কেন্দ্রীয় অভিযোগ নিষ্পত্তি সেল গঠনের উদ্যোগ নেই। আশা করছি, আগামী ২ মাসের মধ্যে এটা পূর্ণাঙ্গভাবে সক্রিয় হবে।