বাংলাদেশে ফেসিয়াল রিকগনিশনের জন্য অত্যাধুনিক সফটওয়্যার নিয়ে এসেছে এনটেক ল্যাব। ডাটাবেজে সংরক্ষিত ব্যক্তির ইমেজের সঙ্গে মিলিয়ে দেখার সুবিধা দেয় এই প্রযুক্তি। যদি মিল পাওয়া যায়, তবে তাৎক্ষণিকভাবে তা আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে জানিয়ে দেয়। নির্দিষ্ট ব্যক্তি ক্যামেরায় ধরা পড়ার পর থেকে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে সিগনাল পৌঁছা পর্যন্ত পুরো প্রক্রিয়াটিতে সময় লাগে মাত্র কয়েক সেকেন্ড। এর ফলে অতি দ্রুততার সঙ্গে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব হয়। বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) রাজধানীর একটি হোটেলে এ প্রযুক্তির বিষয়ে এসব তথ্য তুলে ধরেন উদ্যোক্তারা।
দেশের সিকিউরিটি সার্ভিস ও বাণিজ্যিক গ্রাহকদের মধ্যে এই প্রযুক্তির বিপণনের জন্য রুশ প্রতিষ্ঠান এনটেক ল্যাব বাংলাদেশি সফটওয়্যার কোম্পানি রিবাট মেটাটেকের সঙ্গে চুক্তি করেছে।
আয়োজকরা জানান, এনটেক ল্যাব হলো প্রথম কোনও রুশ সফটওয়্যার ডেভেলপার কোম্পানি, যারা বাংলাদেশের বাজারে পদার্পণ করলো। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন— বাংলাদেশ রুশ দূতাবাসের প্রেস অ্যাটাচে আমাতুলা খানোভা,রিবাট মেটাটেকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম সারোয়ার, দক্ষিণ এশিয়ায় এনটেক ল্যাবের ব্যবসায় উন্নয়ন এবং বিক্রয় বিভাগের প্রধান পাভেল বরিসভ।
রিবাট মেটাটেকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম সারোয়ার বলেন, ‘ফেসিয়াল রিকগনিশন ব্যবহারের মাধ্যমে সরকার এবং নিরাপত্তা সংস্থাগুলোকে অধিক আস্থা ও দ্রুততার সঙ্গে কাজ করার সুবিধা দেবে। বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোও এই প্রযুক্তি থেকে লাভবান হতে পারে। রিটেইল আউটলেট, প্রদর্শনী হল, ট্রেড সেন্টারগুলো তাদের ভিজিটরের সংখ্যা, জেন্ডার, বয়স, ভিজিটের গড় সময়কাল, নতুন অথবা নিয়মিত ভিজিটর ইত্যাদি বিষয়ে বিশ্লেষণমূলক ডাটা পাওয়া সম্ভব হবে। প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ এবং হাজিরা ব্যবস্থাপনা পদ্ধতিতেও প্রযুক্তিটি ব্যবহারযোগ্য।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার এবং দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়নে এনটেক ল্যাবের সঙ্গে অংশীদারিত্ব বিশেষ ভূমিকা রাখবে। রুশ প্রতিষ্ঠানটির ফেসিয়াল রিকগনিশন প্রযুক্তি বিশ্বের অন্যতম দ্রুত এবং নির্ভুল প্রযুক্তিগুলোর মধ্যে একটি। অতএব সরকারি এবং বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে যথেষ্ট সাড়া পাওয়ার ব্যাপারে আমরা নিশ্চিত।’
দক্ষিণ এশিয়ায় এনটেক ল্যাবের ব্যবসায় উন্নয়ন এবং বিক্রয় বিভাগের প্রধান পাভেল বরিসভ বলেন, ‘বিভিন্ন ক্ষেত্রেই বাংলাদেশ রাশিয়ার একটি নির্ভরযোগ্য অংশীদার। দুই দেশের মধ্যে উদ্ভাবন এবং প্রযুক্তি সহযোগিতার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে পেরে আমরা আনন্দিত। আমরা মনে করি যে, আজ দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে নতুন একটি অধ্যায়ের সূচনা ঘটলো। আশা করি যে, অন্যান্য রুশ স্টার্টআপগুলো আমাদের অনুসরণ করবে।’
আয়োজকরা জানান, গতবছরের আগস্ট মাসে ভারতের অন্যতম ব্যস্ত রেলওয়ে নেটওয়ার্ক ওয়েস্টার্ন রেলওয়ে এনটেক ল্যাবের রিয়েলটাইম ফেস রিকগনিশন প্রযুক্তিসহ ৪৭০টি ভিডিও ক্যামেরা স্থাপন করে। কোনও নির্দিষ্ট সময়কালে রেল নেটওয়ার্কে জনসংখ্যা গননার মাধ্যমে ভবিষ্যৎ কৌশল নির্ধারণ ও ব্যবস্থাপনা অনেকটাই সহজতর হয়ে ওঠে। দুষ্কৃতিকারী এবং হারানো ব্যক্তিদের চিহ্নিতকরণেও প্রযুক্তিটি যথেষ্ট কার্যকরী।