‘আমার পণ্য আমার দেশ, ডিজিটাল বাংলাদেশ’ স্লোগানে এবার অনলাইনে শুরু হলো হেরিটেজ হ্যান্ডলুম ফেস্টিভ্যাল ২০২০। বৃহস্পতিবার অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ‘জুম’এ অনুষ্ঠিত হয় উৎসবের সমাপনী অনুষ্ঠান। একইসঙ্গে শুরু হয় ‘দেশী ভালোবাসী’ উৎসব।
উৎসব উপলক্ষে শুক্রবার বিকেলে অনুষ্ঠিত হবে‘Technology for preserving heritage: skills enhancement and E-Commerce for cottage industry’ বিষয়ে সেমিনার।
আগামী ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত প্রতিদিন ২৪ ঘণ্টা দর্শনার্থীদের উন্মুক্ত থাকছে ফেস্টিভ্যালের অনলাইন পেজ। (https://www.facebook.com/heritagehandloombangladesh)
সেখানে বয়নশিল্প প্রদর্শন, লাইভ ফ্যাশন শো’র পাশাপাশি ৭০টিরও বেশি অনলাইন স্টলে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের জন্য প্রদর্শন করা হচ্ছে শাড়ী-লুঙ্গি-গামছা, খাদি, নকশিকাঁথা, বেনারসি শাড়ী, টাঙ্গাইল শাড়ী, জামদানি শাড়ী, মনিপুরী কাপড়, রাঙ্গামাটির চাকমাসহ অন্যান্য ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর কাপড় ও হস্তশিল্পসহ ১৪ ক্যাটগরির পণ্য। চলছে ফেস্টিভ্যালে লোকজ শিল্পীদের সঙ্গীত পরিবেশনা, ফ্যাশন শো, দেশী পোশাক বিষয়ে কুইজ ও ফটো কনটেস্ট, সেমিনার, ক্রেতা-বিক্রেতা ম্যাচমেকিং ইভেন্ট।
দুপুরে ‘হেরিটেজ হ্যান্ডলুম’ ফেস্টিভ্যালের সমাপনী এবং ‘দেশী ভালোবাসী’ উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন। বিশেষ অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, বস্ত্র ও পাট সচিব লোকমান হোসেন মিয়া এবং এসএমই ফাউন্ডেশনের পরিচালক এনায়েত হোসেন চৌধুরী।
বক্তব্য রাখেন এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক ড. মোঃ মাসুদুর রহমান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ সফিকুল ইসলাম, অ্যাসোসিয়েশন অব ফ্যাশন ডিজাইনার্স অব বাংলাদেশের (এএফডিবি) সভাপতি মানতাশা আহমেদ এবং প্রযুক্তি উদ্যোক্তা সোনিয়া বশির কবীরসহ আরো অনেকে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, বাংলাদেশে দেশী পোশাকের বাজার সৃষ্টি হয়েছে। উদ্যোক্তাদের তা কাজে লাগাতে হবে। মানসম্মত পণ্য তৈরি করতে হবে উদ্যোক্তাদের এবং সেসব পণ্য পৌঁছে দিতে হবে ক্রেতাদের কাছে। এসএমই ফাউন্ডেশন জেলায় জেলায় আঞ্চলিক এসএমই পণ্য মেলা করছে। একই ভাবে উপজেলা, ইউনিয়ন গ্রামে গ্রামে মেলার আয়োজন করতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেন, ঐতিহ্যবাহী এসব পণ্য রক্ষায় দেশের বাজারই যথেষ্ট। মেলার বিস্তুৃতি ঘটানো হলেই উদ্যোক্তারা তাঁদের পণ্যের বাজার খুঁজে পাবেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বস্ত্র ও পাট সচিব লোকমান হোসেন মিয়া বলেন, তাঁতপণ্য বাংলাদেশের ইতিহাস ঐতিহ্যের সাথে জড়িত। তাঁতশিল্পীদের সংগঠিত করার কাজ করছে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়। তাঁতীদের সুবিধাথের্, তাদের পণ্যের উন্নয়নে নরসিংদীতে সিপিসি সেন্টার এই মাসেই চালু হবে। মাত্র ৪ ভাগ সুদে আর্থিক সহায়তা দেয়া হচ্ছে তাঁতীদের।
সভাপতির বক্তব্যে এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক ড. মোঃ মাসুদুর রহমান বলেন, গত ১১ বছরে সরকারের অর্থনৈতিক উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। অনলাইনে এই আয়োজন প্রমাণ করে, সমগ্র দেশকে এক সুতোয় গাঁথায় সম্ভব হয়েছে সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ কার্যক্রমের মাধ্যমে। হেরিটেজ হ্যান্ডলুম ফেস্টিভ্যাল ২০২০ আয়োজনের মাধ্যমে দেশীয় পণ্যের উদ্যোক্তাদের জন্য নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করা সম্ভব। এক মাস দেশী পণ্যের ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে সংযুক্তি তৈরি করা হবে।
এর আগে ২৮ অক্টোবর উৎসবের উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এমপি এবং শিল্প সচিব কে এম আলী আজম। সভাপতিত্ব করেন এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক ড. মোঃ মাসুদুর রহমান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ সফিকুল ইসলাম এবং ফেস্টিভ্যালের নানা দিক তুলে ধরেন অ্যাসোসিয়েশন অব ফ্যাশন ডিজাইনার্স বাংলাদেশ (এএফডিবি) সভাপতি মানতাশা আহমেদ।