রাজধানীর বনানী থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত সড়ক বিভাজকে ৫৫০০টি গাছ রোপন করেছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি)। আর এই গাছগুলো পরিচর্যা ও সঠিক যত্নে বেড়ে ওঠার জন্য প্রতিটি গাছকে জেনারেল প্যাকেট রেডিও সার্ভিস বা জিপিআরএস প্রযুক্তির অধীনে আনা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম।
শনিবার (১৮ নভেম্বর) রাজধানীর ফার্মগেটে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি) অডিটোরিয়ামে নগর সবুজায়ন প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি বলেছেন, বলেছেন, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন সড়কের মিডিয়ানে, ফুটপাতে গাছ লাগানো হচ্ছে। বিভিন্ন বস্তিতে প্রায় ৫৫০০টি গাছ লাগানো হয়েছে। প্রতিটি গাছকে জিপিআরএস অ্যাপের মাধ্যমে আইডি নম্বর দিয়ে রোপণ করে দিয়েছি। গাছকে নাম্বারিং করা ও জিপিআরএস ম্যাপিং করা হচ্ছে। প্রকৌশল বিভাগ এটি তত্ত্বাবধান করছে।
ডিএনসিসি মেয়র বলেন, বর্জ্য বিভাগকে নির্দেশ দিয়েছি খালের পাড়ে গাছ লাগাতে। আমরা এখন যে গাছগুলো লাগাচ্ছি একটা সময় পরে সবুজায়ন হবে, গাছে ফুল হবে, ফল হবে, গাছ ছায়া দেবে, অক্সিজেন দেবে। গাছ লাগানো অনেক সহজ কিন্তু গাছের পরিচর্যা করে বড় করে তোলা অনেক কঠিন কাজ।
আতিকুল ইসলাম বলেন, এখন পর্যন্ত আমরা যেসব গাছ লাগিয়েছি, আমাদের কাছে প্রতিটি গাছের ম্যাপিং আছে– গাছ কত ইঞ্চি লাগানো হয়েছে, গাছ কীভাবে বড় হচ্ছে ও গাছের পরিচর্যা করা হচ্ছে। বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ আছে। গাছগুলোর পরিচর্যা করা হচ্ছে। আজ গাছ লাগালে অবশ্যই এর দুই বছর পর ফল পাওয়া যাবে। আমি নতুন কিছু গাছ লাগাচ্ছি। রসকাউ গাছ রোপণ করছি। রসকাউ গাছের ফল পাখির খুবই প্রিয়। আমরা সবুজ ও পাখির কিচিরমিচির দেখতে চাই।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ইমপ্রেস টেলিফিল্ম লিমিটেড ও চ্যানেল আই’র প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ও বার্তাপ্রধান শাইখ সিরাজ, শক্তি ফাউন্ডেশনের উপ-নির্বাহী পরিচালক ইমরান আহমেদ, ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ আমিরুল ইসলাম, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমডোর এস এম শরিফুল ইসলাম প্রমুখ।
এদের মধ্যে ইমপ্রেস টেলিফিল্ম লিমিটেড ও চ্যানেল আই’র প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ও বার্তাপ্রধান শাইখ সিরাজ বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, ‘কোন জায়গায় কোন প্রজাতির গাছ লাগানো হবে এটি জানা খুব জরুরী। শহরে রাস্তায় একসময় শুধু ছায়া দিবে এমন জাতের গাছ লাগানো হতো, পরবর্তীতে ফুল ও ফলের গাছও লাগানোর সিদ্ধান্ত হয়৷ শহরের সবুজায়নে সিটি কর্পোরেশনের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব রয়েছে বিশেষ করে কাউন্সিলরদের। তাদের এই গাছগুলো দেখে রাখতে হবে। তবে জনগণের যার যার জায়গা থেকে দায়িত্ব পালন করতে হবে। প্রতিটি বাড়ি, অফিস ভবন শীতল রাখতে ছাদে গাছ লাগাতে হবে। সড়কের মিডিয়ানে গাছ, চিত্রকর্ম দেখলে অনেক ভালো লাগে৷ এটি দারুণ উদ্যোগ।’
শক্তি ফাউন্ডেশনের উপ নির্বাহী পরিচালক ইমরান আহমেদ বলেন, ‘সময়ের সাথে বাংলাদেশ একদিকে যেমন উন্নত হয়েছে, তেমনি বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ এর সম্মুখীন হচ্ছে। বায়ুদূষনে ঢাকা শহরের অবস্থান বিশ্বের প্রথম সারির দিকেই। আমাদের সকলের প্রিয় ঢাকা শহরকে দূষণমুক্ত ও সুন্দর করে তোলার দায়িত্ব আমাদের সকলের এবং তাই শক্তি ফাউন্ডেশন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন, মেটলাইফ সহ বিভিন্ন সংস্থার সাথে একযোগে কাজ করে যাচ্ছে।’
বক্তৃতা শেষে ডিএনসিসি মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম অন্যান্য অতিথিদের সঙ্গে নিয়ে ফিতা কেটে সবুজায়ন প্রকল্পটি উদ্বোধন করেন এবং মিডিয়ানের গাছ ও চিত্রকর্ম ঘুরে দেখেন।