প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘প্রযুক্তির উন্নতির ফলে আধুনিক যুগে পৃথিবীর বহু দেশে অনেক নামিদামি পত্রিকা বন্ধ হয়ে গেছে বা যাচ্ছে। ছাপা কাগজের পরিবর্তে সেখানে অনলাইন সংস্করণগুলো চলছে। কেননা প্রযুক্তির উন্নতির ফলে বিবর্তন আসতেই থাকবে। তবে এই বিবর্তনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে এটাই হল বড় কথা।’
শুক্রবার গণভবনে ব্রুনাই সরকারি সফর পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এসময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ. কে. আব্দুল মোমেন, প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সরকারপ্রধান বলেন, ‘এটা হচ্ছে একটা যুগের অথবা প্রযুক্তির প্রভাব। প্রযুক্তি ও আধুনিকতার প্রভাবে এভাবে বিবর্তন আসতেই থাকবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘প্রযুক্তি মানুষকে যেমন সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়, আরও আধুনিকতা এনে দেয়, আবার সমস্যাও সৃষ্টি করে। আমরা যদি এক ধরণের ধারাবাহিকতায় চলতে থাকি, তাহলে কিন্তু হবে না। সারা বিশ্বে কিন্তু এখন অনেক নামিদামি শুধু অনলাইনেই চলে; ছাপানোটা আর হয় না, একদম নাই। এ রকম বহু নামকরা পত্রিকা, তারা কিন্তু সব চলে গেছে অনলাইনে। কাগজ আর ব্যবহার হয় না।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের ডেইলি পত্রিকা প্রায় ৭০০ এর উপরে। এত পত্রিকা পৃথিবীর কোনো দেশে চলে না, কোনো দেশে নেই। সিঙ্গাপুরে মাত্র একটা পত্রিকা। সেটাও সরকার স্পন্সর্ড। আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলোতে দেখেন, আমাদের মতো এত পত্রিকা কিন্তু কোনো দেশে নেই।’
গণমাধ্যমের ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়নের দায়-দায়িত্ব মালিকপক্ষের জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ওয়েজবোর্ডে সরকারের পক্ষ থেকে যেটা করণীয় সেটা আমরা করে দিয়েছি। এটি নির্ভর করছে মালিকপক্ষ কতটুকু বাস্তবায়ন করবে। এখানে আমাদের দায় দায়িত্ব নেই। দায়-দায়িত্ব চলে গেছে মালিকপক্ষের উপর। সাংবাদিকরা সেখান থেকে যতটুকু আদায় করে নিতে পারেন।’
সংবাদ সম্মেলনে টেলিভিশন শিল্প নিয়ে প্রশ্ন করলে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আপনারা বলছেন, টেলিভিশন শিল্প রুগ্ন হয়ে যাচ্ছে কিন্তু এখনো অনেকে আরও নতুন চ্যানেল চাচ্ছে। কালকে তথ্যমন্ত্রীর সাথে কথা হলো, যত চাচ্ছে সব দিয়ে দেব। কিছু লোকের তো তাতে কাজ হবে, চাকরি তো পাবে। যেহেতু (বেসরকারি খাতে) খুলে দিয়েছি। খোলাই থাক তাহলে। যে যত চাক, সে তত পাক, আমার অসুবিধা নেই।’
তিনি বলেন, ‘ডিজিটাল করে দিয়েছি, স্যাটেলাইটও দিয়েছি, আমাদের স্যাটেলাইটের মাধ্যমেও আমাদের টিভি চালানো যেতে পারে। এমনকি স্যাটেলাইট সেবা তিন মাসের জন্য বিনা ভাড়ায় দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু চ্যানেলগুলো সেভাবে নিচ্ছে না। অথচ বিদেশি স্যাটেলাইটকে অনেক টাকা দিচ্ছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কিভাবে আমাদের স্যাটেলাইটের মাধ্যমে প্রত্যেকটা চ্যানেল অল্প খরচে সম্প্রচার করতে পারবে, সেটা নিয়ে বসছিলাম। আর ক্যাবল অপারেটরদের চ্যানেল যত সামনে থাকবে, সেগুলো মানুষ আগে দেখবে। কেবল অপারেটরদের খুশি করে কারা সেটাও তো একটা বিষয় আছে। অনেকে তো তাদের খুশি করে সামনে নিয়ে আসে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘ভালো অনুষ্ঠান যারা করবে, তাদের প্রতি মানুষের আকর্ষণ হবে, মানুষ দেখবে। আমাদেরও তো ১৬ কোটি মানুষের দেশ। গ্রাহক কখনো কমবে না, এটুকু বলতে পারি।’