মানুষ তাদের মোবাইল ফোনে প্রতিদিন গড়ে ৪ দশমিক ৮ ঘণ্টা করে ব্যয় করেছে। অর্থাৎ, ব্যবহারকারীদের দিনের প্রায় ৫ ভাগের ১ ভাগ চলে যাচ্ছে শুধু মোবাইল ফোনে। আর দিনে যতক্ষণ চোখ খোলা থাকে তার এক তৃতীয়াংশই থাকে মোবাইলের দখলে।
একবিংশ শতাব্দীর প্রযুক্তিভক্তদের এই ‘অ্যাপ আসক্তি’র খবর জানিয়েছে মোবাইল অ্যাপের বাজার বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান ‘অ্যাপ অ্যানি’।
অ্যাপ অ্যানি’র গবেষণা প্রতিবেদন বলছে, ২০২১ সালে বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন ধরনের অ্যাপ ডাউনলোড করা হয়েছে ২৩ হাজার কোটিরও বেশিবার। অ্যাপগুলোর পেছনে ব্যবহারকারীরা খরচ করেছেন ১৭ হাজার কোটি ডলার। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশিবার ডাউনলোড করা হয়েছে টিকটক। ২০২০ সালের তুলনায় ২০২১ সালে টিকটকে সময় ব্যয় বেড়েছে ৯০ শতাংশ।
ভিডিও স্ট্রিমিংয়ের বাজারে বিশ্বের শীর্ষ অ্যাপ এখনো আছে ইউটিউব। ৬০টি দেশের প্রতিটিতে দশ লাখবারের বেশি ডাউনলোড করা হয়েছে অ্যাপটি। দ্বিতীয় স্থানে ছিল নেটফ্লিক্স। জনপ্রিয়তা বেড়েছে মোবাইল গেইমেরও। এই খাতে ১১ হাজার ৬০০ কোটি ডলার খরচ করেছেন ব্যবহারকারীরা।
মহামারীর লকডাউনের প্রভাবও পড়েছে মোবাইল অ্যাপ খাতে। শপিং অ্যাপের ব্যবহার বেড়েছে ২০২১ সালে। বিভিন্ন শপিং অ্যাপে ১০ হাজার কোটি ঘণ্টা সময় দিয়েছেন সারা বিশ্বের ব্যবহারকারীরা।
আরো চমকপ্রদ বিষয় হচ্ছে, মোবাইল ফোনের পেছনে ব্যবহারকারী ১০ মিনিট খরচ করলে তার সাত মিনিট খরচ হচ্ছে সামাজিক মাধ্যমসহ ফটো এবং ভিডিও অ্যাপে। আর এই খাতেও শীর্ষস্থান টিকটকের দখলে।
এ বিষয়ে অ্যাপ এনি’র প্রধান নির্বাহী থিওডর ক্রান্টজ বলেন, ‘সময় ব্যয়, ডাউনলোড, রাজস্ব আয় ইত্যাদি প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে মোবাইল ফোন একের পর এক রেকর্ড ভাঙতে থাকায় বড় পর্দার প্রয়োজনীয়তা ফুরিয়ে আসছে।’
পর্যবেক্ষক সংস্থাটি বলছে, এ বছরের দ্বিতীয়ার্ধে টিকটকের সক্রিয় মাসিক ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১৫০ কোটি ছাড়িয়ে যাবে। মানুষ যে প্রতিদিন গড়ে ৪ দশমিক ৮ ঘণ্টা সময় মোবাইল ফোনে ব্যয় করছে, তার মধ্যে প্রতি ১০ মিনিটের ৭ মিনিটই যাচ্ছে বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যম, ছবি এবং ভিডিও অ্যাপে। এক্ষেত্রে সবার আগে রয়েছে টিকটক।
অ্যাপ অ্যানির প্রতিবেদন বলছে, ২০২১ সালেই বাজারে এসেছে ২০ লাখ নতুন মোবাইল অ্যাপ এবং গেইম। বছরে ১০ কোটি ডলারের চেয়ে বেশি কামাই করে এমন অ্যাপের সংখ্যা বেড়েছে ২০ শতাংশ।