মোবাইল আর্থিক সেবা প্রদানকারী নগদের ঘোঘিত ঈদ ক্যাম্পেইনে প্রথম জমি জিতে নিয়েছেন পোশাককর্মী রাসেল আহমেদ ও তার দল। এই দলে আরও ছিলেন মোহাম্মদ রুবেল ও মোহাম্মদ রাজীব। প্রবাসী পল্লী গ্রুপের প্রজেক্ট থেকে এই জমি হস্তান্তর করা হয়েছে বলে সোমবার নগদ এর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট (এভিপি) লিংকন মো: লুৎফরজামান সরকার স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সম্প্রতি জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল এবং নগদের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর এ মিশুক এই জমির কাগজ হস্তান্তর করেছেন। এরকম আরও কয়েকটি জমি উপহার পাবেন ক্যাম্পেইন জুড়ে ভাগ্যবান বিজয়ীরা।
বিজয়ীর পরিচয় তুলে ধরে জানানো হয়েছে, কুমিল্লার ছেলে রাসেল ঢাকায় একটি গার্মেন্টসে চাকরি করেন। তিনি শুরু থেকেই নগদ গ্রাহক। এই ক্যাম্পেইন শুরুর পর তিনি একটি প্রখ্যাত জুতা বিক্রেতার আউটলেট থেকে ১২০০ টাকা নগদের মাধ্যমে পেমেন্ট করে জুতা কিনেছিলেন। ফলে তিনি এই ক্যাম্পেইনে দল তৈরি করার জন্য যোগ্য হন। এরপর রাসেল তার দুই বন্ধু রাজীব ও রুবেলকে নিয়ে এই দলটি করেন। তাদের তিনজনেরই সক্রিয় নগদ অ্যাকাউন্ট আছে। তিনজনই এই সময় নিয়মিত লেনদেন করেছেন। ফলে ভাগ্যবান বিজয়ী হিসেবে অনেকগুলো দলের ভেতর থেকে উঠে আসে এই দলটির নাম। আগে থেকে উপহারের নাম না জানিয়ে প্রবাসী পল্লীতে আমন্ত্রণ জানানো হয় এই তিনজনকে। সেখানে তামিম ইকবাল তিনজনের পারিবারিক ও ব্যক্তিগত অর্থনৈতিক অবস্থা এবং জীবনের গল্প শোনেন। এরপর সকলে মিলে নির্ধারিত জমিতে গিয়ে তিন বিজয়ীর হাতে জমির বরাদ্দপত্র তুলে দেন। সাথে সাথে কাঁন্নায় ভেঙে পড়েন তিন বিজয়ী।
রাসেল কাঁদতে কাঁদতেই বলেন, ‘আমার আব্বা বেঁচে থাকলে আজ সবচেয়ে খুশি হতেন। বাবা খুব চেয়েছিলেন আমাদের ভাইয়েদের মাথা গোজার মতো একটা জমি হোক। আব্বা টেনশন করতে করতে মারা গেছেন। আজ নিজের জমির সেই স্বপ্ন নগদের মাধ্যমে পূরণ হলো। নগদ যেভাবে মানুষের স্বপ্নপূরণ করছে, তা সত্যিই অবিশ্বাস্য।’
রুবেল বলেন, জমি নিয়ে তার একটা দুঃখস্মৃতি আছে। তার কেনা একখন্ড জমি বেহাত হয়ে গেছে। আজ যেন সেই জমির প্রতিদান পেলেন, ‘আমার মনে হয় নগদ আমাকে আমার জীবন ফিরিয়ে দিয়েছে। আমার দুটো সন্তান নিয়ে কোথায় মাথা গুজবো, জানতাম না। নগদ আমাকে সেই সুযোগ করে দিয়েছে।’
রাজীব ভিডিও কলে পরিবারকে জমি দেখাতে দেখাতে বলছিলেন, ‘ঢাকায় নিজের একটা জমি হবে, এটা স্বপ্নেও ভাবতে পারিনি। নগদের কল্যাণে আমি এখন একটা জমির মালিক। আমি বিশ্বাস করতে পারছি না নগদ এভাবে স্বপ্নপূরণ করবে। আমার মনে হয়, আরও অনেকের স্বপ্নপূরণ হবে নগদের মাধ্যমে।’
তামিম ইকবাল জমি হস্তান্তরের সময় বলেন, নগদ এই জমি তুলে দেওয়ার মাধ্যমে নিজের কথা রেখেছে। তিনি বলেন, ‘প্রতিশ্রুতি দেওয়া সহজ। কিন্তু সেটা রক্ষা করা কঠিন। নগদ ক্যাম্পেইনের এই অবস্থায় এসেই জমি হস্তান্তর করে প্রমাণ করল, তারা প্রতিশ্রুতি রাখতে জানে। এ জন্যই আমি নগদ পরিবারের একজন বলে নিজেকে মনে করি।’
সবশেষে নগদের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর এ মিশুক বলেন, ‘আমরা গ্রাহকের কারণেই আজ দেশের শীর্ষ মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছি। তাদের কাছ থেকে পাওয়া ভালোবাসাই আমরা ফিরিয়ে দিয়েছি। এখানে আমাদের কোনো কৃতিত্ব নেই। আমরা শুধু মানুষের স্বপ্ন সত্যি করে যেতে চাই।’
প্রসঙ্গত, ঈদ-উল-ফিতরকে সামনে রেখে দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো জমি জেতার অফার নিয়ে এসেছে নগদ। এই ক্যাম্পেইনে নগদের সাথে জমির জন্য ল্যান্ড পার্টনার হিসেবে যুক্ত হয়েছে পূর্বাচল প্রবাসী পল্লী লিমিটেড। এই ক্যাম্পেইনে মাত্র তিন ধাপে ঢাকায় জমি জেতার সুযোগ পাচ্ছে গ্রাহক। এছাড়াও উপহার তালিকায় রাখা হয়েছে মোটরবাইক, টেলিভিশন, ফ্রিজ, এসি, স্মার্টফোন, স্মার্ট ওয়াচসহ ২০ কোটি টাকার পুরস্কার। ক্যাম্পেইনে অংশ নিতে গ্রাহককে প্রথমে নগদে কমপক্ষে ৫০০ টাকা লেনদেন অথবা কমপক্ষে ১০০ টাকার মোবাইল রিচার্জ কিংবা ব্যাংক থেকে নগদে ১০০০ টাকা অ্যাড মানি করতে হবে। তারপর ব্যবহারকারী এই ক্যাম্পেইনে অংশ নেওয়ার উপযুক্ত হয়েছেন বলে একটি বার্তা পাবেন। সেক্ষেত্রে তাকে নগদ অ্যাকাউন্ট আছে এমন তিনজনের একটি দল গঠন করতে হবে।
তবে এই ক্যাম্পেইনের প্রচারণা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। তোপের মুখে পড়েন তামিম ইকবাল। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রশ্ন ওঠে এটি এমএলএম কি না! গ্রাহকরা আবার ই-ভ্যালির মতো বঞ্চনার শিকার হবেন কি না তা নিয়েও শঙ্কা প্রকাশ করেন কেউ কেউ।