চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) দুই শিক্ষার্থীকে চাপা দেওয়া শাহ আমানত বাসের চালক মো. তাজুল ইসলামকে (৪৯) আটক করা হয়েছে। আটক তাজুল রাউজান থানার চিকদাইর এলাকার করম আলী হাজীর বাড়ির আবদুল খলিলের ছেলে।
বুধবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে নগরের কোতোয়ালী এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম জেলা অতিরিক্ত পুলিশের সুপার (ডিএসবি) আবু তৈয়ব মোহাম্মদ আরিফ হোসেন। তিনি বলেছেন, নগরের কোতোয়ালী এলাকা থেকে চুয়েটের দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় জড়িত বাসচালককে গ্রেফতার করা হয়েছে।
তাকে নগরের দুই নম্বর গেইট চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয় থেকে আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়।
রাঙ্গুনিয়া মডেল থানার ওসি চন্দন কুমার চক্রবর্তী জানান, ঘাতক বাস চালককে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে চট্টগ্রাম মহানগর এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। চুয়েট শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় তাকে এবং বাসের হেল্পারকে বিবাদী করে সড়ক দুর্ঘটনা আইনে মামলা দায়ের হয়েছিল। এই মামলায় চালককে আইনি প্রক্রিয়া শেষে জেল হাজতে প্রেরণ করা হবে।
চালক গ্রেফতারের বিষয়ে শিক্ষার্থীদের অবহিত করা হলে তারা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তবে বাকি দাবিগুলো বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে জানান তারা।
এদিকে এই ঘটনায় তৃতীয় দিনের মতো চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করছেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। গতকাল ৯ দফা দাবির কথা বলা হলেও তার সঙ্গে আরও এক দফা দাবি যোগ করেছেন তারা।
আন্দোলন নিয়ে কটূক্তি করা হয়েছে- এমন দাবিতে সুমন দে নামে চুয়েটের এক শিক্ষকেরও অপসারণ দাবি করছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের দেওয়া এই ১০ দফা দাবি না মানা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন তারা।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থী আশিকুল ইসলাম বলেন, ‘নিহত শিক্ষার্থীদের ক্ষতিপূরণ হিসেবে বাস মালিক সমিতি ২ লাখ টাকা করে দেওয়ার কথা বলেছে। এটা লজ্জাজনক। শাহ আমানত ও এ বি ট্রাভেলসের বাস এ সড়কে চলবে না বলে জানিয়েছে প্রশাসন, কিন্তু রুট পারমিট বাতিল করা হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে ৫টি বাস ও ৪টি অ্যাম্বুলেন্স দেওয়ার দাবিও পূরণ হয়নি। সব দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে আন্দোলন চালিয়ে যাবো’।
প্রসঙ্গত, গত ২২ এপ্রিল বিকেলে সাড়ে ৩টার দিকে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কের জিয়ানগর এলাকায় শাহ আমানত পরিবহনের একটি বাসের ধাক্কায় চুয়েটের দুই শিক্ষার্থী নিহত হন। এ দুর্ঘটনায় আরও এক শিক্ষার্থী আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।