ট্রেনের টিকিট কালোবাজারির অভিযোগে রাজধানীর কমলাপুর ও সবুজবাগ এলাকা থেকে ৯ জনকে আটক করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। তাদের মধ্যে রেলওয়ের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান সহজডটকমের চারজন কর্মী রয়েছেন। এদের মধ্যে মূল হোতা হিসেবে রয়েছেন সার্ভার অপারেটর নিউটন বিশ্বাস (৪০)। একই প্রতিষ্ঠানের তিন কর্মী মিজান ঢালী (৪০), সোহেল ঢালী (৩০) ও সবুর হাওলাদার (৪০)
আটক অপর ব্যক্তিরা হলেন- মো. সুমন (৩৯), মো. জাহাঙ্গীর আলম (৪৯), মো. শাহজালাল হোসেন (৪২), মো. রাসেল (২৪), মো. জয়নাল আবেদীন (৪৬) ও নিউটন বিশ্বাস (৪০)।
রাজধানীর কমলাপুর ও সবুজবাগ এলাকা থেকে অভিযান চালিয়ে যৌথভাবে তাদের গ্রেফতার করেছে র্যাব ও জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা (এনএসআই)।
তাদের কাছ থেকে জব্দ করা হয়েছে কালোবাজারির আলামত এবং অবৈধভাবে সংগ্রহ ও মজুত করা বিপুল সংখ্যক ট্রেনের টিকিট। জব্দ করা হয় দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ট্রেনের বিপুল পরিমাণ টিকিট, ৮টি মোবাইল ফোন, একটি এনআইডি, একটি ড্রাইভিং লাইসেন্স, কালোবাজির বিভিন্ন আলামত এবং টিকিট বিক্রয়ের নগদ ১১ হাজার ৪২২ টাকা।
শুক্রবার (২২ মার্চ) দুপুরে কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) রাতে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর কমলাপুর ও সবুজবাগ এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করেছে র্যাব-৩।
কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, বিশেষ করে ঈদ, পূজা, সাপ্তাহিক ছুটিসহ বিশেষ ছুটির দিনকে উপলক্ষ করে গ্রেফতার মিজান ও সোহেল বিভিন্ন কারসাজির মাধ্যমে সাধারণ সময়ের তুলনায় অধিক সংখ্যক টিকিট সংগ্রহ করতো। গ্রেফতার মিজান ও সোহেল প্রতি বছর ঈদ মৌসুমে দেশব্যাপী বিভিন্ন স্টেশনের সহজ ডটকমের কর্মচারী ও টিকিট কাউন্টারম্যানদের মাধ্যমে প্রায় ২-৩ হাজার রেলওয়ের টিকিট কালোবাজির মাধ্যমে বিক্রি করতো। আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগের চাইতেও বেশি সংখ্যক টিকিট সংগ্রহের জন্য পরিকল্পনা করছিল।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২০০৩ সালে কমলাপুর রেলস্টেশন শাখায় পিয়ন হিসেবে যোগ দেন মিজান। পরে CNS.bd এর সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হলে, অভিজ্ঞ কর্মী হিসেবে তাকে চাকরিতে বহাল রাখা হয়। সর্বশেষ ২০২০ সালে রেলওয়ে টিকিটের চুক্তি সহজকে দেওয়া হলে সেখানেও গ্রেফতার মিজানের চাকরি বহাল থাকে। মিজান দীর্ঘদিন ধরে ট্রেনের টিকিট কালোবাজারির সঙ্গে জড়িত।
অন্যদিকে নিউটন ২০১২ সালে স্টেশন সাপোর্ট কর্মী হিসেবে সিএনএস বিডিতে যোগদান করে ২০১৬ সালে সার্ভার অপারেটরের দায়িত্ব পান। ২০২০ সালে সহজের সঙ্গে চুক্তি হলে তার চাকরি বহাল থাকে এবং পুনরায় সার্ভার অপারেটরের দায়িত্ব পান।
র্যাব আরও বলছে, চক্রের সদস্যরা ঈদ, পূজা, সাপ্তাহিক ছুটিসহ বিশেষ ছুটির দিনে বিভিন্ন কৌশলে ও কারসাজির মাধ্যমে অধিকসংখ্যক টিকিট সংগ্রহ করতেন। টিকিট বিক্রির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ দুই ভাগে ভাগ করে অর্ধেক সহজডটকম ও রেলওয়ে স্টেশনের টিকিট কাউন্টারম্যানরা নিতেন। বাকি ৫০ ভাগ চক্রের মূল হোতা মিজান, তার প্রধান সহযোগী সোহেলসহ বিক্রয়কারী সহযোগীদের মধ্যে ভাগাভাগি হতো।