বদলে যাচ্ছে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন। ২০১৮ সালের এই আইন বদলে হচ্ছে সাইবার নিরাপত্তা আইন ২০২৩। সোমবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার জানিয়েছেন, সভায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করে একটি নতুন আইন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। নতুন আইনের খসড়াও বৈঠকে উপস্থাপন করা হয়েছে।
এর আগে, গত বুধবার আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছিলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮ বাতিল বা পরিবর্তন করা হবে না। তবে আইনের অপব্যবহার রোধে এটি সংশোধন করার প্রক্রিয়া চলছে, যা আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে সম্পন্ন হবে।
তবে সোমবারের বৈঠক শেষে আইনমন্ত্রী জানিয়েছেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮ বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এটি এখন ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন-২০২৩’ নামে প্রতিস্থাপিত হবে।
মন্ত্রী বলেছেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পরিবর্তন করা হচ্ছে। এ আইনের বহু ধারা নতুন সাইবার নিরাপত্তা আইনে যুক্ত করা হবে। কিছু ধারায় বড় সংশোধনী আনা হবে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে মানহানির অভিযোগ কারাদণ্ড দেওয়ার বিধান ছিল। নতুন আইনে সেখানে পরিবর্তন এনে কারাদণ্ডের পরিবর্তে জরিমানার বিধান করা হবে। দেওয়ানি মামলায় যেভাবে জরিমানার বিষয়গুলো আছে, সেভাবেই সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে বিষয়গুলো থাকবে। আর যখন নতুন সাইবার নিরাপত্তা আইন হবে, তখন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন থাকবে না।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে সাম্প্রদায়িকতা; চরমপন্থা সন্ত্রাসী প্রচার; এবং সামাজিক মিডিয়া, প্রিন্ট মিডিয়া বা অন্য কোন ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার মাধ্যমে ধর্মীয় বা জাতিগত সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়ানো বন্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করা হয়েছিল। তবে শুরু থেকেই আইনটির অপব্যবহারে সমালোচিত হয়।
গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, মুক্তচিন্তা ও মত প্রকাশের অধিকার সমুন্নত রাখা, সর্বোপরি মানুষের মৌলিক অধিকারের সুরক্ষা নিশ্চিতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলে র্দীঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছিল সংশ্লিষ্টরা। পাশাপাশি জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার টুর্ক গত ১ এপ্রিল বাংলাদেশ সরকারের প্রতি অবিলম্বে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রয়োগ স্থগিত করার আহ্বান জানান।