চলতি বছরের মাঝামাঝি গ্যাস সংকটে বন্ধ থাকার পর ফের পুরোদমে চালু হয়েছে বাংলাদেশ রাসায়নিক শিল্প করপোরেশনের (বিসিআইসি) চারটি ইউরিয়া সার কারখানা । সংস্থাটি জানিয়েছে, কারখানা থেকে প্রতিদিন ৩ থেকে সাড়ে ৪ হাজার টন ইউরিয়া উৎপাদন হচ্ছে। বিসিআইসির পরিচালক (উৎপাদন ও গবেষণা) শাহীন কামাল জানিয়েছেন, অনেক দিন পর আমাদের সবগুলো কারখানা একসঙ্গে চালু হওয়ায় মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) ৩ হাজার ৮০০ টন সার উৎপাদন হয়েছে, আগের দিন হয়েছে সাড়ে ৪ হাজার টন। বন্ধ থাকার পরও এ বছর (অর্থবছর) ২ লাখ ৯৫ হাজার টন সার উৎপাদন হয়েছে।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের সার ব্যবস্থাপনা ও উপকরণ শাখার অতিরিক্ত সচিব ড. শাহ্ মো. হেলাল উদ্দীন সূত্রে প্রকাশ, বোরো মৌসুমের জন্য সারের প্রয়োজন প্রায় ৭ থেকে ৮ লাখ টন। চাষের জন্য জানুয়ারি মাসে সারের চাহিদা রয়েছে ৪ লাখ ও ফেব্রুয়ারিতে ৩ লাখ টন। বর্তমানে মজুত ও দুই মাসের উৎপাদিত সার দিয়েই ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত চলবে। এছাড়া আরও ২ লাখ টন সার মধ্যপ্রাচ্যের ইউএই, কাতার ও সৌদি আরব থেকে আমদানি হচ্ছে, যা জানুয়ারিতে দেশে পৌঁছাবে।
এছাড়াও দেশের সবচেয়ে বেশি সার উৎপাদনকারী কারখানা যমুনা ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড এখন পুরোদমে চলছে। দিনে এ কারখানার উৎপাদন ক্ষমতা ১ হাজার ৭০০ টন। এছাড়া শাহজালাল ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড, চিটাগাং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার ফ্যাক্টরি লিমিটেড এবং আশুগঞ্জ ফার্টিলাইজার অ্যান্ড কেমিক্যাল কোম্পানি লিমিটেডে নিয়মিত উৎপাদন হচ্ছে।
ফলে আসন্ন বোরো মৌসুমে সারের সঙ্কট হবে বলে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
প্রসঙ্গত, স্থানীয় কারখানাগুলো এখন বছরে প্রায় ১০ লাখ টন ইউরিয়া উৎপাদন করে, বাকি চাহিদা মেটাতে হয় আমদানির মাধ্যমে। তবে গত ১২ নভেম্বর উদ্বোধন হওয়া ঘোড়াশাল-পলাশ সার কারখানাটিতে পরীক্ষামূলক উৎপাদন চলছে। এ কারখানায় ইউরিয়ার বার্ষিক উৎপাদন সক্ষমতা প্রায় ৯ লাখ টন। এটি পুরোদমে উৎপাদনে এলে আগামীতে সার আমদানি আরও কমে যাবে।
সূত্রমতে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে জিটুজি চুক্তির আওতায় ৯ লাখ টন ইউরিয়া সার আমদানির সিদ্ধান্ত হয়েছে। সৌদি আরব থেকে ৩ লাখ ৩০ হাজার টন, কাতার থেকে ৩ লাখ টন এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ২ লাখ ৭০ হাজার টন সার আমদানি করা হবে। বিশ্ববাজারে দাম বাড়ায় কৃষক পর্যায়ে প্রতি কেজি ইউরিয়ার দাম ২২ টাকার পরিবর্তে ২৭ টাকা, ডিএপি ১৬ টাকার পরিবর্তে ২১ টাকা, টিএসপি ২২ টাকার পরিবর্তে ২৭ টাকা এবং এমওপি ১৫ টাকার পরিবর্তে ২০ টাকায় কিনতে হবে।