বৃষ্টি বাধাতেও ম্লান হয়নি মেড-ইন বাংলাদেশ প্রত্যয়। শিল্পোদ্যোক্তা, ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের সতঃস্ফূর্ত উপস্থিতিতে সরব রাজধানীর বসুন্ধরা আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের ‘গুলনকশা’। ছুটির দিন হওয়ায় দর্শনার্থীদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিলো চোখে পড়ার মতো। নজর কেড়েছে অনেক ইউটিউবার।
সূত্রমতে, প্রদর্শনীর পাশাপাশি দেশী-বিদেশী উদ্যোক্তারা কেবল প্রদর্শনীতে এসে দেখেই ক্ষান্ত হননি প্রি-অর্ডারও করেছেন। দুপুরের আগেই ৫ কোটি টাকার লিফট ও ১০০০ পিস টিভির আগাম বায়নাও পেয়েছে ওয়ালটন কর্তৃপক্ষ।
সম্মেলন কেন্দ্রের হল-১ এ ইলেকট্রনিক্স ও প্রযুক্তি পণ্য ও সেবা উৎপাদনে বিশ্বে ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ ছড়িয়ে দেয়া দেশের প্রথম শিল্প প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন তুলে ধরছে তাদের বৈশ্বিক সক্ষমতা। এক ছাদের নিচেই প্রদর্শন করা হচ্ছে রেফ্রিজারেটর কম্পোনেন্টস, এয়ার কন্ডিশনার কম্পোনেন্টস, টেলিভিশন কম্পোনেন্টস, হোম অ্যাপ্লায়েন্স কম্পোনেন্টস, ইলেকট্রিক্যাল অ্যাপ্লায়েন্স কম্পোনেন্টস, লিফট কম্পোনেন্টস, ফাসেনার, মোল্ড অ্যান্ড ডাই, কাস্টিং কম্পোনেন্টস, কেমিক্যাল সলিউশনস, পিসিবি অ্যান্ড পিসিবিএ, টেস্টিং সলিউশনস।
তিন দিনের শিল্পমেলা ‘ইন্টারন্যাশনাল অ্যাডভান্সড কম্পোনেন্টস অ্যান্ড টেকনোলজি (এটিএস) এক্সপো-২০২৩’ – তে প্রতিষ্ঠানটি চারটি ক্যাটাগরিতে মোট ২১টি স্টলে তুলে ধরেছে নিজেদের তৈরি আন্তর্জাতিক মানের ৫০ হাজারেরও বেশি ইন্ডাস্ট্রিয়াল ম্যাটেরিয়ালস, কম্পোনেন্টস, সার্ভিসেস এবং টেস্টিং ফ্যাসিলিটিস।
টেস্টিং সলিউশন, ইন্ডাস্ট্রিয়াল ম্যাটেরিয়ালস, কম্পোনেন্টস, সার্ভিসেস ও প্রোডাক্ট এই চারটি জোনে প্রবেশের আগেই দর্শনার্থীদের অভিবাদন জানিয়েছে ওয়ালটনের নিজেদের তৈরি ইন্ডাস্ট্রিয়াল রোবট। প্রদর্শনীর দ্বিতীয় দিন শুক্রবার দিনভ-র অগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে থেকেছে বিদ্যুৎসাশ্রয়ী আইওটি-বেজড স্মার্ট ইনভার্টার, টুইন ফোল্ড ইনভার্টার, ফিক্সড স্পিড আয়োনাইজার। অনেকেই নেড়ে-চেড়ে দেখছেন হালনাগাদ প্রযুক্তির রসদ। বৃষ্টিবাধা উপেক্ষা করেই মেলায় এসে বাংলাদেশের উৎপাদন শৈলী ও সক্ষমতা দেখছেন দেশি-বিদেশি বিভিন্ন বেসরকারি শিল্প প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা।
ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) গোলাম মুর্শেদ জানিয়েছেন, ২০১৭ সালের ৬ এপ্রিল এশিয়ার অষ্টম ও বিশ্বের ১৫তম কম্প্রেসর কারখানা চালু করে ওয়ালটন। এর পরের বছর ২০১৮ সালে প্রথমবারের মতো দেশীয় কারখানায় ওয়ালটন কম্পিউটার ও মনিটর বানানো শুরু করা হয়। ২০১০ সাল থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নিজস্ব কারখানায় তৈরি টেলিভিশন রপ্তানি করছে। ৫ বছরের মধ্যে ওয়ালটনের কম্প্রেসর কারখানার বার্ষিক উৎপাদন সক্ষমতা ৪ মিলিয়ন ছাড়িয়েছে। ২০২৫ সালের মধ্যে উৎপাদন সক্ষমতা ১০ মিলিয়নে উন্নীত করার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ওয়ালটন টেলিভিশন, কম্প্রেসর ও এর যন্ত্রাংশ জার্মানি, গ্রিস, আয়ারল্যান্ড, পোল্যান্ড, স্পেনসহ বর্তমানে বিশ্বের ৩৫টির বেশি দেশে রপ্তানি হচ্ছে। পণ্য উৎপাদনে রসদ বিদেশ থেকে আমদানী না করে দেশ থেকে সরবরাহ করে তারা এখন দেশের ডলার সাশ্রয়ের উদ্যোগ নিয়েছেন।