দেশের ক্রমবিকাশমার ডিজিটালকমার্স খাতে শৃঙ্খলা ফেরাতে রোববার চালু হলো ইউনিক বিজনেস আইডেন্টিফিকেশন (ইউবিআইডি) নম্বর। এখন থেকে এই অ্যাপ থেকে ফেসবুকসহ অনলাইন মাধ্যমে যারা ব্যবসা করছেন তাদের নিবন্ধনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। প্রথম দিনেই ১১টি প্রতিষ্ঠান সফট লঞ্চ অনুষ্ঠানে নিজেদের ব্যবসায় নিবন্ধন করেন।
নিবন্ধন নেয়া প্রতিষ্ঠারগুলো হলো চালডাল ডটকম, ডায়বেটিক স্টোর, রকমারি ডটকম, আজকের ডিল,সাজগোজ, যাচাই ডটকম, ত্রিনাশ, নওরিস মিরর, আঁখিস কালেকশন আনন্দ বাজার মার্চেন্ট এবং ফেসবুক শপ আনন্দ বাজার মার্চেন্ট।
এর আগে সকালে সচিবালয়ে ডিজিটাল কমার্স ব্যবসার সার্বিক বিষয়ে পর্যালোচনা সভা শেষে অ্যাপটির উদ্বোধন করেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘তিন মাস আগে আমরা একটা সভা করেছিলাম, সেখানে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম তিন মাসের মধ্যে অন্তত একটি প্ল্যাটফর্মকে লঞ্চ করতে পারব, সেটাই ওনারা বলেছিলেন। আমি আনন্দিত সেই কমিটমেন্টটা ফুলফিল করতে পেরেছি। আমি মনে করি আজকের প্ল্যাটফর্মের পর ডিজিটাল বাংলাদেশের ফল আমরা পাচ্ছি। আমরা চেষ্টা করছি, ই-কমার্সের টাকাগুলো ফেরত দেওয়ার। ইতোমধ্যে কিউকমের কিছু টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে। বাকিটাও আমরা চেষ্টা করছি।’
এসময় প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ব্যবসায় ডিজিটাল রূপান্তরে এই প্রক্রিয়াটি বিদ্যমান সঙ্কট কাটাতে সময়োপযোগী পদক্ষেপ বলে মত দেন।
উপদেষ্টা বলেন, ‘যারা নারী উদ্যাক্তা আছেন তাদের জন্য আমি মনে করি এই প্ল্যাটফর্মটা ভালো একটা উদ্যোগ। এটি তাদের ব্যবসা-বাণিজ্য ভালোভাবে, সুন্দরভাবে করার জন্য সহযোগিতা করবে। আজকের সভায় এটাও সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, আমরা আরও ইন্টারমিনিস্টারিয়াল মিটিং করব। অন্য সমস্যাগুলো যেটা আছে টিন নম্বর ও ট্রেড লাইসেন্সে সমস্যা আছে, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা, ফাইন্যান্সিংয়ে সমস্যা আছে। সবকিছু আমরা একটি ইন্টারমিনিস্টারিয়াল সভা করে সমাধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
পাশাপাশি এই প্রক্রিয়ার বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
বাণিজ্যমন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব তপন কান্তি ঘোষের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ডব্লিউআইটির মহাপরিচালক এইচএম শফিকুজ্জামান।
এছাড়াও অন্যান্যের মধ্যে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধান মাসুদ বিশ্বাস, এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন, ই–কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইক্যাব) সভাপতি শমী কায়সার, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াহেদ তমাল, পুলিশের সিআইড ‘র এডিশনাল আইজি ব্যারিস্টার মাহবুবুবর রহমান এটুআই নীতি উপদেষ্টা আনীর চৌধুরী, এসবি, ডিজিটাল সিকিউরিটি এজেন্সি, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, ডাক অধিদপ্তরসহ মোট ১৬টি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে এই নিবন্ধন প্রক্রিয়াটি যৌথমূলধনী কোম্পানির কাছে হস্তান্তর করে আইসিটি বিভাগ। জানানো হয়, এর টেকনিক্যাল সাপোর্ট দিয়ে যাবে এটুআই।
অনুষ্ঠানে আরো জানানো হয়, শুধুমাত্র জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর, স্থায়ী ঠিকানা ও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর দিয়েই এই নিবন্ধন করা যাবে। ইউবিআইডিসহ নিবন্ধিত অনলাইন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে তা নিষ্পত্তির জন্য চালু করা হচ্ছে সেন্ট্রাল লজিস্টিক ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (সিসিএমএস)। ফলে এর পর রেজিস্ট্রেশনবিহীন কোনো কোম্পানি আর অনলাইনে ব্যবসা করতে পারবে না।