জল-স্থল-অন্তরীক্ষের মতোই ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সাইবার যুদ্ধে জড়িয়েছে শতাধিক হ্যাকার গ্রুপ। যুদ্ধে অধিক সক্রিয় ৯৭টি গ্রুপ। সাইবার যুদ্ধে অবতীর্ণ ইসরায়েলপন্থী হ্যাকার গ্রুপের মধ্যে রয়েছে গঞ্জেশকে দারান্দে, ইন্ডিয়ান সাইবার ফোর্স এবং ইউসিসি টিম। অপরদিকে ফিলিস্তিনের পক্ষে সক্রিয় রয়েছে কিলনেট, বেনামী সুদান, বেনামী রাশিয়া, এবং রহস্যময় টিম বাংলাদেশ।
এদিকে ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধে অ্যাক্টিভিস্ট হ্যাকারদের শতকরা ৭০০ শতাংশই সমর্থন করছে ফিলিস্তিনকে। আর অবশিষ্টদের মধ্যে ২০ শতাংশ ইসরায়েল এবং ৩ শতাংশ নিরপেক্ষ অবস্থানে রয়েছে।
হ্যাকটিভিস্ট গ্রুপগুলি বলছে, তারা ইসরায়েল এবং গাজা যুদ্ধের মধ্যে অনলাইনে ইসরায়েলি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করছে, জেরুজালেম পোস্টের মতো ওয়েবসাইটগুলিকে টার্গেটে নিয়েছে।
অপরদিকে ইসরায়েলের ওপর ফিলিস্তিনের ইসলামিক সশস্ত্র দল হামাসের আক্রমণ ও এর প্রতিক্রিয়ায় গাজায় ইসরায়েলের বিমান হামলা চালানোর পর থেকেই সামাজিক মাধ্যমে সহিংসতার অবিকৃত ছবির পাশাপাশি এডিট করা ছবি ও সংঘাত নিয়ে ভুল তথ্য জুড়ে দেওয়া ভিডিও’র প্রবণতা বেড়েছে।
মঙ্গলবার ইলন মাস্ককে এক্স থেকে ভুল তথ্য সরাতে বলেছেন ইইউ’র শিল্প প্রধান থিয়েরি ব্রেটন। এ ছাড়া, সামাজিক মাধ্যমটি ব্যবহার করে মধ্যপ্রাচ্যের সাম্প্রতিক সহিংসতা নিয়ে বেআইনি কনটেন্ট ও ভুল তথ্য ছড়ানো নিয়েও সতর্ক করেন তিনি।
বুধবার মেটা প্রধান জাকারবার্গকেও একই সতর্কবার্তা দিয়েছেন ব্রেটন। তার নির্দেশ, কোম্পানিটিকে অবশ্যই ইউরোপীয় আইন মেনে চলতে হবে।
মাস্ক ও জাকারবার্গকে পাঠানো চিঠিতে ব্রেটন আরও বলেন, তাদের কোম্পানি এই ধরনের ক্ষতিকারক কনটেন্ট কীভাবে ঠেকাবে, ইইউ’কে তা জানাতে তারা ২৪ ঘণ্টা সময় পাবেন।
পাশাপাশি, হামাস বিষয়ক ক্ষতিকারক কনটেন্ট ঠেকানো নিয়ে থাকা আইনি বাধ্যবাধকতার বিষয়টিও সকল সামাজিক মাধ্যম কোম্পানিকে মনে করিয়ে দিয়েছে ইইউ’র নির্বাহী বিভাগ ইউরোপীয় কমিশন।
সাইবার ইন্টেলিজেন্স ফার্ম রেকর্ডেড ফিউচার বলেছে, পূর্ব-প্রতিষ্ঠিত এবং নতুন (হ্যাকটিভিস্ট) উভয় গ্রুপই দাবি করেছে- “প্রতিদিন কয়েক ডজন এই সাইবার হামলার শিকারে পরিণত হয়েছে”
নিরাপত্তা সংস্থা রেকর্ডেড ফিউচারের থ্রেট গোয়েন্দা বিশ্লেষক অ্যালেক্স লেসলি বলেছেন যে তিনি এবং তার সহকর্মীরা এখন পর্যন্ত ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধের ডিজিটাল প্যান্ডামোনিয়ামের মধ্যে কার্যকলাপের তিনটি উপসেট চিহ্নিত করেছেন। ডিজিটাল আক্রমণের বেশিরভাগই আগে থেকে বিদ্যমান গোষ্ঠী বা অন্যান্য দ্বন্দ্বের সাথে সংলগ্ন অনুরূপ কার্যকলাপের বিস্তৃত প্রেক্ষাপট থেকে উদ্ভূত বলে মনে হয়। ক্ষেত্রটি আন্তর্জাতিক, তবে হ্যাকটিভিজমের মধ্যে বিদ্যমান মতাদর্শগত ব্লকের মধ্যে সীমাবদ্ধ”।
ফ্যালকনফিড থ্রেট ইন্টেলিজেন্স সার্ভিস জানিয়েছে, ইসরায়েলকে সমর্থন করা ইসরায়েলি হ্যাকার গ্রুপের সংখ্যা বর্তমানে ২০-এ দাঁড়িয়েছে। আর ফিলিস্তিনি হ্যাকার গ্রুপের সংখ্যা যেকোনো সময়ের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি হয়েছে।