চাকরি মানেই ইন্টারভিউ; চাকরি মেলা। প্রচলিত এই দুই পদ্ধতির বাইরে গিয়ে প্রশিক্ষণ ও প্রতিযোগিতার মাধ্যমে কর্মী নিয়োগের পথ বেছে নিয়েছে সফটওয়্যার নির্মাতা ৯টি প্রতিষ্ঠানের সংগঠন ‘গিকী সলিউশন’। প্রথম ‘গিকী সলিউশন লার্নাথন’ এর মাধ্যমে এবার ৪জন কর্মী নিয়োগ দিলো সংগঠনের অন্যতম সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান অরবিট্যাক্স বাংলাদেশ লিমিটেড।
প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন ও প্রথম রানার্সআপ দলের ৪ শিক্ষার্থী পুরস্কার হিসেবে সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান অরবিট্যাক্সে নিয়োগ দেয়া হয় বৃহস্পতিবার। এরা হলেন চ্যাম্পিয়ন দলের মাসুম বিল্লাহ, সৈয়দ শিবলি মাহমুদ এবং রানার্সআপ দলের আসিফ আব্দুল্লাহ ও রায়হান নিশাত।
প্রতিযোগিতায় বিজয়ী ৩টি দলের বাকী ৫ শিক্ষার্থীদেরও পড়ালেখা শেষে প্রতিষ্ঠানটিতে শিক্ষানবিশ হিসেবে কাজের সুযোগ থাকছে বলে জানিয়েছে প্রতিযোগিতার আয়োজকরা।
রাজধানীর মহাখালীতে রাওয়া কমপ্লেক্সে অরবিট্যাক্স কার্যালয়ে শনিবার সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হয় ‘গিকী সলিউশন লার্নাথন’ প্রতিযোগিতাটি। প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্বে সাতটি দল অংশ নেয়। চূড়ান্তপর্বে শিল্প প্রতিষ্ঠানে ব্যবহার উপযোগী একটি নতুন সফটওয়্যার তৈরি করে চ্যাম্পিয়ন হন সিলেট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের কম্পিউটার সাইন্সের শেষ সেমিস্টারের শিক্ষার্থী সাঈদ শিবলী মাহমুদ এবং মোহাম্মদ মাসুম বিল্লাহ। প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হিসেবে তাদেরকে এক লাখ টাকার চেক দেয়া হয়। তাদের পাশাপাশি প্রথম রানার্সআপ ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীকে দেয়া হয় অরবিট্যাক্সের নিয়োগ পত্র আর দ্বিতীয় রানার্সআপ শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অপর তিন শিক্ষার্থী পান ইন্টার্নের সুযোগ।
এ নিয়ে অরবিট্যাক্সের ব্যাবস্থাপনা পরিচালক হাসান শাহারিয়ার মাসুদ জানিয়েছেন, নতুন বছরের শুরুতেই তারা (বিজয়ী) তাদের প্রতিষ্ঠানে যোগদান করবেন। তিনি বলেন,আগামীতে আরও বেশি সংখ্যক তরুণ প্রযুক্তিবিদকে এই প্রক্রিয়ায় সুযোগ দেয়া হবে।
আয়োজকরা জানিয়েছেন, প্রতিযোগিতায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ১৬৯টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ৪০টির বেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটারবিজ্ঞান এবং প্রকৌশল বিভাগ থেকে প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে আবেদন করে আগ্রহীরা। প্রাথমিক বাছাই শেষে ১৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাছাইকৃত ২৫টি দলকে শিল্প সফটওয়্যার বানানোর জন্য এবং দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে চার মাসের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। পরে প্রত্যেক দলকে টুইটারের মতো একটি সফটওয়্যার অ্যাপ্লিকেশন বানাতে দেয়া হয়। প্রতিটি দল দুই মাসের প্রচেষ্টায় এই সফটওয়্যার অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করে জমা দেয় এবং এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে।
বিচারকদের রায়ে সেরা দলগুলোকে পুরস্কার তুলে দেন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সভাপতি রাসেল টি আহম্মেদ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন স্টার্টআপ বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সামি আহম্মেদ, বিডিজবসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহিম মাশরুর এবং বিশিষ্ট প্রযুক্তিবিদরা।
বিজয়ী এবং অংশগ্রহণকারী প্রযুক্তিবিদরা বলছেন, এই প্রতিযোগিতা এবং প্রশিক্ষণ তরুণ প্রযুক্তিবিদদের জন্য একটি নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিয়েছে।