সৌর শক্তিতে স্বয়ংক্রিয় সেচ ব্যবস্থাপনা প্রকল্প নিয়ে ‘স্মার্টার ইউরোপ অ্যাওয়ার্ড ২০২২’ সম্মাননা জিতে নিয়েছে বাংলাদেশের ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সেন্টার ফর এনার্জি রিসার্চ এর উদ্ভাবিত গবেষণা প্রকল্প স্মার্ট সোলার ইরিগেশন সিস্টেম।
জার্মানির মিউনিখে অনুষ্ঠিত পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে ১১ মে এই সম্মাননা গ্রহণ করেন গবেষণা প্রকল্পের দলনেতা এবং প্রধান গবেষক শাহরিয়ার আহমেদ চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে পুরস্কার নির্বাচনের বোর্ড বিচারকদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, কার্বন নিঃসরণ হ্রাস এবং মানব সম্পদ সংরক্ষণে এই প্রকল্পটি পরিবেশগত এবং সামাজিকভাবে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে নিঃসন্দেহে। একইসঙ্গে সিস্টেমটি ব্যবহার করে মানুষের সেচ খরচও কমবে।
উদ্ভাবিত এই প্রকল্প বিষয়ে জানা গেছে, স্মার্ট সোলার ইরিগেশন সিস্টেম হলো সৌর শক্তির ওপর ভিত্তি করে একটি স্মার্ট, স্বয়ংক্রিয় পানি সেচ ব্যবস্থা। এ সিস্টেমে রয়েছে স্মার্ট সেন্সর, যেমন- মাটির আর্দ্রতা, পানির স্তর, পিএইচ সেন্সর ইত্যাদি। দিকনির্দেশক যোগাযোগ ব্যবস্থা, আইওটি এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যবস্থা সম্বলিত উদ্ভাবিত সিস্টেমটিতে মোবাইল/ওয়েব-ভিত্তিক প্রিপেমেন্ট বাবস্থা যুক্ত রয়েছে। সিস্টেমটি রিমোট মনিটরিং, কন্ট্রোল এবং প্রি-পেমেন্ট ওয়াটার বিলিং সিস্টেম (পে-অ্যাস-ইউ-গো প্ল্যাটফর্ম) প্রদান করে।
উদ্ভাবনটি বিষয়ে শাহরিয়ার আহমেদ চৌধুরী বলেছেন, কৃষি জমির বিভিন্ন প্যারামিটার সেন্সিং করার জন্য সিস্টেমে বেশ কয়েকটি সেন্সর রয়েছে। যার মাধ্যমে সিস্টেমটি সেচের পানি নিয়ন্ত্রণ করে। এটি পানির অতিরিক্ত ব্যবহার কমায়, ডিজেল কিংবা বিদ্যুৎ সাশ্রয় করে, এটি সেচের জন্য মোট কার্বন নিঃসরণ কমায়। সিস্টেমটি ফসল এবং মাটির ধরনের ওপর নির্ভর করে পানির সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করে।
এর আগে গবেষণা ও উদ্ভাবনের স্বীকৃতি হিসেবে বেশ কয়েকটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার জিতেছেন শাহরিয়ার আহমেদ চৌধুরী। ২০১৬ সালে জাতিসংঘের মোমেন্টাম ফর চেঞ্জ অ্যাওয়ার্ড (জাতিসংঘের ২২ তম জলবায়ু সম্মেলন ২০১৬ মারাক্কেশ, মরক্কো ), ইন্টারসোলার অ্যাওয়ার্ড ২০১৬ (মিউনিখ, জার্মানি), এডুকেশন লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ডস ২০১৮ (মুম্বাই, ভারত), এশিয়ান ফটোভোলটাইক ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন অ্যাওয়ার্ড ২০১৯ (সাংহাই, চায়না)। এ ছাড়া তার উদ্ভাবন ও গবেষণা কাজের জন্য তিনি ২০১৬ এবং ২০১৮ সালে জাতীয় বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সপ্তাহের ইনোভেশন অ্যাওয়ার্ড এবং ২০২০ সালে বেসিস ন্যাশনাল আইসিটি অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন।