ডিজিটাল হাটের পর এবার ফিজিক্যাল হাটে ডিজিটাল পেমেন্ট সুবিধা চালু করতে যাচ্ছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনায় ভাটারা, গাবতলী, বসিলা, আফতাবনগর, কাওলা ও উত্তরা ১৭ নম্বর সেক্টরের কোরবানির পশুর হাটে বসানে হচ্ছে ডিজিটাল পেমেন্ট বুথ। ব্যাংকের পাশাপাশি কোনো চার্জ ছাড়াই মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সিস্টেমেও নগদ টাকা ছাড়াই চলবে এসব হাটের লেনদেন। এতে জালটাকা থেকে শুরু করে ছিনতাই এর মতো দুর্বৃত্তপনা থেকে গ্রাহকরা যেমনটা রক্ষা পাবেন তেমনি হাসিলের টাকা নিয়েও জটিলতা কমবে। স্বচ্ছতার সঙ্গে রাজস্ব আয় আহরণ সম্ভব হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এবারের ঈদে এই পাইলট প্রকল্পটি সফল হলেই গ্রামের হাটগুলোকেও এভাবে ডিজিটাল পেমেন্ট সিস্টেমের অধীনে এনে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বুধবার (২৯ জুন) রাজধানীর বনানীর শেরাটন হোটেলে বাংলাদেশ ব্যাংকের পাইলট প্রকল্প ‘স্মার্ট বাংলাদেশ, স্মার্ট হাট’ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম।
মাস্টারকার্ড কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামালের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ডিজিটাল পেমেন্ট বুথ স্থাপন ও পরিচালনার জন্য ছয়টি বাণিজ্যিক ব্যাংক হাটগুলোতে একযোগে কাজ করছে। ব্যাংকগুলো হলো- ব্যাংক এশিয়া লিমিটেড, ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেড, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেড, ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড, দি সিটি ব্যাংক লিমিটেড। এছাড়াও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস প্রদানকারী সংস্থা হিসেবে থাকছে বিকাশ লিমিটেড ও ইসলামী ব্যাংক এম ক্যাশ। তবে গত দুই বছরের মতো এবারো যথারীতি ই-ক্যাবের ব্যবস্থাপনায় ডিজিটাল হাটও চলবে।
ঢাকা উত্তর সিটির মেয়ার আতিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব ড. মোহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মনজুর মোহাম্মদ শাহজাদা, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মোঃ খোরশেদ আলম, বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি মোঃ ইমরান হোসেন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এসময় বক্তারা জানান, কোরবানির পশুর হাটে ডিজিটাল পেমেন্ট সিস্টেম চালুর এই পরীক্ষামূলক প্রকল্পটির আওতায় প্রতিটি হাটে একটি করে ডিজিটাল পেমেন্ট বুথ স্থাপন করা হবে। সেখানে ক্রেতারা ডেবিট/ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে পিওএস-এ মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, কিউআর কোডের মাধ্যমে অথবা বুথে থাকা এটিএম মেশিন থেকে নগদ অর্থ উত্তোলন করেও বিক্রেতাকে পশুর দাম পরিশোধ করতে পারবেন। পাশাপাশি এর মাধ্যমে ক্রেতারা ইজারাদারদের হাসিলের নগদ অর্থও পরিশোধ করতে পারবেন। প্রান্তিক খামারি ও ইজারাদারদের স্বার্থে পাইলট প্রকল্পটির (১ জুলাই থেকে ১২ জুলাই পর্যন্ত) অধীনে করা ডিজিটাল লেনদেনে কোনো খরচ (চার্জ) নেওয়া হবে না।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সেলিম রেজা, , বাংলাদেশ ব্যাংকের অতিরিক্ত পরিচালক শাহ জিয়া-উল হক,মোহাম্মদ বদিউজ্জামান দিদার এবং এসোসিয়েশন অফ ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (ABB) সভাপতি সেলিম হোসেন।
প্রসঙ্গত, যৌথভাবে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ, স্মার্ট হাট’ পাইলট প্রকল্পটি পরিচালনা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। আর সংস্থা দুটিকে সার্বিক সহায়তা করছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশন।