রেলসেবা অ্যাপ কিংবা ওয়েবে ই-সেবা সিস্টেমে কোনো ত্রুটি নেই। ব্যাপক চাহিদার কারণেই অফলাইনে সাময়িক সমস্যা হচ্ছে। তাপরও অফলাইন থেকে অনলাইনে বেশি টিকিট বিক্রি হয়েছে। দুই দিনের টিকিট বিক্রিতে পরিসংখ্যান বলছে, প্রথম দিনে কাউন্টার থেকে ৪৫% টিকিট বিক্রি হলেও অনলাইনে বিক্রি হয়েছে ৭৬% টিকিট। একইভাবে দ্বিতীয় দিনে কাউন্টার থেকে ৫২% হলেও অনলাইনে বিক্রি হয়েছে ৫৭% টিকিট।
বুধবার (২২ মে) মুঠোফোনে ডিজিবাংলা’র সঙ্গে আলাপকালে এসব তথ্য জানান অনলাইনে রেলের টিকিট বিক্রি পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান সিএনএস (কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সিস্টেম) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুনির উজ জামান চৌধুরী।
কাউন্টারের চেয়ে অনলাইনে বেশি টিকিট বিক্রি হচ্ছে এমন পরিসংখ্যান তুলে ধরে তিনি জানান, ২১ মে তারিখ থেকে ট্রেনের আগাম টিকেট বুকিং সেবা চালু হয়। কাউন্টারের পাশাপাশি অনলাইনে ৫০ শতাংশ টিকেট বিক্রি শুরু হয়। এই দিন বিক্রি হয় ৩০ মে’র টিকিট। মোট ৩১ হাজার ৩৮০ টিকিটের মধ্যে কাউন্টার থেকে বিক্রির জন্য বরাদ্দ হয় ২০ হাজার ২৩৫ টিকিট। এর মধ্যে ৯ হাজার ১৯১ টিকিট বিক্রি হয়। অপরদিকে অনলাইনে বিক্রির জন্য বরাদ্দকৃত ১১ হাজার ১৪৫টি টিকিটের মধ্যে বিক্রি হয়েছে ৮ হাজার ৫৮১ টিকিট। একইভাবে ৩১ মে’র বরাদ্দকৃত মোট টিকিটের মধ্যে কাউন্টার থেকে ১০ হাজার ৫৪০ এবং অনলাইনে ৬ হাজার ৩৮০ টিকিট বিক্রি হয়েছে।
এর আগে অবশ্য কমলাপুর রেলস্টেশন পরিদর্শন করে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন জানিয়েছিলেন, মঙ্গলবার (২১ মে) ইন্টারনেটের মাধ্যমে টিকিট বিক্রি হয়েছে ১৪ হাজার ৭৫৪। এর মধ্যে অ্যাপের মাধ্যমে ৫ হাজার ২৪২ টিকিট বিক্রি হয়েছে।’ অনলাইনে টিকিট কাটা নিয়ে বিড়ম্বনার বিষয় খতিয়ে দেখতে সেখানে স্থাপিত সার্ভার রুমও পরিদর্শন করে দুদক।
এমন পরিস্থিতিতে অনলাইন রেলটিকিট সেবা’র জনভোগান্তি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে সিএনএস ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, “স্বল্প সিট ক্যাপাসিটি আমাদের মূল সমস্যা। সিস্টেমটি যখন তৈরি করা হয়েছিলো আন্তর্জাতিক মানেই গড় ভিজিটর হিসেবে তৈরি করা হয়। কিন্তু ঈদের মতো সময়ে টিকিটের চাহিদা’র তুলনায় যোগান কম থাকায় সমস্যা তৈরি হচ্ছে। এটা সফটওয়্যার বা অ্যাপের কোনো সমস্যা নয়। ”
বাড়তি গ্রাহকের চাপ মেটাতে ক্লাউড সার্ভার ব্যবহার করা হচ্ছে কিনা প্রশ্নের জবাবে বলেন, “আমাদের নিজস্ব ক্লাউড সার্ভার রয়েছে।”
তাহলে কি সেটি প্রয়োজন মেটাতে সক্ষম হচ্ছে না প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “ঈদের সময় সড়কে যেমনটা জ্যাম হয়, অনলাইনেও তেমনটা ঘটে। প্রকল্প চুক্তি অনুযায়ী, আমাদের মূল সার্ভার একই সময়ে ১০ হাজার হিট নিতে পারে কিন্তু এই হিট যদি এক লাখে পৌঁছে যায় তাহলে কি হবে?এটা সাময়িক সমস্যা। তারপরও কিন্তু আনুপাতিক হারে অনলাইনেই টিকিট বিক্রি হয়েছে বেশি।”
তাহলে সমস্যাটা কোথায় জানতে চাইলে মনির উজ জামান বলেন, “কোনো সমস্যা নেই। সফটওয়্যার বা প্রকৌশলগত কোনো সমস্যাও নেই। হার্ডওয়্যার অবকাঠামোর উন্নয়ন করলে আরো অধিকতর ভালো সেবা দেয়া যাবে। তবে বাড়ি ফেরত মানুষের সিটের চাহিদা পূরণ না হওয়া পর্যন্ত এই সমস্যার সমাধান হবে না।”