এবার আলু থেকে দেশেই তৈরি হলো পলিথিন। আলু থেকে পরিবেশবান্ধব এই ব্যাগের উদ্ভাবক মাহবুব সুমন এর নাম দিয়েছেন পলাকা। মাহবুব তেল-গ্যাস-বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির নবায়নযোগ্য শক্তি বিশেষজ্ঞ এবং বিকল্প জ্বালানি ও বিদ্যুৎ মহাপরিকল্পনা গবেষক দলের সদস্য।
তিনি জানান, জার্মান এনার্জি স্পেশালিষ্ট বন্ধু প্রক্রিয়াটা তাকে শিখিয়েছেন। তার নাম ইয়ান শ্মিডট। শ্মিডট এর সাহায্য নিয়ে একদমই স্থানীয় যন্ত্রপাতি ও কমন সেন্সের ব্যবহার করে আমরা যে পলেথিন বানালাম তার নামই পলকা (POLKA)।
পলিথিন ও প্লাস্টিকের দূষণ কমানোর পাশাপাশি এই ব্যাগ দেশের আলু চাষি ও কোল্ড স্টোরেজ মালিকদের জন্যও সুফল বয়ে আনবে বলে প্রত্যাশা করেছেন উদ্ভাবক মাহবুব সুমন।
নিজের ফেসবুক স্ট্যাস্টাসে জানান, দ্রুতই আলু থেকে তৈরি পলিথিনের ব্যাগের বাণিজ্যিক উৎপাদনের পরিকল্পনা করা হয়েছে ‘শালবৃক্ষ’।
ইতিমধ্যেই আলু থেকে এক্সপেরিমেন্টাল পলিথিনের শিট তৈরি করে তা থেকে ব্যাগ বানিয়ে ভর বহন ক্ষমতা পরীক্ষা করেও দেখেছেন সংশ্লিষ্টরা। বাণিজ্যিক উৎপাদনে গেলে প্রতিটি ব্যাগের বিক্রয় মূল্য হবে আনুমানিক ৩ টাকা। এটি ৩০ দিনের মধ্যে মাটিতে মিশে যাবে। পরীক্ষামূলকভাবে তৈরি গতানুগতিক সাইজের ব্যাগগুলোর ওজন ধারণ ক্ষমতা ৫/৬ কেজি।
উদ্ভাবনের কারণ হিসেবে তিনি বলেন, প্রথম আইডিয়াটা আসে গত বছর ২০১৮’র এপ্রিল মাসে। মুন্সিগঞ্জ এলাকায় প্রচুর আলুর কোল্ড স্টোরেজ। এসব কোল্ড স্টরেজে সৌর বিদ্যুতের প্রস্তাব গিয়ে জানতে পারি তারা ভীষণ আর্থিক ক্ষতিতে আছেন। নতুন করে বিনিয়োগের সক্ষমতা নাই। আগে একচেটিয়া ব্যাবসা করতেন তারা। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে দেশের উত্তরাঞ্চলে আলুর চাষ বাড়ায় ঢাকা সহ আশেপাশের আলু চাষী ও কোল্ড স্টোরেজ ব্যবসায়ী উভয়েই আছেন মারাত্মক আর্থিক ক্ষতিতে। একজন কোল্ড স্টোরেজ মালিক জানালেন গত দুই বছরেই তার ৩ থেকে ৮ কোটি টাকা করে লোকসান গুনতে হয়েছে। এরকম সময়ে আমার মনে হয়েছিল যদি আমরা এই ব্যবসায়িদের আলু থেকে কোন সেকেন্ডারি বা টারশিয়ারি প্রোডাক্ট ডেভলাপ করে দিতে পারি তাহলে আলু চাষি, ব্যবসায়িরা বেঁচে যাবে। আর প্রযুক্তি সহ পণ্যটি যদি পরিবেশবান্ধব হয় তাহলে পরিবেশের দূষণ কমে বরং উপকার হবে। মাঝখান থেকে প্রচুর নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হবার সম্ভাবনাতো থেকেই গেল।