বাংলাদেশের বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের উপর আমেরিকা সরকারের নিষেধাজ্ঞাকে কেন্দ্র করে এবার গুজব ছড়িয়েছে তথ্য-প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের বিরুদ্ধে। অনলাইনে গুজবকারীরা বলছেন, রাষ্ট্রীয় সফর থাকার পরও প্রতমিন্ত্রী আমেরিকায় ঢুকতে পারেননি। বিষয়টিকে মিথ্যাচার দাবী করেছেন প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। তার সফরের বিস্তারিত উল্লেখ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পাল্টা পোস্টও দিয়েছন তিনি।
গত রোববার কবীর আহমেদ নামের একটি আইডি থেকে প্রতিমন্ত্রী পলকের একটি ছবি এবং বাংলাদেশ সরকারের জিও (গভর্মেন্ট অর্ডার) সংযুক্ত করে একটি পোষ্ট করা হয়। আইডির ব্যাক্তি নিজেকে আয়ারল্যান্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দাবী করেছেন।
পোষ্টে তিনি লেখেন,‘আরও একটি সুখবর। বিনা ভোটের মাফিয়া অবৈধ সরকারের পাতিমন্ত্রী পলককে ঢুকতে দেয়নি আমেরিকা। তার নির্ধারিত কর্মসূচি ছিল ওয়াশিংটন ও নিউইয়র্কে! কিন্তু তাও তাকে ঢুকতে দেয়নি। আর ও অনেক সুখবর আসছে।’
পোষ্টটিতে সোমবার রাত সাড়ে সাতটা পর্যন্ত প্রায় ২৭০ জন প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। অনেকে শেয়ারও করেছেন। এই পোষ্টের প্রতিক্রিয়ায় প্রতিমন্ত্রী পলক নিজের প্রফাইল ও পেইজে একটি বিশদ লেখা পোস্ট করেছেন।
তিনি লিখেছেন, ‘আমি আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাচ্ছি ডিরেক্টর অফ হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি সাউথ এশিয়া ইন্সটিটিউট Professor Tarun Khanna, এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর অফ হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি সাউথ এশিয়া ইন্সটিটিউট Hitesh Hathi এবং মিনাকে যে ক্রিসমাসের ছুটি এবং প্রচণ্ড ঠাণ্ডা থাকা সত্ত্বেও (-৪°) হার্ভার্ডে প্রায় দুই ঘণ্টার বেশি সময় ধরে আমাদের বাংলাদেশের জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতি গড়ার জন্য কিভাবে আমরা কাজ করতে পারি নলেজ পার্টনার হিসেবে সে বিষয়ে আলোচনা করার জন্য এবং আমাকে হার্ভার্ডে দুপুরে আপ্যায়ন করার জন্য।
এইবারই প্রথম আমি বোস্টন থেকে (Flight No AC ৫৭৯৮) ফ্লাইটে ওয়াশিংটন ভ্রমণ করলাম। যার অভিজ্ঞতাও অত্যন্ত ভালো ছিল।
এইবারই প্রথম আমি বোস্টন থেকে (Delta 5798) ফ্লাইটে ওয়াশিংটন ভ্রমণ করলাম। যার অভিজ্ঞতাও অত্যন্ত ভালো ছিল। ২৫ তারিখের টরন্টো থেকে রওনা হয়ে ২৬,২৭ বোস্টন বিশ্বের অন্যতম শিক্ষানগরী ভিজিট শেষে ২৮ ডিসেম্বর ওয়াশিংটনে পৌঁছাই- যোগ করেন তিনি।
পলক বলেন, ওয়াশিংটন এর আগেও আমি দুইবার গিয়েছি এবং ওয়াশিংটনের হিস্ট্রি মিউজিয়াম, সায়েন্স মিউজিয়াম, হোয়াইট হাউস সহ অনেক কিছুই পরিদর্শন করেছি। এবারের বিশেষত্ব হচ্ছে, বাংলাদেশের তিনজন ওয়ার্ল্ড ব্যাংকে নিযুক্ত কর্মকর্তা তাদের সাথে বৈঠক এবং আমার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আমার দীর্ঘদিনের সখ ছিল তাদেরকে হোয়াইট হাউজ, লিংকন মেমোরিয়াল এবং ওয়াশিংটনের বিভিন্ন মেমোরিয়াল দেখানোর। আর্ট অ্যান্ড টেকনোলজি মিউজিয়াম ছিলো মূল আকর্ষণ। এর সাথে সায়েন্স মিউজিয়াম ওয়াশিংটন হিস্ট্রি মিউজিয়াম দেখে আমার সন্তান অপূর্ব, অর্জন এবং অনির্বাণ ভীষণ খুশি।
আমি আরও ধন্যবাদ জানাই ওয়াশিংটনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত জনাব শহীদুল ইসলামকে। এই তীব্র শীতের মধ্যে এবং ছুটির মধ্যেও বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক আয়োজন করার জন্য। ধন্যবাদ জানাই বাংলাদেশের সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব এবং বর্তমানে বিশ্ব ব্যাংকে নিযুক্ত আমাদের স্থায়ী প্রতিনিধি শফিউল আলম এবং বিশ্বব্যাংককে বাংলাদেশের আরও দুইজন নিযুক্ত কর্মকর্তাকে তাদের বৈঠক এবং রাতের আপ্যায়নের জন্য।
গত ২৫-২৮ বোস্টন ও ওয়াশিংটন সফর শেষে ঢাকায় ফিরেছি। আশা করছি হার্ভাড এবং ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের সাথে আমরা একসাথে কাজ করবো। ২০৪১ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতি, উদ্ভাবনী জাতি এবং স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে এই সফরটি সহযোগিতা করবে।
গত ১ তারিখ রাত ১০ টায় বাংলাদেশে পৌঁছেছি। পৌঁছানোর পরে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ কর্তৃক বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তোলন এর স্বীকৃতি উদযাপন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি পরিদর্শন এবং পরের দিন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য পোস্টটি দিতে দেরি হলো।’
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক গণমাধ্যমকে বলেন, ‘অনলাইনে নানা ধরণের গুজব তৈরি সৃষ্ঠি করছে জামাত-বিএনপির এজেন্টরা। আমার ক্ষেত্রে যেটি ঘটল সেটি তাদের মিথ্যাচারের একটি উজ্জ্বল উদাহরণ। এগুলোকে আমরা কেস স্টাডি হিসেবে দেখছি।’