দেশে আগামী ১ জুলাই থেকে চালু হবে অবৈধ মুঠোফোন বন্ধের প্রযুক্তি – ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেনটিটি রেজিস্ট্রার (এনইআইআর) সিস্টেম। অবৈধভাবে আমদানি করা মুঠোফোন ব্যবহার বন্ধের এই ব্যবস্থাপনায় ফোন বন্ধের ক্ষেত্রে গ্রাহক পর্যায়ে সহনশীলতা দেখাবে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি। ধীরে ধীরে এটি বাস্তবায়ন করা হবে বলে ডিজিবাংলাকে জানিয়েছেন বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার।
তিনি বলেন, আমরা ১ জুলাই থেকে এনইআইআর কার্যকর করতে যাচ্ছি। ধীরে ধীরে এটা বাস্তবায়ন করা হবে। আমরা ব্যবস্থাটি চালু করব এমনভাবে যাতে গ্রাহকের ওপর চাপ না পড়ে।
অবৈধ মুঠোফোন বন্ধের প্রক্রিয়ায় গ্রাহক পর্যায়ে কীভাবে সহনশীলতা দেখানো হবে প্রশ্নের জবাবে বিটিআরসির কমিশনার এ কে এম শহীদুজ্জামান জানিয়েছেন, ব্যবহৃত ফোন নিবন্ধনের জন্য গ্রাহক সময় পাবেন, হঠাৎ করেই কাউকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে না।
মুঠোফোন বৈধ না অবৈধ, তা যাচাইয়ের পদ্ধতি কী?
মুঠোফোনের বৈধতা যাচাইয়ের পদ্ধতি হলো মুঠোফোনের মেসেজ অপশনে গিয়ে KYD স্পেস ১৫ ডিজিটের আইএমইআই নম্বর লিখে 16002 নম্বরে পাঠাতে হবে। ফিরতি মেসেজ বা খুদে বার্তায় বৈধ না অবৈধ, তা জানা যাবে। মুঠোফোনের মোড়কে স্টিকারে আইএমইআই নম্বরটি থাকে। এর বাইরে *#06# ডায়াল করে আইএমইআই নম্বর জানা যায়।
তিনি বলেন, যে কেউ এসএমএস প্রেরণের মাধ্যমে ডাটাবেস ব্যবহার করে আমদানি করা হ্যান্ডসেটগুলোর বৈধতা পরীক্ষা করতে পারবে। এনইআইআর পদ্ধতি ১৫ দিনের অস্থায়ী সময়ের জন্য কাজ করবে এবং এর ট্রায়াল রান জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলবে। যদি সক্রিয় সিম কার্ড মোবাইলে প্রবেশের পর বিটিআরসি ডাটাবেসে কোনও হ্যান্ডসেট না পাওয়া যায়, তাহলে বিটিআরসি ওই হ্যান্ডসেটের আইএমইআইকে ‘সাদা তালিকা’য় সাতদিন রেখে ব্যবহারকারীকে ফোনটি আমদানি বা কেনার আইনি নথি ব্যবহার করে নিবন্ধনের সময় দেবে। যদি কোনো ব্যবহারকারী তার হ্যান্ডসেটটি বিক্রি করতে চান, তবে তাকে নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটের মাধ্যমে হ্যান্ডসেটটি নিবন্ধনভুক্ত করে নতুন ব্যবহারকারীর নামের অধীনে ডাটাবেসে পুনরায় নিবন্ধন করাতে হবে।
বিটিআরসি কমিশনার আরো জানান, প্রথম তিন মাস সংশোধন, বিচার ও ত্রুটি প্রক্রিয়ার জন্য এনইআইআর প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে। পরবর্তীতে ব্যবহারকারীদের উত্থাপিত সমস্যাগুলো সমাধান করে প্রক্রিয়াটি পুরোদমে প্রয়োগ করা হবে।
দীর্ঘ দিনের প্রচেষ্টার পর মোবাইল ফোন নিবন্ধনের এই প্রক্রিয়াটি বাস্তবায়নকে যুগান্তকারী উল্লেখ করেছেন মোবাইল ফোন আমদানিকারকদের সংগঠন বিএমপিআইএ সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া শহীদ। এক্ষেত্রে যত্র দ্রুত সম্ভব যে বিপুল সংখ্যক গ্রাহক ডেটেবেজের বাইরে আছেন তাদের অন্তর্ভূক্তিতে সচেতনতা তৈরির ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন তিনি।
তিনি বলেন, সিম নিবন্ধন প্রক্রিয়া বাস্তবায়নের মতো এক্ষেত্রেও আমরা গ্রাহক যেনো কোনো রকম ভোগান্তিতে না পড়ে সে বিষয়টি মাথায় নিয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি’র সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করবো।
একইভাবে প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষ পর্যায়ে সচেতন করতে এ বিষয়ে বিটিআরসিকে প্রচার-প্রচারণা চালানোর পাশাপাশি বায়োমিট্রিক পদ্ধতির অনুরুপ সংশ্লিষ্ট কোম্পানির আউটলেট থেকে গ্রাহকরা যেন আইএমইআই যাচাই-বাছাই করতে পারেন তার ব্যবস্থা করার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ মোবাইল ফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেন, বিটিআরসি কে গ্রাহকদের সময় দিতে হবে। আর গ্রাহক সচেতনতায় বিটিআরসি-কে প্রচার-প্রচারণা বাড়াতে হেবে। একইভাবে বায়োমেট্রিক পদ্ধতির মতো ব্রান্ডকোম্পানিগুলোর আউটলেটে নিবন্ধন বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।