চলমান করোনা সঙ্কটের স্বাস্থ্যঝুঁকি থেকে নিরাপদ থাকতে স্বেচ্ছা গৃহবন্দিবস্থায় থাকা দেশকে সচল রাখতে মাঠে রয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি সংগঠগুলো। কিন্তু বৈরী পরিবেশ মোকাবেলা করে সেবা অব্যাহত রাখতে গিয়ে ইতিমধ্যেই অর্থনৈতিক ঝুঁকির মুখে পড়েছেন তারা। সামনের কঠিন চ্যালেঞ্জ নিয়ে ডিজিটাল বৈঠকও করেছেন দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের ৫ সংগঠনের নেতারা। ওই বৈঠকে মিলিত হন বিসিএস, বেসিসি, আইএসপিএবি, বাক্য ও ইক্যাব এর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা।
বিশ্বস্ত সূত্র জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার জুম ভিডিও বৈঠকে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের ব্যবসায়-বাণিজ্যে যে বিরুপ প্রভাব বিস্তার করছে তা থেকে উত্তরণের পথ খুঁজতে এবং সরকারের সহযোগিতা কিভাবে অর্জন করা যায় তা নিয়ে আলোচনা হয়। আলোচনায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, পরিস্থিতি সামাল দিতে খাতটি কর্মরত কর্মকর্তা কর্মচারীদের বেতন-ভাতার একাংশ ও অফিস ভাড়া সরকারের কাছে অনুদান হিসেবে চাওয়া হবে।
দাবি করা হবে, এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়র জন্য যেন এই অনুদান কাযকর করা হবে।
এছাড়া জামানতবিহীন ২% সরল সুদে ঋণ সুবিধা যার প্রথম ১২ মাস বা ১ বছর গ্রেস পিরিয়ড হিসেবে থাকবে (অর্থাৎ, একবছর পর থেকে ঋণ পরিশোধ শুরু হবে) এন্টারপ্রোণারশিপ সাপোর্ট ফান্ড বা ইএসএফ এর শর্তাবলী শিথিল করে প্রক্রিয়াটি ত্বরান্বিত করারও প্রস্তাব করা হবে।
সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, তথ্যপ্রযুক্তি খাতের পাঁচ সংগঠনের একটি সমন্বিত দাবি রোববারের মধ্যে সরকারের কাছে যাচ্ছে। এখন এই প্রস্তাবনা তৈরিতেই ব্যস্ত রয়েছেন সংগঠনের নেতারা।
শুক্রবার (৩ এপ্রিল) নিজের ফেসবুক পেজে সংগঠনগুলোর ঐক্য নিয়ে বেসিস সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর লিখেছেন,
করোনা-দুর্যোগে ব্যবসায়-বাণিজ্যে যে বিরূপ পরিস্থিতি বিরাজ করছে, তা’ কিভাবে মোকাবিলা করা যায় এবং একসাথে সরকারের কাছে কিভাবে সাহায্যের জন্য আবেদন করা যায়, এ নিয়ে গতকাল বেসিস, বিসিএস, আইএসপিএবি, বাক্কো এবং ই-ক্যাব-এর মধ্যে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সবগুলো অ্যাসোসিয়েশনই একমত হয়েছে যে, সরকারের কাছে কর্মচারীদের বেতন-ভাতার একাংশ ও অফিস-ভাড়া অনুদান হিসাবে চাওয়া হবে। এপ্রিল ২০২০ থেকে সেপ্টেম্বর ২০২০ পর্যন্ত এই অনুদান কার্যকরী হবে। এছাড়াও, জামানতবিহীন ২% সরল সুদে ঋণ চাওয়া হবে, যার প্রথম ১২ মাস গ্রেস পিরিয়ড হিসেবে থাকবে। অর্থাৎ, একবছর পর থেকে ঋণ পরিষোধ শুরু হবে। ইএসএফ (Entrepreneurship Support Fund)-এর শর্তাবলী শিথিল করে প্রক্রিয়াটি ত্বরান্বিত করারও প্রস্তাব করা হবে। অনতিবিলম্বে এবিষয়ে একটি প্রস্তাবনা তৈরী করে আগামীকাল শনিবারের মধ্যেই সরকারের বিভিন্ন সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
একই দিনে বিসিএস সভাপতি শাহীদ উল মুনীর লিখেছেন,
করোনা ভাইরাসের প্রভাবে সৃষ্ট তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবসার অস্থিতিশীল পরিবেশকে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে নিতে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, এমপিসহ এই খাতের সাথে সংশ্লিষ্ট উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রতিনিয়ত পরামর্শ করে আমরা তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবসায়ীদের সুদিন ফিরিয়ে আনতে আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছি। অনতিবিলম্বে এ বিষয়ে একটি প্রস্তাবনা তৈরী করে রবিবার (০৫ এপ্রিল) মধ্যেই সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে।