বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরামের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ‘ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা আইন’ প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ। আইন তৈরির পাশাপাশি ব্যক্তি তার তথ্য কতটুকু প্রকাশ করবেন সেটি ঠিক করে দেবে দেবে সরকার।
সূত্রমতে, এই আইনের মাধ্যমেই ফেসবুক, গুগল, ইউটিউব, টুইটার, হোয়াটসঅ্যাপ, ভাইবার ইত্যাদি ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহারের সময় (বিশেষ করে আইডি তৈরির সময়) ব্যবহারকারীরা যেসব ব্যক্তিগত তথ্য চাওয়া হয় তা তৃতীয় পক্ষের কাছে ফাঁস করে দেয়া হলে তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে। এই আইনের অধীনেই তাদের জরিমানা নির্ধারণ করা হবে। ব্যক্তির ব্যক্তিগত তথ্যের বাণিজ্যিক ব্যবহার ঠেকানো হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার জানিয়েছেন, আইন তৈরির লক্ষ্যে একটা সার্ভে করা হয়েছে। তাতে দেখা গেছে, পৃথিবীর ৯০ ভাগ দেশ ডাটা সিকিউরিটি আইন করে ফেলেছে। এর সর্বশেষ নজির সিঙ্গাপুর। এসব দেশের আইন (তথ্য সুরক্ষা আইন)পর্যালোচনা করে একটি প্রতিবেদন তৈরি করছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ।
প্রতিবেদনের আলোকে একটি খসড়া তৈরি করে অংশীজনদের মাধ্যমে তা মূল্যায় করেই সংসদীয় কমিটির কাছে পেশ করা হবে বলে জানাগেছে।
এ বিষয়ে মন্ত্রী বলেছেন, ‘ব্যক্তিগত তথ্য যাতে বেহাত না হয়, বেহাত হলেও কেউ যাতে কোনও ক্ষতি করতে না পারে বা ক্ষতি করলেও যাতে ক্ষতিপূরণ আদায় সহজ হয় সেজন্য ‘ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা আইন’ প্রণয়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।যত দ্রুত সম্ভব আমরা আইনটি তৈরি করে ফেলবো। আমরা এ বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছি এবং কাজও অনেক দূর এগিয়েছে।’
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের সংবিধানের মৌলিক অধিকার অংশের ৪৩ (খ) অনুচ্ছেদে ‘আইনের দ্বারা আরোপিত যুক্তিসঙ্গত বাধানিষেধ সাপেক্ষে’ নাগরিকের ব্যক্তিগত গোপনীয়তার অধিকার সংরক্ষণের কথা সুস্পষ্ট ভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।একইসঙ্গে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের ৬৩ ধারায় অনুমতি ছাড়া কারো ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশকে অপরাধ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ঘোষণা (অনুচ্ছেদ ১২) নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার বিষয়ে আন্তর্জাতিক সনদ (অনুচ্ছেদ ১৭), জাতিসংঘের কনভেনশন অন মাইগ্রেন্ট ওয়ার্কার্স (অনুচ্ছেদ ১৪) এবং শিশু অধিকার সনদ (অনুচ্ছেদ ১৬)-এ প্রাইভেসিকে অধিকার হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। কিন্তু আইন না থাকায় বাংলাদেশের নাগরিক এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।