গত এক বছরে দেশের মোবাইল পরিষেবায় যুক্ত হয়েছে ৬২ লাখ নতুন সংযোগ। মোবাইলে নতুন করে ইন্টারনেট ব্যবহার শুরু করেছেন ৫৭ লাখ ব্যবহারকারী। প্রায় ২ কোটি মানুষ যুক্ত হয়েছে দ্রুত গতির ৪জি সংযোগে।
কিন্তু একইসময়ে দেশজুড়ে মাত্র দুটি নতুন সেল টাওয়ার তৈরি করা হয়েছে। ফলে মোবাইল নেটওয়ার্কে কলড্রপ, কথা চলাকালীন হুট করে সংযোগ কেটে যাওয়া, ভয়েস কলের অস্পষ্টতাসহ নানা সমস্যায় পড়ছেন দেশের প্রায় সাড়ে ১৫ কোটি মোবাইল গ্রাহক। দিন দিন এসব সমস্যা আরও প্রকট হচ্ছে।
মোবাইল অপারেটরদের মতে, গ্রাহকদের মানসম্পন্ন সেবা দিতে নতুন করে কমপক্ষে তিন হাজার টাওয়ার স্থাপন করতে হবে। অথবা পুরোনো গুলো আপগ্রেড বা প্রতিস্থাপন করতে হবে। কিন্তু বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) নতুন টাওয়ার লাইসেন্স ব্যবস্থা চালু করার কারণে তারা এখন নিজেরা টাওয়ার স্থাপন করতে পারছেন না। কোম্পানিগুলো টাওয়ার স্থাপন করে তাদেরকে ভাড়া দেয়ার কথা থাকলেও তা হচ্ছে না।
এদিকে এক বছর আগে চারটি টাওয়ার কোম্পানিকে লাইসেন্স দিয়েছিল বিটিআরসি। লাইসেন্স পাওয়ার ছয় মাসের মধ্যে তাদের টাওয়ার তৈরির শুরু করার কথা ছিল। কিন্তু তারা কেউই এখন এ কাজ করছে না। সূত্রমতে, নতুন এই কোম্পানিগুলোর কেউই টাওয়ার স্থাপনে পুরোপুরি প্রস্তুত নয়।
সূত্রমতে, মোবাইল অপারেটর এবং টাওয়ার কোম্পানিগুলোর মধ্যে টাওয়ার ব্যবহার নিয়ে চুক্তি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সেই চুক্তি অনুমোদন করার সম্ভাবনা রয়েছে বিটিআরসির। কিন্তু, বিটিআরসি চুক্তি করে সেই কাজে হস্তক্ষেপ করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
টাওয়ার কোম্পানিগুলো জানিয়েছে, চুক্তি হওয়ার পর নতুন টাওয়ার স্থাপন করতে আরও অন্তত তিন মাস সময় লাগবে। অপরদিকে মোবাইল অপারেটররা বলছেন, তৃতীয় পক্ষকে রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দিয়ে নতুন টাওয়ার লাইসেন্স ব্যবস্থা প্রবর্তন না করা পর্যন্ত মোবাইল ফোন অপারেটরদের কিছু করার নেই। ফলে উভয় পক্ষের মধ্যে বিদ্যমান বাধা না দূর হওয়া পর্যন্ত এ চলমান ভোগান্তি কমার কেনো সুযোগ দেখছেন না খাত সংশ্লিষ্টরা।।
প্রসঙ্গত, টাওয়ার কোম্পানি হিসেবে লাইসেন্স পাওয়া চার প্রতিষ্ঠান হলো- ইডটকো বাংলাদেশ কোম্পানি লিমিডেট, সামিট পাওয়ার লিমিটেড, কীর্তনখোলা টাওয়ার বাংলাদেশ লিমিটেড ও এবি হাইটেক কনসোর্টিয়াম লিমিটেড। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মোবাইল অপারেটর ও লাইসেন্সপ্রাপ্ত টাওয়ার কোম্পানির দ্বন্দ্বের কারণে টাওয়ার কোম্পানিগুলো কাজ শুরু করতে পারেনি। বিশেষ করে টাওয়ারের দাম নির্ধারণ নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছে।