প্রথম মাল্টিমোডাল আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স প্ল্যাটফর্ম উদ্ভাবন করেছেন তিন তরুণ উদ্যমী উদ্ভাবক। প্লাটফর্মটির নাম ‘ক্রিটো’। এই এআই বটটটির এমন ইন্টেলিজেন্স আছে যার মাধ্যমে টেক্সট, আর্টিকেল, ব্লগ ছাড়াও কোডিং, ছবি, মিউজিক, ভিডিও, টেক্সট থেকে স্পিচ বা স্পিচ থেকে টেক্সট তৈরি করে দেয় স্বয়ংক্রিয় ভাবে। এখন গল্পের ছলে ক্রিটোকে নির্মাতারা মানুষের কাছে পৌঁছে দিচ্ছেন। ক্রিটো আধুনিক এক গ্রহের বাসিন্দা হলেও ঘুরতে এসে পৃথিবীতে হারিয়ে গেছে। সে এখন তার অত্যাধুনিক প্রযুক্তিজ্ঞান দিয়ে পৃথিবীর মানুষের সাহায্য করছে ক্রিটোর ওয়েবসাইটের মাধ্যমে।
২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর এটি উদ্ভাবনের কাজ শুরু করেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির কম্পিউটিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস (সিআইএস) বিভাগের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী আরিফুজ্জামান রায়হান ও তার দুই বন্ধু শাহরুখ জায়েদ ও পার্থ সাহা।
সাধারণত যেসব জেনারেটিভ এআই প্ল্যাটফর্ম একাধিক কাজ করে, অর্থাৎ ছবি, লেখা, মিউজিক, ভিডিও তৈরি করার সুবিধা দিয়ে থাকে, সেসব প্ল্যাটফর্ম মাল্টিমোডাল (এআই) প্ল্যাটফর্ম হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে। সারাবিশ্বে হাতেগোনা কয়েকটি মাল্টিমোডাল ওয়েব প্ল্যাটফর্ম রয়েছে বলে নির্মাতারা জানান।
নির্মাতাদের দাবি, তারা প্রায় দেড় বছর ক্রিটো ইন্টারফেস নিয়ে গবেষণা করেছেন। বর্তমানে এই প্রতিষ্ঠানে খন্ডকালীন ও পূর্নকালীন কাজ করছেন ১১ কর্মী।
ক্রিটোর আছে ২০টি আলাদা চ্যাটবট অ্যাভাটার; যারা বহুমুখী বিষয়ে সুদক্ষ ও পারদর্শী। তাদের নামও আছে আলাদা আলাদা। ফটোগ্রাফি থেকে পেশাগত পরামর্শ, মোটিভেশন থেকে রিসার্চ, এমনকি সাধারণ চিকিৎসক থেকে নিউরোসার্জন বিশেষজ্ঞ পর্যন্তএক্সপার্ট চ্যাটবট অ্যাভাটার আছে ক্রিটো আবহে। যে কেউ পড়ালেখা, রিসার্চের কাজে, কন্টেন্ট লেখা বা ভয়েস দেয়ার কাজে ক্রিটোকে ব্যবহার করতে পারবে।
ক্রিটোর আরেকটি চমকপ্রদ অংশ হচ্ছে ক্রায়োসিন্থ; যা ১৩০টি ভাষায় অবিকল মানুষের মতো করে কথা বলতে পারে। স্বয়ংক্রিয়ভাবে অডিও ফাইল শুনে আপনাআপনি লিখে দিতে পারে কী বলা হচ্ছে অডিওতে। সাবটাইটেল বানাতে এবং ইউটিউব ভিডিও বানাতে ক্রিটোর ‘ক্রায়োসিন্থ’ বেশ দক্ষ বলে দাবি করেছেন নির্মাতারা। উল্লিখিত এআই প্ল্যাটফর্মে ‘ক্রিজেন এআই ইমেজেস’ নামে ইমেজ জেনারেটর ফিচার থাকছে। যেখানে সহজ টেক্সট প্রম্পটের মাধ্যমেই চমকপ্রদ সব ছবি তৈরি করা সম্ভব নিমেষে। ক্রিজেনে অচিরেই ভিডিও জেনারেশনের ফিচারও চালু করা হবে বলে জানালেন উদ্যোক্তারা।
মূলত ‘এআই’ প্ল্যাটফর্মের চেয়ে শক্তিশালী ও বেশি ফিচারসমৃদ্ধ হলেও প্ল্য্যাটফর্মে ব্যবহারের খরচ একদমই কম। এমনকি নির্দিষ্ট সীমা পর্যন্ত যার ব্যবহার একদম ফ্রি। ইতোমধ্যে অভিনব আইডিয়া দিয়ে ক্রিটো ‘গ্লোবাল স্টুডেন্টস এন্টারপ্রেনিউরশিপ অ্যাওয়ার্ড’ প্রতিযোগিতার সেমিফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে। অন্যান্য এআই প্ল্যাটফর্মের চেয়ে শক্তিশালী ও বেশি ফিচার সমৃদ্ধ হলেও এই প্ল্যাটফর্মে ব্যবহারের খরচ একদমই কম। এমনকি একটি নির্দিষ্ট সীমা পর্যন্ত এর ব্যবহার একদম ফ্রি। অভিনব আইডিয়ার দিয়ে ইতোমধ্যে ‘গ্লোবাল স্টুডেন্টস অন্ট্রাপ্রিনিউরশিপ অ্যাওয়্যার্ড’ এর সেমিফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে ক্রিটো।
এ উদ্ভাবন সম্পর্কে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির কম্পিউটিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস (সিআইএস) বিভাগের প্রধান প্রফেসর ড. সারওয়ার হোসেন মোল্লা বলেন, প্রযুক্তির এই বিশ্বায়নের যুগে আজকে তথ্যপ্রযুক্তির মহাসড়কে যখন প্রতিনিয়ত বিভিন্ন প্রযুক্তির সমন্বয় ঘটছে, সারা পৃথিবী ব্যাপী যখন সরকার থেকে শুরু করে প্রান্তিক মানুষ সর্বশেষ প্রযুক্তির জগতে বিচরন করছে তখন এ ধরনের উদ্ভাবন নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবীদার। তাছাড়া বর্তমান সময়ে যখন আটিফিসিয়েল ইনটেলিজেন্স, তার সাথে ম্যাশিন লার্নিং যুক্ত হয়েছে, যুক্ত হয়েছে অগমেন্টেড রিয়েিেলটি ও ভার্চয়াল রিয়েলিটিসহ আমাদের যে ইন্ডাষ্ট্রির চতুর্থ শিল্প বিপ্ল্বের ব্যবহারে এই প্রযুক্তি গুরুত্বপূর্ন উদ্ভাবন হিসেবে ভূমিকা রাখবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
ক্যাপশনঃ বাংলাদেশের প্রথম মাল্টিমোডাল আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স প্ল্যাটফর্ম– ‘ক্রিটো’র উদ্যমী তরুণ উদ্ভাবক আরিফুজ্জামান রায়হান ও তার দুই বন্ধু শাহরুখ জায়েদ ও পার্থ সাহা।