টুইটারে কিচির মিচির যেনো থামছেই না। টালামাটাল অবস্থায় সর্বশেষ এই মাইক্রোব্লগটি ত্যাগ করেছেন ফরাসী প্রধান দামিয়ঁ ভেই। পদত্যাগের পর ফরাসী ভাষায় টুইটে ভেই লেখেন – “শেষ হয়ে গেল! গর্ব, সম্মান এবং সফল মিশন। বিদায় টুইটার ফ্রান্স। কী এক অ্যাডভেঞ্চার, কী টিম, কী সব চ্যালেঞ্জ! চমৎকার, রুদ্ধশ্বাস সাত বছরের জন্য সবাইকে ধন্যবাদ।”
টুইটের শেষে তিনি ওয়ার্ক হার্ড প্লে হার্ড, ও ক্যাপ্টেন মাই ক্যাপ্টেন এবং লাভ হোয়্যার ইউ ওয়ার্কড শীর্ষক তিনটি হ্যাশট্যাগ জুড়ে দেন।
আর ওদিকে বিপত্তির মুখে ক্যাপ্টেন ইলন মাস্ক একের পর এক বিতর্কিত সিদ্ধান্তের পর এবার প্রতিষ্ঠানটিতে কর্মী নিয়োগের ঘোষণা দিয়েছেন। একই সঙ্গে সান ফ্রান্সিসকো থেকে টুইটারের কার্যালয় টেক্সাসে সরিয়ে নেয়ার কোনো পরিকল্পনা এই মুহূর্তে নেই বলেও জানান তিনি।
কর্মীদের সঙ্গে সোমবার এক বৈঠকে মাস্কের এই ঘোষণা দেয়ার খবর দিয়েছে ইন্ডিয়া টুডে। একইদিনে টুইটারে ‘ব্লু টিক’ সেবা আবার চালুর পরিকল্পনা সাময়িক স্থগিত করার খবর দিয়েছে একই দেশের গণমাধ্যম এনডিটিভি। এক টুইটার পোস্টে মাস্ক বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমটিতে ছদ্মবেশী বা ভুয়া অ্যাকাউন্ট বন্ধ করা পর্যন্ত ‘ব্লু টিক’ সেবা সচল করা হবে না।
এদিকে বিদায়কালীন পরিস্থিতি নিয়ে টুইটারের ফরাসী প্রধান দামিয়ঁ ভেই কোনো মন্তব্য করেননি। ইলন মাস্ক দায়িত্ব নেওয়ার আগে বা পরে ফ্রান্স টুইটারের কর্মী সংখ্যা নিয়েও তিনি কোনো তথ্য জানাতে রাজী হননি। আলাদা এক মেইলে ভেই পদত্যাগের কথা নিশ্চিত করেছেন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে রয়টার্স।
নানা ঘটনার পর গত ২৭ অক্টোবর টুইটার কেনেন ইলন মাস্ক। প্রথমেই এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পরাগ আগারওয়াল, প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা নেড সেগাল এবং আইন ও নীতিবিষয়ক প্রধান বিজয়া গাড্ডেকে চাকরিচ্যুত করেন তিনি। এক বার্তায় টুইটার দেউলিয়া হয়ে যেতে পারে বলে ব্যয় সঙ্কচন মিশনে নামেন। একে একে তিনি সব মিলিয়ে সাড়ে ৭ হাজার কর্মীর দুই-তৃতীয়াংশই ছাঁটাই করেছেন।
কর্মীদের জন্য বিনা মূল্যে খাবারের যে ব্যবস্থা ছিল, তা বন্ধ করে দিয়েছেন ইলন। এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে তাকে। ৪ হাজার ৪০০ কোটি ডলারে টুইটার কেনার সঙ্গে সঙ্গে কর্মী ছাঁটাইসহ নানা পদক্ষেপের ধারাবাহিকতায় সমালিচিত মাস্ক এবার অভিযুক্ত হয়েছেন লিঙ্গ বৈষম্যের।
কানাডার ব্লগার লরেন চেন এই অভিযোগে সরব হয়ে টুইটারেই একটি পোস্ট করেছেন। সেখানে তিনি ইলন দায়িত্ব নেওয়ার আগে ও পরের টুইটার দফতরের দু’টি ছবি পোস্ট করেছেন। ক্যাপশনে লিখেছেন, ‘‘টুইটার, ইলন মাস্কের আগে ও পরে।’’
লরেন দু’টি ছবি সমাজমাধ্যমে পোস্ট করে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন, ইলন দায়িত্ব নেওয়ার আগের তুলনায় পরে টুইটারে মহিলা কর্মীর সংখ্যা কমেছে। রবিবার তিনি ওই ছবি পোস্ট করেন। লরেনের পোস্ট করা দ্বিতীয় ছবিতে দেখা গিয়েছে, টুইটারে মহিলাকর্মীর সংখ্যা অনেকটাই কম।