ই-বর্জ্য কমিয়ে সুস্থ পরিবেশ নিশ্চিত করার পাশাপাশি পণ্য বিক্রি করার সময় গ্রাহকদের সুবিধা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে দেশের প্রথম রি-কমার্স প্ল্যাটফর্ম সোয়াপ। নিম্ন-আয়ের পরিবারকে পণ্য ক্রয়, বিক্রয় এবং বদলের সুযোগ দেয় প্ল্যাটফর্মটি। উদ্ভাবনী এই উদ্যোগে প্রি-সিরিজ-এ রাউন্ডে ৫ কোটি টাকা বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে আইসিটি বিভাগের ফ্ল্যাগশিপ ভেঞ্চার ক্যাপিটাল কোম্পানি স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেড। আর এর মাধ্যমে স্টার্টআপ বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত ৫০ কোটি টাকার বেশি ১৬টি কোম্পানিতে বিনিয়োগ করলো প্রতিষ্ঠানটি।
বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন স্টার্টআপ বাংলাদেশের গণমাধ্যম মুখপাত্র নাফিস আলম। তিনি জানান, সম্প্রতি প্রতিষ্ঠান দুটির মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামের উপস্থিতিতে এই চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়।
স্টার্টআপ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম, ব্যবস্থাপনা পরিচালক সামি আহমেদ, হেড অব পোর্টফোলিও ইনভেস্টমেন্ট হাসান এ. আরিফ, সোয়াপের সিইও পারভেজ হোসেন, সিওও তন্ময় সাহা এবং অন্যান্য স্টেকহোল্ডাররা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে আইসিটি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, “বাংলাদেশ স্টার্টআপ এবং উদ্ভাবনের জন্য একটি উর্বর ভূমিতে পরিণত হয়েছে । সরকার উদ্ভাবন এবং প্রযুক্তিতে দৃঢ় বিশ্বাসী, এবং আমরা বিশ্বাস করি যে স্টার্টআপগুলো সমাজ ও রাষ্ট্রের উন্নয়নে গুরুতবপূর্ণ ভুমিকা রাখতে পারবে। এই উদ্ভাবনী স্টার্টআপগুলোকে সমর্থন করার জন্য সরকার স্টার্টআপ বাংলাদেশ ভেঞ্চার ক্যাপিটাল কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেছে। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার জন্য প্রযুক্তি স্টার্টআপে বিনিয়োগের মাধ্যমে স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমকে সমর্থন করার ক্ষেত্রে স্টার্টআপ বাংলাদেশের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমি আশা করি এই বিনিয়োগের মাধ্যমে সোয়াপ এই ইন্ডাস্ট্রিতে উল্লেখযোগ্য ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।”
স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেড চেয়ারম্যান ও আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম বলেছেন, “রি-কমার্স ইন্ডাস্ট্রিতে সোয়াপ যে কাজ করছে তা অত্যন্ত প্রশংসনীয় এবং সোয়াপে স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেডের বিনিয়োগ, এটিকে ইন্ডাস্ট্রিতে শীর্ষস্থানীয় হতে সাহায্য করবে। আমি আশা করি তারা স্টার্টআপ হিসেবে স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নে গভীর প্রভাব ফেলতে সক্ষম হবে। আইসিটি বিভাগ উদীয়মান এবং দ্রুতবর্ধমান স্টার্টআপগুলোকে নীতিগত, প্রশিক্ষণ, মেন্টরিং ইত্যাদি ক্ষেত্রে সহায়তা করছে ।”
স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সামি আহমেদ বলেন, “স্টার্টআপ বাংলাদেশের লক্ষ্য হল দেশীয় স্টার্টআপদের বৃদ্ধি এবং এমন উচ্চতায় পৌঁছাতে সহায়তা করা যা আরও বেশি বিদেশী বিনিয়োগ আকর্ষণ করে।স্থানীয় স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম SWAP-এর মতো সম্ভাব্য উদ্যোগগুলির দ্বারা ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হয়,সঠিক কৌশল প্রয়োগ এবং ফোকাস ঠিক রেখে কাজ করতে পারলে আমাদের স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমে SWAP সফল স্টার্টআপ হিসাবে উল্লেখযোগ্য উদাহরণ তৈরি করতে সক্ষম হবে”।
সোয়াপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবং সহ-প্রতিষ্ঠাতা পারভেজ হোসেন বলেন, “আমরা বিশ্বাস করি যে সোয়াপ এমন একটি সমাধান প্রদান করে যা বাংলাদেশের বাজারে ব্যাপকভাবে প্রয়োজন। ব্যবহৃত পণ্যের জন্য একটি ইকোসিস্টেম তৈরি করে, আমরা আমাদের দেশের নিম্ন এবং মধ্যম আয়ের পরিবারগুলোকে সাশ্রয়ী মূল্যে প্রযুক্তিতে অনুপ্রবেশের ব্যবস্থা করছি এবং সার্কুলার ইকোনমিকে উৎসাহিত করছি৷ ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস এবং হালকা যানবাহনের পুনঃব্যবহার ও জীবনকাল বৃদ্ধি করে, আমরা আমাদের ডলার রিজার্ভের উপর চাপ কমিয়ে এই জাতীয় পণ্য আমদানির চাপ কমাতে পারি।” ।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালে শুরু হওয়ার পর থেকে, সোয়াপ ৪৩ লাখ মার্কিন ডলারের এর বেশি জিএমভি (গ্রস মার্চেন্ডাইজ ভ্যালু) অর্জন করেছে। বর্তমানে মাসে ২.৫ লাখ মার্কিন ডলারের বেশি পণ্য বেচাকেনা হয় এই প্লাটফর্মে। সোয়াপ আজ পর্যন্ত ৮০,০০০ এরও বেশি গ্রাহকদের সেবা দিয়েছে এবং কার্বন ফুটপ্রিন্ট কমানোর অঙ্গীকারের অংশ হিসাবে ৩৬৫০ মেট্রিক টন কার্বন নিঃসরণ কমাতে সাহায্য করেছে এবং ৩৮৬ মেট্রিক টন ই-বর্জ্য কমিয়েছে ।
অপরদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নির্দেশনায় ২০২০ সালের মার্চে ৫০০ কোটি টাকার বরাদ্দ তহবিল গঠিত হয় আইসিটি বিভাগের ফ্ল্যাগশিপ ভেঞ্চার ক্যাপিটাল কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড।