আইসিটি বিভাগের ফ্ল্যাগশিপ ভেঞ্চার ক্যাপিটাল কোম্পানি স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেড, হিসাব টেকনোলজিস লিমিটেড-এ বিনিয়োগ করেছে। ‘হিসাব’-এর যুগান্তকারী উদ্ভাবন তার অ্যাপ ব্যবহারকারীদের ইন্টারনেট সংযোগ, স্মার্টফোন অ্যাপ্লিকেশন এবং ডিজিটাল স্বাক্ষরতার প্রয়োজনীয়তা দূর করে যেকোনো ফোন থেকে সহজ ভয়েস কমান্ডের মাধ্যমে অনায়াসে প্রযুক্তি ব্যবহার করতে সহায়তা করে।
২ কোটি টাকা বিনিয়োগের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠানদ্বয়ের মধ্যে সম্প্রতি একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে স্টার্টআপ বাংলাদেশের বোর্ড অব ডিরেক্টরস-এর চেয়ারম্যান ও আইসিটি বিভাগের সচিব মোঃ সামসুল আরেফিন, স্টার্টআপ বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সামি আহমেদসহ ‘হিসাব’-এর পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান জুবায়ের আহমেদ, সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর মোহাম্মদ ফায়াদান হোসাইন এবং সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও হেড অব আইআর মিও আহমেদ।
‘হিসাব’ ভারত, ইন্দোনেশিয়া, নাইজেরিয়া এবং ARIPO অঞ্চলসহ ২৩টি দেশে ৩০ টিরও বেশি পেটেন্টসহ জেনারেটিভ AI এবং টেলিফোনি আর্টিফিসিয়াল নিউরাল নেটওয়ার্ক দ্বারা পরিচালিত কথোপকথনমূলক AI ব্যবহার করে তাদের ব্যবসা সম্প্রসারণ করেছে। ‘হিসাব’ শীঘ্রই ক্ষুদ্রঋণ শিল্পে ৮ মিলিয়ন ব্যবহারকারীকে তাদের কাঙ্খিত আর্থিক সেবাসমূহ স্বয়ংক্রিয় করার লক্ষ্যে ‘হিসাব’-এর কথোপকথনমূলক AI ব্যবহার করতে সহায়তা করবে। হিসাব “HiPay” চালু করার জন্য শীর্ষস্থানীয় ব্যাংক ও ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানসমূহের সাথে অংশীদারিত্ব করছে যা ব্যবহারকারীদের টেলিফোন কথোপকথনের মাধ্যমে অর্থ পাঠাতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। ‘হিসাব’-এর কল সেন্টার সলিউশন বর্তমানে সরকারী হেল্পলাইন “333” এর সাথে পাইলটিং করা হচ্ছে, গত ১৮ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এটি উদ্বোধন করেন। উল্লেখ্য, হিসাব জাপানে, বৃহত্তম ইলেক্ট্রিক কোম্পানি TEPCO ও ভারতের স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার সাথে কাজ করছে। ‘হিসাব’ বাংলাদেশের SME-গুলিকে স্বয়ংক্রিয় করার জন্য একটি স্থানীয় FMCG কোম্পানির সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে।
এ উপলক্ষ্যে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, উদ্ভাবনে ‘হিসাব’-এর দক্ষতা বাংলাদেশ এবং অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশগুলোতে উন্নয়নের ক্ষেত্রে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব রাখছে এবং এসকল দেশে এটি মেধা সম্পত্তির মালিক। এটি বাংলাদেশের জন্য একটি গৌরবের বিষয় যে, বিশ্বে নেতৃত্বদানকারী টেকনোলজির অন্যতম এ টেলিফোনি আর্টিফিসিয়াল নিউরাল নেটওয়ার্ক বাংলাদেশ থেকে উদ্ভূত। কোম্পানিটি ডিজিটাল স্বাক্ষরতার মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা সমাধানের জন্য কাজ করেছে। ব্যবহারকারীবান্ধব সমাধান প্রদানের মাধ্যমে ‘হিসাব’ অর্থনৈতিক অবস্থা নির্বিশেষে সকল নাগরিককে সেবা প্রদানে বদ্ধপরিকর। আমি নিশ্চিত যে, ‘হিসাব’ স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে এবং বিশ্ব প্রযুক্তি বাজারে একটি স্থায়ী ভূমিকা রাখবে- বলে মাননীয় প্রতিমন্ত্রী মন্তব্য করেন।
স্টার্টআপ বাংলাদেশের বোর্ড অব ডিরেক্টরস-এর চেয়ারম্যান ও আইসিটি বিভাগের সচিব জনাব মোঃ সামসুল আরেফিন বলেন, ‘হিসাব’-এর সেবা ব্যবহার করতে কোন স্মার্টফোন, ইন্টারনেট সংযোগ, বা মোবাইল অ্যাপ ডাউনলোডের এবং ডিজিটাল সাক্ষরতার প্রয়োজন হয় না, এটি নাগরিকদের জন্য তথ্য এবং সেবাসমূহ অ্যাক্সেসের বিপ্লব ঘটাতে প্রস্তুত। ‘হিসাব’-এর কার্যক্রম প্রসারিত হওয়ার সাথে সাথে এটি বিভিন্ন ধরণের তথ্য অ্যাক্সেস করার একটি প্রাথমিক মাধ্যম হবে। এই সমাধানটি ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’-এর ‘স্মার্ট সিটিজেন’ এবং ‘স্মার্ট সোসাইটি’ প্রস্তুতে এবং ‘স্মার্ট ইকোনমি’র দিকে দেশের অগ্রগতিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে।”
‘হিসাব’ স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে ভবিষ্যতে বৃহৎ পরিসরে সেবা দেবে বলে আশা করছে স্টার্টআপ বাংলাদেশ। ‘হিসাব’-এর মতো কোম্পানিগুলি বাংলাদেশের স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমকে সমৃদ্ধ করছে এবং বিশ্ব বিনিয়োগকারী সম্প্রদায়ের মাঝে একটি ইতিবাচক প্রভাব তৈরি করবে। – বলে মন্তব্য করেন স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব সামি আহমেদ।
হিসাব টেকনোলজিস লিমিটেডের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ ফায়াদান হোসেন বলেন, স্টার্টআপ বাংলাদেশকে আমাদের বিনিয়োগকারী হিসেবে পাওয়া আনন্দের বিষয়। আমরা বিশ্বাস করি যে SBL ‘হিসাব’-এর জন্য একটি অত্যন্ত মূল্যবান বিনিয়োগ অংশীদার হবে।
স্টার্টআপ বাংলাদেশ দেশে একটি টেকসই স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। সেই সুত্র ধরে, স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেড বাংলাদেশের সবচেয়ে সম্ভাবনাময় স্টার্টআপগুলোতে বিনিয়োগ করছে এবং ‘হিসাব’-এ বিনিয়োগ করে সেই ঐতিহ্যকে অব্যাহত রেখেছে।