বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ৭৭ লাখ বেকার তরুণ-তরুণী রয়েছে। পরারাষ্ট্রনীতি তাদেরকে ই-স্পোর্টস এর মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সার করে তুলতে ৭৭টি উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশের ক্রমপ্রসারমাণ এই প্রযুক্তির মাঠে-ময়াদানে প্রতিষ্ঠিত করতে চায় এমএলটি ফাউন্ডেশন। এজন্য ২০২৪ সালের মাঝামাঝি সময় থেকে বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে থাকা স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা ও বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে তারা। তাদের আর্থিক ও স্বীকৃতি দিয়ে বাংলাদেশের উন্নয়নে তাদের ভূমিকা রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সংগঠনের সিওও অনিকা মৃধা।
তিনি বলেছেন, ই-স্পোর্টস একটি ইলেকট্রনিক খেলাধুলার মাধ্যম, যেখানে অন্যান্য খেলার মতই পেশাদার খেলোয়াড়রা ভার্চ্যুয়াল প্ল্যাটফর্মে কোনও খেলা খেলে অংশ নিয়ে প্রতিযোগিতায় যেতে পারেন। এছাড়া এটি বিভিন্ন ইলেকট্রনিক খেলার মধ্যে স্পোর্টস জুড়ে থাকতে পারে, যেমন ই-স্পোর্টস ট্রেনিং, প্রতিযোগিতা এবং দর্শনীয় ইভেন্ট। এটি অনলাইনে তথা কম্পিউটার বা মোবাইল গেমসে ব্যাপকভাবে প্রয়োজনীয় হতে পারে।
‘গত ৪ বছরে বাংলাদেশে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক ভাবে সর্বমোট ৩৮ টি ই-স্পোর্টস কেন্দ্রিক অনুষ্ঠান হয়েছে। এছাড়া সোশ্যাল মিডিয়ার কল্যাণে কোভিড ১৯ এর সময় বাংলাদেশীয় স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম উন্নত হয়েছে। নাম করা ৪০ জন স্ট্রীমারের বার্ষিক আয় ছিলো (আনুমানিক) ১২ কোটি টাকা’- যোগ করেন তিনি।
শুক্রবার সকালে রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে আয়োজিত এমএলটি ও বাংলাদেশের ই-স্পোর্টসের ভবিষ্যত শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে সংবাদ সম্মেলনে এমনটাই জানানো হয়েছে।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন আয়োজক সংগঠনের সভাপতি অজয় দেবনাথ, সাধারন সম্পাদক আবির বিন সাফি, সহ সভাপতি এটিএম মুশফিক মাহমুদ, কোষাধ্যক্ষ মো: সাদ্দাম হোসেন অনিক ও নির্বাহী সদস্য সৈয়দ এহরাজ আলি।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বর্তমানে বাংলাদেশে শুধুমাত্র ক্রিকেট এবং ফুটবলকে প্রাধান্য দেওয়া হয়, কিন্তু এই দেশে প্রায় ১৮ কোটি মানুষের মধ্যে প্রায় ৫ কোটি তরুণ। তাই এমএলটি স্পোর্টস-এর মাধ্যমে বক্সিং, সাইক্লিং, বাস্কেটবল, শুটিং ও অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের আওতাধীন যে খেলাসমূহ আছে, সেই খেলায় অন্তত ৫ জন খেলোয়াড় বা অন্তত ১টি দল এমএলটি স্পোর্টস এর অন্তর্গত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে এমএলটি ফাউন্ডেশন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জানানো হয়, গত ৪ বছরে বাংলাদেশে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক ভাবে সর্বমোট ৩৮ টি ই-স্পোর্টস কেন্দ্রিক অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়েছে। এছাড়া সোশ্যাল মিডিয়ার কল্যাণে কোভিড-১৯ এর সময় বাংলাদেশীয় স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম উন্নত হয়েছে। নাম করা ৪০ জন স্ট্রীমারের বার্ষিক আয় ছিলো (আনুমানিক) ১২ কোটি টাকা। প্রশাসনিক, প্রতিষ্ঠানিক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ইস্পোর্টসের ব্যাপারে ধারণা একেবারেই নাজুক। তারপরও বাংলাদেশে যেভাবে ই-স্পোর্টস এগিয়ে যাচ্ছে, তাতে পরিসংখ্যান বলছে বাংলাদেশে আরও প্রসারণ সহজেই ঘটানো সম্ভব, যেটি ভবিষ্যতে বাংলাদেশের উন্নতির দিকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করতে পারে। গেমার সংখ্যা এবং অবসরের সময়ে ই-স্পোর্টস প্রচুর জনপ্রিয় হতে পারে। বেশি গেমার স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে প্রতিযোগিতা করতে পারে। ই-স্পোর্টস বিশেষজ্ঞ টুর্নামেন্ট এবং ইভেন্টের প্রচারে বৃদ্ধি পেতে পারে, যা বাংলাদেশের ক্রীড়া প্রশাসন ও নৈতিক সমর্থনের মাধ্যমে সম্ভব।
এতে আরো বলা হয়, ২০১৯ সাল থেকে বাংলাদেশে ই-স্পোর্টসের অবস্থার উন্নতি হয়েছে। তবে এটি এখনও প্রাথমিক অবস্থায় রয়েছে। আধুনিক প্রতিযোগিতার মধ্যে মোবাইল গেমিং এবং ক্রিকেটের মধ্যে ই-স্পোর্টসের প্রতিষ্ঠান স্থান পেয়েছে, যা একে অপরের সাথে সামঞ্জস্যিকভাবে বেশি প্রচলিত। বিভিন্ন ই-স্পোর্টস টুর্নামেন্ট এবং লিগে বাংলাদেশি দলগুলো অংশগ্রহণ করে থাকে। বর্তমানে ই-স্পোর্টস ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে সরাসরি ও পারিপার্শ্বিকভাবে ২৫ টি অন্যান্য ইন্ডাস্ট্রি জড়িত আছে, যা ভবিষ্যতে আরো বাড়ার সম্ভাবনা আছে। বর্তমানে ১৮ টি দেশে ই-স্পোর্টস সরকারি মন্ত্রণালয় ও ফেডারেশনের আওতাধীন আছে।
দেশকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরা, বেকারত্ব দূরীকরণ, সংগীত, ইলেক্ট্রনিক্স, বিদেশি বিনিয়োগ, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন ই-স্পোর্টস প্রতিষ্ঠান এবং টিম প্রচুর উন্নতি পেতে পারে, যেটি বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের জন্য ক্যারিয়ার সৃষ্টির দিকে নতুন সুযোগ তৈরি করতে সাহায্য করতে পারে।