এসএমপি হওয়ার পরও মানসম্মত সেবা (কোয়ালিটি অব সার্ভিস) দিতে ব্যর্থ দেশের শীর্ষ মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণফোন। সাধারণ নাগরিক থেকে শুরু করে খোদ প্রধানমন্ত্রীও অপারেটরটির সেবার মান নিয়ে ক্ষুব্ধ। দফায় দফায় মান উন্নীতের নির্দেশনা দেয়ার পরও তা প্রতিপালন না করায় অপারেটরটির সিম বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি।
মান উন্নীত করেই অপারেটরটি এই গ্রামীণফোন নতুন সিম বিক্রি করার অনুমোদন পেতে পারে বলে জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
ডিজিবাংলা-কে তিনি বলেন, ‘আমরা অনেক চেষ্টা করেও গ্রামীণফোনের সেবার মান ভালো করার কোনও উদ্যোগ নিতে দেখিনি। তারা গ্রাহক বাড়াবে, কিন্তু সেবার মান বাড়াবে না, এটা হতে দেওয়া যাবে না। যতদিন না তারা সেবার মান ভালো করবে এবং তা সন্তোষজনক পর্যায়ে উন্নীত না হবে ততদিন গ্রামীণফোনের সিম বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা থাকবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘গ্রামীণফোনের কোয়ালিটি অব সার্ভিস অনেক দিন আগে থেকেই ডিটিরয়েড করেছে। খোদ প্রধানমন্ত্রীও অসন্তুষ্ট। তিনি গ্রামীণফোনে কথা বলতে পারেন না। সার্ভিস ইম্প্রুভের বদলে প্রতিদিনই তাদের সার্ভিস খারাপ হচ্ছে। তারা গ্রাহক বাড়াবে আর এতো মানুষকে কষ্ট দেবে তা কখনোই হতে পারে না ’
ফলে বুধবার (২৯ জুন) দুপুরে গ্রামীণফোনের সিম বিক্রি বন্ধের নির্দেশনাটি অনুমোদনের পরে বিটিআরসি সেটি গ্রামীণফোনে পাঠিয়েছে। সেখানে অপারেটরটি গ্রাহকদের কোয়ালিটি অব সার্ভিস নিশ্চিত করতে না পারা পর্যন্ত নতুন সিম বিক্রিতে লাগাম টানা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিটিআরসির ভাইস চেয়ারম্যান সুব্রত রায় মৈত্র জানিয়েছেন, গ্রামীণফোন মানসম্মত সেবা (ভয়েস কল ও ইন্টারনেট) দিতে পারছে না। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত অপারেটরটির (গ্রামীণফোন) সিম বিক্রি করতে পারবে না।
বিটিআরসি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে গত মে পর্যন্ত গ্রামীণফোনের গ্রাহক সংখ্যা ৮ কোটি ৪৯ লাখ ৫০ হাজার।
প্রসঙ্গত, গত ৩১ মার্চ অনুষ্ঠিত সর্বশেষ নিলামে সবচেয়ে বেশি তরঙ্গ (৬০ মেগাহার্টজ) কেনে গ্রামীণফোন। এর আগে গ্রামীণফোনের হাতে ছিল ৪৭ দশমিক ৪০ মেগাহার্টজ তরঙ্গ। সব মিলিয়ে অপারেটরটির তরঙ্গের পরিমাণ ১০৭ দশমিক ৪০ মেগাহার্টজ। যদিও বাকি অপারেটরদের মতো গ্রামীণফোনও নতুন বরাদ্দ পাওয়া তরঙ্গ ব্যবহার করতে পারছে না। আগামী ডিসেম্বর থেকে অপারেটরগুলো তরঙ্গ ব্যবহার করতে পারবে বলে জানা গেছে।
জানা যায়, বর্তমানে এক মেগাহার্টজ তরঙ্গে গ্রামীণফোন ১৪ লাখ লাখ গ্রাহককে সেবা দিচ্ছে, অন্যান্য অপারেটরের চেয়েও যা বেশি। নতুন তরঙ্গ যুক্ত হলে তা হবে (এক মেগাহার্টজে) ৭ লাখ ৭০ হাজার গ্রাহক।