অঞ্জন চন্দ্র দেব (স্টাফ রিপোর্টার):
যেকোনো সময় দেশে চালু হবে পঞ্চম প্রজন্মের ইন্টারনেট সেবা ফাইভজি। মোবাইল অপারেটর টেলিটকের মাধ্যমে চালু হবে এই সেবা। অবশ্য বেসরকারি মোবাইল অপারেটরগুলো এখনো সেবা চালুতে প্রস্তুত নয়। তবে এই সেবা দিতে মুখিয়ে আছে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবাদাতারা। এজন্য নীতিমালায় সুযোগের অপেক্ষা করছেন তারা।
ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো জানিয়েছে, সরকার ফাইভজি নিয়ে চিন্তাভাবনা করলেও এখন পর্যন্ত তারা ফাইভজির পলিসিগত কোনো ধারণা পাননি। ফলে এই বিষয়ে পরিকল্পনা করাও দূরহ ব্যাপার।
আইএসপিএবি এর সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক ডিজিবাংলাকে বলেন, ব্রন্ডব্যান্ড ইন্টারনেট সার্ভিস আমরা যারা দেই তারা ফাইভজি জন্য পলিসিগত কোন ধরনের পরিবর্তন সরকারের কাছ থেকে আমরা পাইনি। যখন পর্যন্ত আমরা ফাইভজি নিয়ে পলিসিগত কোন ধরনের পরিবর্তন না পাবো ততখন পর্যন্ত ফাইভজি নিয়ে পরিকল্পনা করাটাও আমাদের জন্য দূরহ ব্যাপার। তবে আমাদের পক্ষ থেকে বিটিআরসির কাছে একটা চাওয়া ছিল ফাইভজি যখন দেয়া হবে আমরা যারা ব্রন্ডব্যান্ড ইন্টারনেট সার্ভিস দেয় তাদেরকে যেন গুরুত্ব দেয়া হয়।
ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন ‘আইএসপিএবি’র এই নেতা আরও জানিয়েছেন, ফাইভজির বিষয়ে ইতোমধ্যে সরকারের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে তাদের। তার দাবি, ফাইভজি পলিসিতে ব্রডব্যান্ড অপারেটরদের প্রাধান্য দিলে জনগণ উপকৃত হবে।
এদিকে প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের দেয়া তথ্যানুযায়ী, ফাইভজিতে ক্লাউড প্রযুক্তির বিকল্প নেই। ফলে ফাইভজি চালুর সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় ক্লাউড সিস্টেমে গুরুত্ব দিতে হবে। তাহলে দেশের তথ্য থাকবে দেশেই। এমনটাই বলেন, ডাটাসফট সিস্টেম বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহবুব জামান। তিনি বলেন, এটার সাথে যদি আমাদের লোকাল ক্লাউড তৈরি করতে হয় টপ ক্যাপাসিটি আমাদের লাগবে। এবং আমার মনে হয় যে ব্রন্ডব্যান্ড সার্ভিস দেয় যে আইএসপিগুলো তারা যদি এখন লোকাল ক্লাউডের সুবিধাগুলো দেয় আমাদের কিন্ত এখন আমরা যেটাই করছি সব তথ্য চলে যাচ্ছে বাহিরের দেশে ইন্ডিয়া, জাপান, চীনের মত দেশে। তাই আমাদের লোকাল ক্লাউডে জোর দেয়া দরকার। লোকাল ক্লাউডে জোর দিতে হলে আমাদের বড় ধরনের কমিউনিকেশন লাগবে এবং সেটার জন্য আমাদের যে ব্রন্ডব্যান্ডের যে আইএসপির সার্ভিস যারা দেয় তারা ইন্ড্রাস্টির সাথে মিলে আমাদের ইন্ড্রাস্টির প্রয়োজনীয়তা অনুযারি যদি আমরা সময়মত সাপোর্টটা আনতে পারি আমাদের ইন্ড্রাস্টির চেহারাটাই অন্য রকম হয়ে যাবে। এবং আমরা উদ্ভাবনের পণ্য এবং সার্ভিস নিয়ে হাজির হতে পারবো। শুধু বাংলাদেশ না ইউরোপ- আমেরিকাতেও সার্ভিস দিতে পারবো।
ফাইভজি যেমন আধুনিক জীবন যাত্রাকে আরও সহজতর করে তুলবে তেমনি শিল্প-কারখানার অগ্রগতিতে রাখবে জোড়ালো ভূমিকা। ফলে ইন্ড্রাস্টিতে ব্যবহারের জন্য ফাইভজি ব্যবহারে ব্রডব্যান্ডকেই দায়িত্ব নেওয়ার কথা জানিয়েছেন মাহবুব জামান।
‘‘ইন্ড্রাস্টির ব্যবহারের জন্য ব্রন্ডব্যান্ডে ফাইভজি এইটা আসলে ইন্ড্রাস্টিকে দায়িত্ব নিতে হবে। ইন্ড্রাস্টি এখনো কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান আইওটি, ব্লকচেইন, ভিআর,রোবটিক্স, অটোমেশন এগুলো করছে। কিন্ত খুবই কম। তবে আশার কথা হলো প্রধান প্রতিষ্ঠানগুলো খুব দ্রুত এ ধরনের প্রযুক্তি গ্রহণ করার জন্য প্রস্তুত এবং কেউ কেউ গ্রহণ করেছে। সেটা একটা ভালো উদ্যোগ। বিটিআরসির সাথে ইন্ড্রাস্টির খুব গভীরভাবে কাজ করতে হবে। টেলিটম যেমন তার গ্রাহকের জন্য কাজ করছে সে রকম ইন্ড্রাস্টি তার প্রয়োজনে এটাকে যাতে নিশ্চিত করা যায় সেটার জন্য চেস্টা করতে হবে। সে ম্যাসেটায় দেয়া ভালো আমার মনে হয় আমরা প্রস্তুত আছি সেটা বলা ঠিক হবে না। কারণ প্রস্তুত নাই আসলে। আমাদের খুব আশা থাকতে পারে’’।