ডিজিটাল বিপননের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক ক্রেডিট ও প্রি-পেইড কার্ডের সুবিধা সীমিতকরণ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকে ৩ দফা প্রস্তাব করেছে বেসিস। প্রস্তাবগুলো বিবেচনায় নিয়ে উদ্ভূত সমস্যা সমাধানে আগামী সপ্তাহে সকল ব্যাংকের সঙ্গে বৈঠক করার কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আহমেদ জামাল।
প্রসঙ্গত, গত ১৩ নভেম্বর ফেসবুক, গুগল ও ইউটিউবে অনলাইন পেমেন্ট ব্লকেজ! শিরোনামে এ বিষয়ে একটি বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করে ডিজিবাংলা। বিষয়টি নিয়ে ওই দিন রাতেই বিশেষ সভা করে ই-কমার্স ব্যবসায়ীদের সংগঠন ই-ক্যাব। সূত্রমতে, সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে বৈঠকে বসতে যাচ্ছে সংগঠনটির শীর্ষ নেতারা।
এ বিষয়ে ই-ক্যাব সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মাদ আব্দুল ওয়াহেদ তমাল বলেন, ডিজিটাল বিপননের মূল্য পরিশোধে আরোপিত ব্লকেজ তুলে নেয়া না হলে ছোটো উদ্যোক্তারা “হুন্ডি”র মতো অবৈধ প্রক্রিয়া ও বিভিন্ন অসদুপায় অবলম্বন করে আর্থিক লেনদেন পরিচালনায় বাধ্য হতে পারেন। এটা ই-কমার্স খাতের জন্য অশনি সঙ্কেত।
তিনি বলেন, এই ব্লকেজ প্রত্যাহার করা না হলে স্থানীয় উদ্যোক্তারা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে ক্রস বর্ডার ই-বাণিজ্য। একদিকে ই-কমার্সের মাধ্যমে আমদানি-রপ্তানি কমবে, অপরদিকে পণ্য মূল্য বেড়ে যাবে।
এদিকে রোববার (১৮ নভেম্বর) একই বিষয়ে লাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আহমেদ জামালের সাথে সাক্ষাত করেছেন বেসিস সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর। এসময় তার সঙ্গে বেসিস সহ-সভাপতি (প্রশাসন) শোয়েব আহমেদ মাসুদ এবং বেসিস ডিজিটাল কর্মাস স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান সৈয়দ কামাল।
এ বিষয়ে বেসিস সভাপতি আলমাস কবির বলেন, ২০১৬ সালে বাংলাদেশ ব্যাংক এক সার্কুলার জারি করে আন্তর্জাতিক ক্রেডিট ও প্রি-পেইড কার্ড দ্বারা দেশের নাগরিকদের আন্তর্জাতিক বাজার থেকে ঘরে বসে পণ্য কেনার সুবিধা বৃদ্ধির উদ্যোগ নেয়, যা দেশের ডিজিটাল শিল্প সম্প্রসারণে কার্যকরী ভূমিকা রেখে চলেছে। তবে সাম্প্রতিককালে বেশ কিছু ব্যাংক আন্তর্জাতিক ক্রেডিট ও প্রি-পেইড কার্ডের সুবিধা সীমিতকরণ প্রক্রিয়া শুরু করেছে, যার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ডিজিটাল মার্কেটিং এর সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানসমূহ। এমন পরিস্থিতিতে হুন্ডি’র আশ্রয় নিতে পারে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা।
তিনি বলেন, প্রচলিত নিয়মে ব্যাংক থেকে কার্ডের নির্দিষ্ট মার্চেন্ট কোড-কে ব্লক করে দেয়া সম্ভব যা গ্যাম্বলিং, ফরেক্স ট্রেডিং-এর লেনদেন বন্ধ করতে সাহায্য করবে। এ জন্যে সব আন্তর্জাতিক ক্রেডিট-ডেবিট কার্ড ট্রান্সেকশন বন্ধ করার প্রয়োজন নেই।
বেসিসের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ডিজিটাল মার্কেটিং কাজে ব্যবহারের জন্য বিকল্প সমাধান হিসেবে সরকারি বা বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে নেটওয়ার্ক প্রোভাইডার যেমন মাস্টার কার্ড/ভিসা সম্বলিত বিশেষ নিরবিচ্ছিন্ন কার্ড প্রদান করা যেতে পারে যা শুধুমাত্র অনুমোদিত মিডিয়া চ্যানেলগুলোতে পেমেন্ট পাঠানোর জন্য ব্যবহার করা যাবে। বেসিসের অনুমোদনক্রমে যে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট উপস্থাপন করে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে এই বিশেষ কার্ড গ্রহণ করতে পারবেন যা ডিজিটাল মার্কেটিং কাজে বছরে ২৫ হাজার হাজার ডলার পর্যন্ত মূল্য পরিশোধের জন্য ব্যবহার করা যাবে।
এছাড়াও যতদিন একটি বিকল্প ব্যবস্থার প্রচলন না হচ্ছে, ততদিন পর্যন্ত ক্রেডিট ও প্রি-পেইড কার্ড দ্বারা ট্রাভেল কোটায় ডিজিটাল মার্কেটিং খাতে মূল্য পরিশোধের সুবিধাটি সক্রিয় রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে।
অপরদিকে ডিজিটাল বিপননের মূল্য পরিশোধে আরোপিত ব্লকেজ তুলে নেয়া না হলে ছোটো উদ্যোক্তারা “হুন্ডি”র মতো অবৈধ প্রক্রিয়া ও বিভিন্ন অসদুপায় অবলম্বন করে আর্থিক লেনদেন পরিচালনায় বাধ্য হবেন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ই-ক্যাব সভাপতি আব্দুল ওয়াহেদ তমাল।
তিনি বলেন, এই ব্লকেজ প্রত্যাহার করা না হলে স্থানীয় উদ্যোক্তারা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে ক্রস বর্ডার ই-বাণিজ্য। একদিকে ই-কমার্সের মাধ্যমে আমদানি-রপ্তানি কমবে, অপরদিকে পণ্য মূল্য বেড়ে যাবে।