ব্র্যান্ডিং নিয়ে কাজ করতে গিয়ে অনেক ধরনের ইন্ডাস্ট্রি এবং প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করা হলেও ইদানিং টেক সংক্রান্ত ব্যবসার ব্র্যান্ডিং এর সম্ভাবনা বেশ প্রবল বলে মনে হচ্ছে । সাম্প্রতিক সময়ের টেকনোলজিক্যাল ব্র্যান্ডিং এর প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে নিম্নোক্ত অভিজ্ঞতা গুলো হয়তো ব্র্যান্ডিং এর বর্তমান সম্ভাবনাতে আলোকপাত করতে পারে ।
দৃশ্যপট -১ : আইওটি ডিভাইস ও সংক্রান্ত ব্যবসা :- কিছু ব্র্যান্ড যারা আইওটি বা ইন্টারনেট অফ থিংস সংক্রান্ত ব্যবসা করে তারা আজকাল তাদের ব্র্যান্ডকে নিয়ে বেশ সফলতার পরিচয় দিচ্ছে । সাম্প্রতিক সময়ে এরকম দুইটি ব্র্যান্ডের সাথে কাজ করার সৌভাগ্য হলো । একটি ব্র্যান্ড যারা কিনা ভেইকেল ট্রাকিং নিয়ে কাজ করে বেশ প্রতিষ্ঠিত এবং যাদের জিও ফেন্সিং, লোকেশন ট্র্যাকিং, স্পিড নোটিফিকেশন, ফুয়েল এলার্মসহ বিভিম্ন ধরনের ফিচার আছে তারা MyRadar নামটি থেকে Raadar নামে নিজেদেরকে রি ব্র্যান্ডিং করলেন। এছাড়াও আরেকটি কোম্পানি যারা কিনা অ্যাটেন্ডেন্স মেশিন নিয়ে কাজ করেন যেখানে একটি মোবাইল ডিভাইসে অ্যাপের মাধ্যমে অ্যাটেনডেন্স মেশিনে পাঞ্চকৃত সময় ও বিভিন্ন ফাংশন দেখা যায়। এখানে তারা Sinetek নামে ব্যবসা পরিচালনা করতেন, যাকে আমি ‘হাজিরা’ নামক একটি মৌলিক নামে প্রোডাক্ট ব্র্যান্ডিং করে দেই। দুইটি ক্ষেত্রেই এরা আই ও টি ভিত্তিক ও ক্লাউড ভিত্তিক ডিভাইস ও অ্যাপের মাধমে ব্যবসা পরিচালনা করে থাকেন।
দৃশ্যপট-২: আউটসোর্সিং ভিত্তিক কোম্পানিঃ- দ্বিতীয়ত একটি কোম্পানির সাথে কাজের সুযোগ হলো যারা আমেরিকার ভার্জিনিয়া বেজড বেশ কিছু ওয়েব ভিত্তিক কোম্পানির ডেভ অ্যাপের কাজ দেশ থেকেই পরিচালনা করে আসছিলেন । কোম্পানিটির বর্তমান লক্ষ্য ছিল কিছু দেশীয় মানসম্মত কাজ করা ও এমপ্লয়ি ব্র্যান্ডিং করে প্রতিষ্ঠানের ইমেজকে বাড়ানো, এক্ষেত্রে তাদের সাথে কাজ করতে যেয়ে আমার উপলব্ধি হলো যখন আউটসোর্সিং ফার্মগুলোতেও ব্র্যান্ডিং এর পালে হাওয়া লেগেছে, যারা কখনই লোকাল একটি কমিউনিটির মস্তিস্তে অবস্থান তৈরি করতে চাননি তারা যখন এখন নিজেদের ব্র্যান্ড ইমেজ নিয়ে ভাবছে এটা টেক ব্র্যান্ডিংয়ের পরিবর্তনের হাওয়ার বেশ বড় একটি বার্তা দেয় ।
দৃশ্যপট -৩ : একটি ইকমার্স এনাবলার এর রি-ব্র্যান্ডিং এর প্রয়াস :- তৃতীয়ত একটি টেক কোম্পানির সাথে কাজ করার সুযোগ হলো, যেটাকে আপনি একটি সম্পূর্ণ পৃথক ইকোসিস্টেমই বলতে পারেন । আলাদা একটি জগৎ এর জন্য বলছি বাংলাদেশে যে এত সফল ইকমার্স উদ্যোক্তা আছেন এবং তার দীর্ঘসময় ধরে এতো সফলভাবে অর্থনীতিতে অংশগ্রহণ করে যাচ্ছে এই উদ্যোক্তাগুলোর সাথে কথা না বললে হয়তো এতটা আন্দাজ করা যায় না । ৫-১০ লক্ষ্ টাকার মাসিক বিক্রয় অনেক নতুন উদ্যোক্তারাও ইকমার্স পেজ করে পূর্ণ করে থাকেন । এখানে আমার মনে হয়েছে অনেক কাজ করার জায়গা আছে । যেমন আমি যাদের সাথে কাজ করলাম তারা Amardokan নামে ব্যবসা করতেন । রি-ব্র্যান্ডিং করে নামে দিলাম সার্ভিস টাকে storex নামে । Storex একটি প্ল্যাটফর্ম যেখানে নিজেদের মত করে উদ্যোক্তারা নিজেদের কাস্টমাইজড ই-কমার্স বানাতে পারেন এবং বিভিন্ন ফিচার প্রয়োজন অনুসারে উপভোগ করতে পারেন সার্ভিস চার্জের মাধ্যমে – এই ভেঞ্চারে আমি নতুন লোগো ওয়েবসাইট, এক্সপ্লেইনার ভিত্তি সহ বিভিন্ন মার্কেটিং ম্যাটারিয়ালে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ইনপুট দেই যা তাদেরকে একটি কার্যকর প্ল্যাটফর্ম এবং ব্র্যান্ড গড়ে তুলতে সাহায্য করে ।
এসকল বাস্তব অভিজ্ঞতা দিয়ে যাবার সময় আমার মনে হয়েছে ,আমাদের ব্র্যান্ডিং এর অগ্রযাত্রার ধারাবাহিকতায় এখন টেক ব্র্যান্ডিংয়ের একটি স্বর্ণযুগ চলছে । মার্কেট এক্সপার্ট এবং টেক উদ্যোক্তারা মিলেমিশে বেশ ভালো কিছু টেক ব্র্যান্ড ধারাবাহিকভাবে উপহার দিয়ে যাবেন তা অবধারিত এবং আমি যদি এই অগ্রযাত্রায় একটি সার্থক রোল প্লে করতে পারি নিজেও গর্বিত অনুভব করব। সর্বোপরি আরও বেশী মার্কেটিং এক্সপার্ট রা এদিক টাতে মনোযোগ দিবেন এটা দেখতে পেলেই এই লেখার ক্ষুদ্র প্রয়াস টা সার্থক হবে।