বর্ষ পরিক্রমায় বাংলাদেশের ২০২২ সাল ছিলো ওভার দ্য টপ বা ওটিটি কনটেন্টে মুখর। স্মার্টফোন আর স্মার্ট টিভির কল্যাণে ইন্টারনেট নির্ভর এই বিনোদন প্লাটফর্মের ধাক্কায় কমেছে ডিশ ক্যাবলের কদর। ফলে বছুর জুড়েই টিভি চ্যানেলের নাটক তৈরি থেকে ইউটিউবের জন্য নাটক বেশি নির্মাণ হয়েছে বিদায়ী বছরে। ফলে জনপ্রিয় তারকারা ধীরে ধীরে ওটিটি প্ল্যাটফরমমুখী হয়েছেন।
বছরজুড়ে প্রেক্ষাগৃহের বিকল্প হিসেবে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠে ওটিটি প্লাটফর্ম। সুস্থ বিনোদনে ভরসার নামও হয়ে উঠেছে ওটিটি।
আফরান নিশো, মেহজাবিন চৌধুরী, জিয়াউল ফারুক অপূর্ব, তানজিন তিশা, মোশাররফ করিম, চঞ্চল চৌধুরী, ইন্তেখাব দিনার, জাকিয়া বারী মম, তাসণিয়া ফারিনদের বেশি দেখা গেছে ওটিটি প্লাটফর্মে।
ফেসবুক আর ইউটিউব চ্যানেলে নিয়মিত দেখো গেছে তৌসিফ মাহবুব, জোভান, সাবিলা নূর, মিশু সাব্বির, মুশফিক ফারহান, সাফা, সজল, ইরফান, মনোজ, সালহা নাদিয়া, শামীম হাসান সরকার, তাসনুভা তিশা, টয়া, ইয়াশ রোহান, খাইরুল বাসার, সারিকা সাবাহ, মৌসুমী হামিদ, কেয়া পায়েল, সামিরা খান মাহি, তানিয়া বৃষ্টি, আরশ খান, নিলয় আলমগীর, জান্নাতুল হিমি, সাব্বির অর্ণব-কে।
উল্লেখযোগ্য নাটকের মধ্যে ছিল- ‘ফ্রিল্যান্সার নাদিয়া’, ‘অ্যাম্বুলেন্স গার্ল’, ‘ভয়েস ক্লিপ’, ‘লাভ ভার্সেস ক্রাশ টু’, ‘প্রশ্রয়’, ‘উড়ো প্রেম’, ‘অঘটন’, ‘আপনজন’, ‘নিহত নক্ষত্র’, ‘বদলে যাওয়া মানুষ’, ‘নিজস্ব প্রতিবেদক’, ‘ফুলের নামে নাম’, ‘একটা নির্জন দুপুর চাই’, ‘বাবা তোমার জন্য’, ‘শুরুটাই সুন্দর’ ‘চম্পা হাউজ’, ‘পুনর্জন্ম-৩’, ‘রিকশা গার্ল’, ‘প্রস্থান ‘ ও ‘বাঘে খায়’ এর মতো ছবি।
ওটিটি প্লাটফর্মগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বিশী আলোচনায় ছিলো টফি। ফুটবল বিশ্বকাপ দেখিয়ে বেশ নাম কুড়িয়েছে প্লাটফর্মটি।
এছাড়াও বছরের শেষ দিকে আত্মপ্রকাশ করে দ্বিপ্ত প্লাস।
বছরজুড়েই বেশকিছু কনটেন্ট নিয়ে বঙ্গ, বায়োস্কপ, চরকি, সিনেমাটিক, বিঞ্জ, হইচৈ ও আয়না ছিলো বছরের আলোচিত ওটিটি প্লাটফর্ম। নতুন বছরে ৭ম বছরে পদার্পন করবে বাংলাদেশে ওটিটি’র যাত্রা।
অফিসিয়ালি না হলেও সালের শুরুর দিকে এশিয়ায় যাত্রা শুরু করে নেটফ্লিক্স। সে বছর এপ্রিলে প্রতিষ্ঠানটির সিইও রিড হ্যাস্ট্রিংস বলেছিলেন, এশিয়াতে তাদের সাফল্য সময়ের ব্যপার মাত্র। হ্যা ঠিক তাই, নেটফ্লিক্স সিইও ঠিকই বলেছিলেন। নেটফ্লিক্সের এশিয়া যাত্রার ১০০ দিনের মাথায় রিড হ্যাস্ট্রিংস জানান এক কোয়ার্টারে ৪০ লক্ষের বেশি ইন্টারন্যাশনাল সাবস্ক্রাইবার বেড়েছে নেটফ্লিক্সের। সুযোগ লুফে নেয় আমাদের প্রতিবেশি রাষ্ট্র ভারত। নেটফ্লিক্সকে আমন্ত্রণ জানানো হয় ভারতে তাদের ব্যবসা সম্প্রসারণের। ফলাফল এখন চোখের সামনে পরিস্কার, বলিউডি সিনেমায় নেটফ্লিক্স ভরার পাশাপাশি হিন্দি ভাষার সবথেকে বড় বড় ওয়েব সিরিজের অর্থায়ন এসেছে নেটফ্লিক্স থেকে। অথচ নেটফ্লিক্স বাংলাদেশেও বর্তমানে সমান জনপ্রিয়, ২০১৬ সালে বাংলাদেশে ঢোকা নেটফ্লিক্স প্রায় ২০০ কোটি টাকার মতো ব্যবসা করেছিলো ওই সময়েই। সেইসাথে প্রতিবছর সেই সংখ্যা তারা বাড়িয়ে নিচ্ছে। দেশের সাতটি প্রতিষ্ঠান ছাড়াও ভারতীয় তিনটি ওটিটি প্ল্যাটফর্ম সরাসরি প্রযোজনা করছে বাংলাদেশে। এই জনপ্রিয়তার কারণেই এবার ওটিটি প্ল্যাটফর্ম খোলার চিন্তা হচ্ছে সরকারিভাবে।