দিন দিন একে অপরের সঙ্গে টেক্কা দিচ্ছে চীন ও যুক্তরাষ্ট্র। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির এই লড়াইটা এখন পৌঁছে গেছে মহাকাশেও। ২০১১ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন নাসাকে চীনের সঙ্গে কাজ করতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। এরপর থেকে নিজস্ব উদ্যোগ নিয়ে কাজ করছে চীন ।
এরই অংশ হিসেবে চীনের উত্তর পশ্চিমের গোবি মরুভূমি থেকে শেনঝাউ–১৫ নভোযানে করে মহাকাশচারী পাঠাল চীন। দেশটির তৈরি নতুন তিয়ানগং মহাকাশ স্টেশনে নভোচারীদের পৌঁছে দেবে নভোযানটি। মহাকাশে নিজেদের স্টেশনে থাকার জন্য দেশটির এটাই প্রথম নভোচারী পাঠানোর ঘটনা। সেখানে ছয় মাস থাকবেন তিন নভোচারী। পরে তারা ফিরে এলে ফের পাঠানো হবে নতুন নভোচারীদের। নভোযানটি জিউকুয়ান স্যাটেলাইট লঞ্চ সেন্টার থেকে যাত্রা শুরু করে গত মঙ্গলবার। লক্ষ্য বর্তমানে কক্ষপথে থাকা দ্বিতীয় মহাকাশ স্টেশন তিয়ানগং।
চীনের মহাকাশ স্টেশনটি তৈরিতে যে ১১ টি আলাদা যন্ত্রাংশ প্রয়োজন ছিল এবারের যাত্রায় তার শেষ চালানটি যাচ্ছে। এই মহাকাশ স্টেশনটি প্রায় এক দশক ধরে কাজ করবে এবং প্রায় শূন্য মাধ্যাকর্ষণে পরীক্ষা চালাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
চায়না ম্যানড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের একজন মুখপাত্র বলেছেন, নতুন ক্রুরা মহাকাশ স্টেশনের চারপাশে সরঞ্জাম স্থাপনের কাজ করবেন। বছরের শেষ নাগাদ নির্মাণকাজ শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
চীনের মহাকাশ কর্মসূচী এর আগে মঙ্গল গ্রহ এবং চাঁদে রোবোটিক রোভার অবতরণ করেছে এবং বিশ্বের তৃতীয় দেশ হিসেবে কক্ষপথে নভোচারী পাঠাল তারা।
শেনঝাউ-১৫ মিশনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ৫৭ বছর বয়সী ফেই জানলং। তিনি ২০০৫ সালে শেনঝাউ-৬ মিশনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তিয়ানগং মহাকাশ স্টেশন চালু হলে, প্রতি বছর দুবার করে সেখানে নভোচারী পাঠাতে পারবে চীন।
এর আগে চলতি বছরের ১৭ জুন শেনঝু-১২ নামের মহাকাশ যানে চেপে নতুন মহাকাশ স্টেশনে তিনজন মহাকাশচারী পাঠিয়েছিলো চীন। চীনের এ মহাকাশ মিশনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন লি বোমিং। তার দলের প্রাথমিক লক্ষ্য হচ্ছে, ২২ দশমিক ৫ টন ওজনের তিয়ানহে মডিউলকে মহাকাশে উপযোগী করে তোলা। একই সঙ্গে মহাকাশে চীনের সক্ষমতা ও আত্মবিশ্বাসকে বাড়িয়ে তোলা। এরইমধ্যে চন্দ্রপৃষ্ঠ থেকে পাথর ও মাটি পৃথিবীতে এনেছে চীনের মহাকাশযান। এ ছাড়া চীনের ছয় চাকার একটি রোবট লালগ্রহ মঙ্গলে সফলভাবে অবতরণে সক্ষম হয়েছে।
এর আগে ২০১৯ সালে চাঁদের বিপরীত পৃষ্ঠে সফলভাবে অবতরণ করে চীনের ক্রুবিহীন একটি রোভার। এর মাধ্যমে বিশ্বের প্রথম কোনো দেশ চাঁদের বিপরীত পৃষ্ঠে যান পাঠাতে সক্ষম হয়।