আগামী বছর ১ জানুয়ারি থেকে থ্রিজি হ্যান্ডসেট আমদানি ও স্থানীয় উৎপাদন নিষিদ্ধ করেছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা- বিটিআরসি। থ্রিজি হ্যান্ডসেট দেশে ৪জি মোবাইল নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণে বাধা দিচ্ছে এমন বিবেচনায় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।
বিটিআরসি পরিসংখ্যান অনুসারে, দেশটিতে শুধুমাত্র থ্রিজি হ্যান্ডসে উৎপাদন কার্ যত প্রায় শূন্য হয়ে গেছে। স্থানীয় নির্মাতারা চলতি বছরে মাত্র কয়েক হাজার হ্যান্ডসেট তৈরি করেছে। কিন্তু কিছু আমদানিকারক, “মোবাইল ফোন হ্যান্ডসেট প্রস্তুতকারক এবং বিক্রেতা তালিকাভুক্তি” এবং “রেডিও সরঞ্জাম আমদানিকারক এবং বিক্রেতা তালিকাভুক্তি” বিভাগের অধীনে এখনও শুধুই থ্রিজি হ্যান্ডসেট আমদানি করে। তাই চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বরের পর শুধুমাত্র থ্রিজি হ্যান্ডসেট আমদানির জন্য ওইসব আমদানিকারকদের এনওসি (অনাপত্তি সনদ) না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিটিআরসি।
এদিকে, স্থানীয় কোম্পানিগুলোর স্মার্টফোনের উৎপাদন কমছে, কিন্তু ফিচার-ফোনের পরিমাণ বাড়ছে – এমন সময়ে যখন দেশ ৫জি প্রযুক্তির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
তথ্য অনুযায়ী, দেশে উৎপাদিত মোট হ্যান্ডসেটের ৬৯.৬০ শতাংশ ফিচার-ফোন, আর ৩০.৪০ শতাংশ স্মার্টফোন।
চলতি বছরের জুন মাসে, দেশে স্মার্ট-ফোনের (৪জি এবং ৫জি) উৎপাদন ছিল ৮ লাখ ৮০ হাজার ইউনিট, যেখানে টু জি বা ফিচার-ফোনের উৎপাদন ছিল ২১ লাখ ৫০ হাজার ইউনিট।
বাংলাদেশ মোবাইল ফোন ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুযায়ী, দেশে মোবাইল হ্যান্ডসেটের বাজার ১০ হাজার কোটি টাকার বেশি।
মোবাইল ফোন হ্যান্ডসেটের বার্ষিক চাহিদা ৩ কোটি ৫০ লাখ ইউনিটের বেশি, যার মধ্যে ১ কোটি ১০ লাখ ইউনিট স্মার্টফোন। ২০২১ সালের জানুয়ারী পর্যন্ত, স্থানীয় নির্মাতারা দেশের মোবাইল ফোনের প্রয়োজনীয়তার প্রায় ৮০ শতাংশ সরবরাহ করেছে। খাতটি ১৫ হাজারেরও বেশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে।
বর্তমানে ১৫টি কোম্পানির মোবাইল হ্যান্ডসেট তৈরির লাইসেন্স রয়েছে।
এর মধ্যে রয়েছে- ওয়ালটন ডিজিটেক ইন্ডাস্ট্রিজ, ফেয়ার ইলেকট্রনিক্স (ব্র্যান্ড- স্যামসাং), এডিসন ইন্ডাস্ট্রিজ (সিম্ফনি), আল আমিন অ্যান্ড ব্রাদার্স (৫ স্টারr), কার্লকেয়ার টেকনলোজিস বিডি লিমিটেড (আইটেল, টেকনো), আনিরা ইন্টারন্যাশনাল (উইনস্টার), বেস্ট তাইকুল এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড (ভিভো), গ্রামীণ ডিস্ট্রিবিউশন (লাভা), বাংলাট্রিনিক টেকনোলজি (ডিটিসি), বেনলে ইলেক্ট্রনিক এন্টারপ্রাইজ (অপ্পো), ওকে মোবাইল এবং মাইসেল টেকনোলজি।
স্মার্টফোনের স্থানীয় উৎপাদন ও অ্যাসেম্বলিংকে উৎসাহিত করতে এবং বিদেশী বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে সরকার তার “মেড ইন বাংলাদেশ” কর্মসূচির মাধ্যমে পদক্ষেপ নিয়েছে।