ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, ডিজিটাল বাণিজ্য যত বাড়বে ডাকঘরের চাহিদা ও গুরুত্ব তত বাড়বে। এজন্য এটিকে সম্পূর্ণভাবে ডিজিটাল ডাকঘরে রূপান্তরের বিকল্প নেই। ডাক বিভাগের কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের নিয়ে তৈরি করা এই মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে শিগগিরই ডাকসেবা কাঙ্ক্ষিত মানে উন্নীত হবে বলে বৈঠকে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন মন্ত্রী।
সোমবার (৯ মে) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে ডাকভবন মিলনায়তনের ডাক অধিদপ্তর ও এটুআই প্রোগ্রামের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত বৈঠকে ডিজিটাল ডাকঘর বিষয়ক গৃহীত কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়।
বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মন্ত্রী বলেন, ডাকঘরকে ডিজিটাল যুগের উপযোগী করে গড়ে তুলতে প্রণীত ডিজিটাল সার্ভিস ডিজাইন ল্যাব (ডিএসডিএল) প্রস্তাব ডিজিটাল ডাকঘর প্রতিষ্ঠায় একটি ঐতিহাসিক মাইলফলক। এর ফলে উৎপাদনমুখী কর্মকাণ্ডের ডিজিটালাইজেশনের ভিত তৈরি হয়েছে।
ডাকঘরের মাধ্যমে জনগণকে সেবা দেওয়ার বিশাল সুযোগ কাজে লাগানোর দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ডাকঘরের বিস্তীর্ণ নেটওয়ার্ক, বিশাল অবকাঠামো ও জনবল ব্যবহার করে প্রত্যন্ত এলাকাসহ দেশের প্রতিটি মানুষের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দেওয়ার সক্ষমতা ডাক বিভাগের আছে।
ডিজিটাল বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে মোস্তাফা জব্বার বলেন, আমাদের ডিজিটাল বাংলাদেশ চতুর্থ শিল্প বিপ্লবেই সীমিত না। বিশ্ব এখন পঞ্চম শিল্প বিপ্লবে পা রেখেছে। জাপান সোসাইটি ৫.০ (৫ম প্রজন্ম) এর কথা বলছে।
এ সময় ডাকঘরের ডিজিটালাইজেশন কার্যক্রমকে এগিয়ে নিতে পৃথক একটি ডিজিটাল সেল গঠনের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন মন্ত্রী। এই সেলে প্রয়োজনীয় দক্ষ জনবল নিয়োগেরও আহ্বান জানান তিনি। বলেছেন, ‘এর মাধ্যমে আমরা প্রযুক্তি ব্যবহার করে উন্নত ও বৈষম্যহীন জ্ঞানভিত্তিক ডিজিটাল সাম্য সমাজ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর লালিত স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা করবো।’
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মো. খলিলুর রহমান। দ্রুততম সময়ের মধ্যে ডাক বিভাগকে ডিজিটাল ডাকঘরে রূপান্তরের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, ডিজিটাইজেশনে যেখানে সমস্যা হবে, তা সমাধানে সর্বোচ্চ উদ্যোগ নেওয়া হবে। তবে তার আগে আমাদের জানতে হবে মানুষ ডাকঘর থেকে কী প্রত্যাশা করে।
অনুষ্ঠানের শুরুতে ডিজিটাল ডাকঘরের মহাপরিকল্পনা ও কর্মকৌশল তুলে ধরেন ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. সিরাজ উদ্দিন। ডাক অধিদপ্তরকে ডিজিটালাইজ করতে গৃহীত কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের সর্বোচ্চ চেষ্টা করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ডিএসডিএল ডাক সেবা ডিজিটাইজেশনের জন্য একটি ঐতিহাসিক মাইলফলক।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তৃতা দেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সেলিমা সুলতানা ও এটুআই’র চিফ ই-গভর্নেন্স স্ট্র্যাটেজিস্ট (কৌশলবিদ) ফরহাদ জাহিদ শেখ।