ডিজিটাল যুগের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তরের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার বলেছেন, সামনের দিনে মূল্য থাকবে প্রযুক্তি শিক্ষার-মূল্য থাকবে প্রযুক্তি সক্ষম মানুষের। এ লক্ষ্যে শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তরের বিকল্প নেই। আর ডিজিটাল সংযুক্তি সোনার বাংলা গড়ার ডিজিটাল হাইওয়ে। তাই ৫০ বছর পরের উপযোগী প্রযুক্তি ব্যবহারের বিষয়টি মাথায় রেখে আমাদের কাজ করতে হবে।
মন্ত্রী আরো বলেন এখন ই, সি ও এস এর দিন নেই। ইলেকট্রনিক বা সাইবার বা স্মার্ট শব্দগুলো ডিজিটাল শব্দ দিয়ে স্থলাভিষিক্ত হয়েছে। আমাদের ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচি শেষ হয়ে যায়নি। শেখ হাসিনা ২০০৮ সালে ঘোষণা করেছিলেন যে ২১ সালে বাংলাদেশ ডিজিটাল বাংলাদেশ হিসেবে পরিচিত হবে। আমরা গর্বের সাথে সেই পরিচিতি পেয়েছি। ডিজিটাল বাংলাদেশ হবে সেদিন যেদিন আমরা বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ে তুলতে পারবো। বঙ্গবন্ধুর সোনর বাংলা হলো সুখী-সমৃদ্ধ, শোষণ বৈষম্য হীন বাংলাদেশ।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় টেলিযোগাযোগ অধিদপ্তর মিলনায়তনে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ আয়োজিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক নেতৃত্ব এবং স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তিতে দেশের উন্নয়ন শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন মন্ত্রী।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মো: খলিলুর রহমান-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি বিটিআরসি‘র চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার এবং মূখ্য আলোচক হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো: সিরাজ উদ্দিন, টেলিযোগাযোগ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো: মশিউর রহমান প্রমূখ বক্তৃতা করেন।
‘সোনার বাংলা গড়ার এই অভিযাত্রায় ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার চলমান সংগ্রাম এগিয়ে নিতে ডিজিটাল সংযুক্তির মহাসড়ক নির্মাণের স্থপতি বঙ্গবন্ধু’ মন্তব্য করে টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী আরো বলেন, যুদ্ধের ধ্বংসস্তুপের উপর দাঁড়িয়েও বঙ্গবন্ধু কর্তৃক আইটিইউ ও ইউপিইউ-এর সদস্যপদ অর্জন, টিএন্ডটি বোর্ড গঠন, বেতবুনিয়ায় ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র স্থাপন, প্রাথমিক শিক্ষা জাতীয়করণ করা এবং কারিগরি শিক্ষা প্রসারে উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে ডিজিটাল বাংলাদেশের বীজ বপন করা হয়েছিল।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার ৫১ বছরের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় বঙ্গবন্ধুর তিন বছর সাড়ে সাত মাস এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১৮ বছরের শাসনকাল বাদে বাকীটা সময় ছিলো বাংলাদেশকে পেছনে ঠেলে দেবার ইতিহাস। এই দীর্ঘ সময় দেশের মানুষ প্রকাশ্যে বঙ্গবন্ধুর নাম পর্যন্ত উচ্চাররণ করতে পারেনি। এই সময়টা বাংলাদেশকে স্বাধীনতার আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নেওয়ার চক্রান্ত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টি সম্পন্ন নেতৃত্বের ধারাবাহিকতায় আজকের বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুর লালিত স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার প্রত্যাশিত গন্তব্যের ঠিকানায় দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলছে।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব বঙ্গবন্ধুর জীবনের অপ্রকাশিত তথ্যগুলো সংগ্রহ এবং তা সংকলিত করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন,বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ অনেক তথ্য বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। এগুলো সংগ্রহ করতে পারলে তা ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস্য হিসেবে কাজ করবে।
বিটিআরসির চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার বাংলাদেশের সাথে পাকিস্তানের উন্নয়নের তূলনা করে দেখান যে পাকিস্তান বাংলাদেশের ধারে কাছেও দাড়াতে পারছেনা। তিনি পাকিস্তার আমলে বাঙালীর প্রতি বৈষম্য করার দৃষ্টান্তগুলোও তুলে ধরেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী জীবনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে বলেন, একজন বঙ্গবন্ধু ছিলেন বলেই আমরা আজ স্বাধীনতা পেয়েছি।
মূখ্য আলোচক অধ্যাপক মনজুরুল ইসলাম বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক নেতৃত্বের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।
মন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশুদিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত শিশুদের বঙ্গবন্ধু চিত্রাংকন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার হস্তান্তর করেন