দেশের তরুণরা মেধাবী। কিন্তু তারা উদ্ভাবনের জায়গায় অত্যন্ত দুর্বল। তাই তাদের উদ্ভাবন সম্পদকে সুরক্ষা দেয়ার মাধ্যমে দেশী উদ্ভাবনকে আন্তর্জাতিক বাজারে নিয়ে যাওয়ার প্রতি তাগিদ দিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
শনিবার সিটিও ফোরাম বাংলাদেশ এবং মোবাইল অপারেটরদের সংগঠন অ্যামটব এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচি বেগবান করতে টেলিযোগাযোগের ভূমিকা শীর্ষক ওয়েব সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই আহ্বান জানিয়েছেন মন্ত্রী।
দেশ থেকে টুজি বিদায় নেয়ার প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে দেশে ৫জি সেবা চালুতে সরকার পুরোপুরি প্রস্তুত এবং সহসাই দেশেই উৎপাদিত মোবাইল কারখানার সংখ্যা ১১টি থেকে ১৪টিতে বেড়ে দাঁড়াবে বলেও জানান ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ আন্দোলনের এই প্রথম সারির নেতা।
মন্ত্রী বলেন, ৫জির যুগে মিলিয়ন অব ডিভাইসের সংযুক্ত করতে পারবো, বাসার ফ্রিজ, টিভি, দরজা সবকিছুই। সুতরাং টেলকো হচ্ছে হাইওয়ে যার ওপর নির্ভর করে পরের সভ্যতা বিকশিত হবে। এজন্য উদ্ভাবনী দক্ষতার ওপর গুরুত্ব দেন তিনি।
টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, এক সময় বলা হতো ইন্টারনেট বড় লোকের জন্য, ব্যাংকের জন্য… কিন্তু এখন দেখছি ৫জিভিত্তিক যারা বিনিয়োগের জন্য এসেছে সেগুলোর বেশির ভাগই কৃষিভিত্তিক। তারা বলছে আইওটি ডিভাইস পুকুরে, জমিতে বসাবো এবং ৫জির মাধ্যমে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে রূপান্তর করবে। এ রূপান্তরের জন্য আমাদের তরুণদেরও আগ্রহ রয়েছে। তবে সেটি আমরা কৃষকের গ্রহণযোগ্যতার মধ্যে রাখতে পারি কিনা সেটি ভাবতে হবে।
ওয়েবিনারে আমাজনের সঙ্গে ৪০ জনের ৫টি টিম কাজ করছে জানিয়ে এবারের বিজয় দিবসে ‘ইনোভেশন হ্যাকাথন’ আয়োজনের কথা জানিয়েছেন সিটিও ফোরাম বাংলাদেশের সভাপতি তপন কান্তি সরকার।
তবে সরকারের আন্তরিকতা থাকলেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে সরকারের নীতির প্রতিফলন ঘটছে না বলে মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন এমটব মহাসচিব ও রবি আজিয়াটা লিমিটেডের সিইও মাহতাব উদ্দিন আহমেদ। আর এ কারণেই বাংলাদেশ ৫জির জন্য এখন পুরোপুরি প্রস্তুত নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
অবশ্য ডিজিটাল সেবায় বিটিআরসির হস্তক্ষেপে উভয় পক্ষ এখন ‘বিজয়ী’ অবস্থানে আছে বলে মত দিয়েছেন গ্রামীণফোনের সিইও ইয়াসির আজমান।
অনুষ্ঠানে টেলিকম খাতকে ‘ডিজিটাল ব্যাংকিংয়ের ব্যাকবোন’ বলে মন্তব্য করেন ডাচ-বাংলা ব্যাংক লিমিটেডের এমডি ও সিইও আবুল কাশেম মোঃ শিরিন।
অপরদিকে অবকাঠামোতে এগিয়ে থাকলেও সচেতনতায় বাংলাদেশ পিছিয়ে রয়েছে মন্তব্য করে বাংলা লিংক এখন মোবাইল ওয়াফাইয়ের মাধ্যমে প্রত্যেকটা বাড়ীকে ইন্টারনেটের অধীনে আনতে কাজ করছে বলে জানান বাংলালিংকের সিইও এরিক অস।
আর গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর কাছে ‘কৃষি প্রযুক্তিতে টেলিকম’ নেটওয়ার্ক ক্রমেই ভরসার স্থল হয়ে উঠছে বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন টেলিটক এমডি মোঃ সাহাব উদ্দিন।
ওয়েবিনারের শুরুতে সৈয়দ সোহায়েল রেজা সিটিও ফোরাম ইনোভেশন সেন্টারের ওপর একটি প্রেজেন্টেশন দেন।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে টেলিযোগাযোগ অধিদপ্তরে মহাপরিচালক মোঃ মহসিনুল আলম এবং সিটিও ফোরাম বাংলাদেশের সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ আলী বক্তব্য রাখেন।