পূর্ব মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ আরও ঘনীভূত হয়ে উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হওয়ার শঙ্কা থাকায় কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে এবং মোংলা সমুদ্র বন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
চরম প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখা ৪৫০ কিলোমিটারজুড়ে তাণ্ডব চালাতে পারে। কেননা, এটির ব্যাস ৪৫০ কিলোমিটার। এক্ষেত্রে মোখা মিয়ানমার উপকূলেই প্রথম আঘাত হানতে পারে। ভারত ও বাংলাদেশের আবহাওয়াবিদরা এমন তথ্য জানিয়েছেন।
আবহাওয়া অফিসের বিশেষ বুলেটিনে বলা হয়েছে, অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখা রবিবার (১৪ মে) সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে কক্সবাজার-মিয়ানমার উত্তর উপকূল অতিক্রম করতে পারে। ওই এলাকায় আজ শনিবার সন্ধ্যার মধ্যে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব শুরু হতে পারে।
এমন আপদকালীন সময়ে টেলিযোগাযোগ সেবা অটুট রাখতে বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ করেতে টেলিযোগাযোগ সেবাদাতাদের প্রস্তুত থাকার নির্দশনা দিয়েছে বিটিআরসি। একইসঙ্গে জরুরী সেবা নিশ্চিত করতে সংস্থাটির পক্ষ থেকে খোলা হয়েছে একটি কন্ট্রোল রুম। এই রুমে রয়েছে সার্বক্ষণিক সেবা গ্রহণ ও আপদকালীন সময়ে টেলিযোগাযোগ সেবা সমন্বয়ের দুইটি নম্বরর। এগুলো হলো +8801552-202854 এবং +8801552-202886।
এছাড়াও আইসটি বিভাগের অধীন এটুআই এর পক্ষ থেকে জরুরী সেবার ৩৩৩ হেল্পলাাইন বিশেষ সেবা ডেস্ক চালুর কথাও বলা হয়েছে।
সর্বোপরি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকার ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের সময় পানি জমে গেলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার শঙ্কা রয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী ওই সময়ে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশনা দিয়েছেন।
এদিকে টেলিযোগোযোগ সেবাদাতাদের আগেই পর্যাপ্ত বিদ্যুত ব্যাকআপ সুবিধা প্রস্তুত রাখার নির্দেশনা দিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। তিনি জানিয়েছেন, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ থেকে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনসহ অধীনস্থ সকল সংস্থা সমূহকে ইতিমধ্যে ঘূর্ণিঝড় মোখা মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বিটিআরসি থেকেও সংশ্লিষ্ট সকল লাইসেন্সি সমূহকে এ বিষয়ে পদক্ষেপের নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে এবং বিটিআরসিতে এ সংক্রান্ত একটি মনিটরিং টিম গঠন করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে বিটিআরসি।
বিটিআরসির কন্ট্রোল রুম মূলত বিটিআরসিতে গঠিত মনিটরিং টিম এবং মোখা মোকাবিলায় উপকূলী এলাকায় কার্যরত লাইসেন্সিসমূহ কিভাবে কাজ করছে তার মধ্যে সমন্বয় সাধন করছে।
এছাড়া মোবাইল অপারেটর, এনটিটিএন, আইএসপি এবং সংশ্লিষ্ট অনান্য লাইসেন্সি উপকূলীয় এলাকায় কার্যক্রম গ্রহণে যেকোনো প্রকার সমস্যার সম্মুখীন হলে তা ও কন্ট্রোল রুমকে অবগত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
মোবাইল অপারেটর গ্রামীণফোন ঘূর্ণিঝড় কবলিত এলাকার জনগণের বিনামূল্যে টেলিযোগাযোগ সেবা প্রদানের জন্য বিশেষ প্যাকেজ প্রদানের কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। গ্রামীনফোনের জরুরী যোগাযোগ নাম্বার হলো- ০১৭১১৫০৫৩৬৮, ০১৭১১০৮১১০১, ০১৭১১০৮১৮০৪।
ঘূর্ণিঝড় পরিস্থিতি সম্পর্কে সচেতন করতে খুদে বার্তা এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারণার পাশাপাশি মুঠোফোনে রিচার্জ সহজ করার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানিয়েছে বাংলালিংক। বাংলালিংকের জরুরি যোগাযোগ নাম্বার হলো- ০১৯৬২৪২৪৫৬৫, ০১৯১১৩১০৭৯৫, ০১৯৬২৪২৪৭০৬।
রবির গ্রাহকগণ যেকোনো সময় *৮# ডায়াল করলেই পাবেন ইমার্জেন্সি ব্যালেন্স, মিনিট ও ইন্টারনেট। রবির হটলাইন নাম্বার হলো- ০১৮১৭১৮৩৬৮, ০১৮১৯২১০৩৫০
টেলিটকের কোর সাইট ও হাব সাইটের বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিতে সব জেনারেটরের যান্ত্রিক ত্রুটি দূর করে পর্যাপ্ত জ্বালানি সরবরাহের পাশাপাশি বাণিজ্যিক বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। এ ছাড়া একটি রেসপন্স টিম গঠন ও কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে। ইমার্জেন্সি রিসপন্স টিমের নাম্বার- ০১৫৫০১৫৫০৪৫, ০১৫৫০৫১৫৫০৩৪, ০১৫৫০১৫৫০৫৩। কন্ট্রোল রুমের নম্বর-০২৩৩৩৩১৫৯০০, ০১৫৫৫১৫৫২১১।
মোখা মোকাবিলায় নিয়ন্ত্রণকক্ষ খুলেছে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল)। কন্ট্রোল রুমের যোগাযোগ নাম্বার-০২৪৮৩১৭৭৮৮।
টাওয়ার নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান ইডটকোর জরুরি যোগাযোগ নাম্বার-, ০১৮৭১০০৬৭৩০। সামিটের জরুরি যোগাযোগ নাম্বার-০১৭৯১০৪০৩৮৫, ০১৭১১০৮০৪৮৪। কির্তনখোলার জরুরি যোগাযোগ নাম্বার- ০১৪০১১৫৯৫৭২( চট্টগাম ও কক্সবাজার) ০১৭১৩৪৭৯৯১২(বরিশাল) । ফ্রন্টিয়ারের জরুরি যোগাযোগ নাম্বার- ০১৮১০১৬৯৫৪০, ০১৮১০১৬৯৫৪৮
আইএসপি, এনটিটিএনসহ অন্যান্য টেলিকম অপারেটরসমূহ দুর্যোগকালীন সময়ে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার সম্ভাব্য এলাকায় তাদের নেটওয়ার্ক সচল রাখতে কার্যক্রম গ্রহণ করেছে এবং সার্বক্ষণিকভাবে সচেষ্ট রয়েছে।