তৃতীয়বারের মত আয়োজিত হলো ওয়ার্ল্ড রোবট অলিম্পিয়াডের বাংলাদেশ পর্ব। জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি কমপ্লেক্সে আজ সারাদিন ধরে এই অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠিত হয়। এবছর অলিম্পিয়াডের থিম “Connecting the World”। সারা দেশ থেকে আগত শিক্ষার্থীরা তিনটি ক্যাটাগরিতে এ অলিম্পিয়াডে অংশ নেয়। যার মধ্যে ৮ টি দল “ফিউচার ইঞ্জিনিয়ার্স” ক্যাটাগরিতে, ২০ টি দল “ফিউচার ইনোভেটর্স” ক্যাটাগরিতে এবং ৫ টি দল রোবো স্পোর্টস ক্যাটাগরিতে নিবন্ধন করে। জাতীয় এ পর্বের বিজয়ীদের মধ্য থেকে চারটি দল পানামায় অনুষ্ঠাতব্য “ওয়ার্ল্ড রোবট অলিম্পিয়াড ২০২৩” এর আন্তর্জাতিক পর্বে অংশগ্রহনের সুযোগ পাবে।
বিকালে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি কমপ্লেক্সের আইনস্টাইন হল মিলনায়তনে এই অলিম্পিয়াডের পুরস্কার বিতরনী এবং সমাপনী অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় অতিথী হিসেবে বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক মুনির হাসান,কম্পিউটার সার্ভিসেস লিমিটেডের ব্যাবস্থাপনা পরিচালক জনাব মমলুক ছাবির আহমদ সহ আরো অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় মমলুক ছাবির আহমদ রোবট অলিম্পিয়াডের মত আয়োজনে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহনকে নতুন প্রজন্মের সাহসিকতার পরিচয় হিসেবে আখ্যায়িত করে তাদেরকে অভিবাদন জানান। মুনির হাসান তার বক্তব্যে এমন অলিম্পিয়াডে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণের সুযোগ তৈরী করে দেয়ার জন্য অভিভাবকদের ভূমিকার প্রশংসা করেন। শিক্ষার্থীদের মেধার উপর ভর কর বাংলাদেশ আরো অনেক দূরে পৌঁছে যাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যাক্ত করেন। এ সময় ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের সহযোগী অধ্যাপক কাজী হাসান রবিন তার বক্তব্যে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি অভিভাবকদের অনুপ্রেরনাও অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করেন।
জাতীয় এ অলিম্পিয়াডে ফিউচার ইনোভেটরস সেগমেন্টের সিনিয়র ক্যাটাগরিতে টিম রোবনিয়াম বাংলাদেশের হয়ে গোল্ড মেডেল পেয়েছে ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজ, রংপুর থেকে ইসরাফিল শাহীন অরণ্য, সানিডেল স্কুলের কাজী মোস্তাহিদ লাবিব এবং তাফসীর তাহরীম। এই ক্যাটাগরিতে সিলভার মেডেল পেয়েছে ফ্যান্টাজম টিমের উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল এন্ড কলেজের মুসফিরাত মোর্শেদ মুহাত এবং হাসিবুজ্জামান ভূঁইয়া। এবং ব্রোঞ্জ মেডেল পেয়েছে টাইগার ৭১ এর ধানমন্ডি গভঃ বয়েজ হাই স্কুলের আরেফিন আনোয়ার এবং ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের রাগিব ইয়াসার রহমান।
একই সেগমেন্টের জুনিয়ার ক্যাটাগরিতে সিলভার পেয়েছে সাইবার স্কোয়াড টিমের বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফ পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের আফিয়া হুমায়রা ও ফাহমিদা ফায়জা এবং মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের শাবনাম খান। এবং ব্রোঞ্জ মেডেল পেয়েছে থিংকার টেক টিমের ওয়াইডব্লিউসিএ হায়ার সেকেন্ডারি গার্লস স্কুলের রুদাইবা তারান্নুম এবং আফিয়া হাসিন আদ্রিতা।
অন্যদিকে জাতীয় এ অলিম্পিয়াডে ফিউচার ইঞ্জিনিয়ার্স সেগমেন্টে গোল্ড মেডেল পেয়েছে টিম মেকা স্ক্রাচ_৪০৪ এর নটর ডেম কলেজের আবু নাফিস মোহাম্মদ নূর রোহান এবং মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের মীর মুহাম্মদ আবিদুল হক আহনাফ। একই ক্যাটাগরিতে সিলভার মেডেল পেয়েছে টিম স্কেচি ড্রাইভার এর স্কাইভিউ হাই স্কুলের মোহাম্মদ আল-মুহতাসিম, রংপুর সরকারি কলেজের হোসেন মো: সিয়ান জাওয়াদ এবং ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের রাকিবুল ইসলাম রাকিব। এবং ব্রোঞ্জ মেডেল পেয়েছে টিম বেবি মাস্ক এর নটর ডেম কলেজের ফারহান তাজওয়ার আহমেদ এবং ঢাকা সিটি কলেজের আবদুল্লাহ আল মাহমুদ। অপরদিকে রোবো স্পোর্টস সেগমেন্টে ব্রোঞ্জ মেডেল পেয়েছে স্যার জন উইলসন স্কুলের ওয়ামিয়া নায়ার শেরিজাদ এবং ডিপিএস এসটিএস স্কুলের জুনাইরা মাহতালাত এর টিম রোবো রিজ।
ওয়াইডব্লিউসিএ এর শিক্ষার্থী রুদাইবা তারান্নুম তার অনুভূতি জানাতে গিয়ে বিজয়ী হওয়ার থেকে অংশ নেওয়াকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করে। ক্ক্যাচি ড্রাইভার দলের হোসেন মোঃ সিয়ান জাওয়াদ বর্তমানে রংপুরে পড়াশুনা করছে। ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ার সময় তাদের স্কুলে আয়োজিত একটি ওয়ার্কসপে অংশগ্রহনের মাধ্যমে রোবোটিক্স নিয়ে কৌতূহল তৈরি হয়। সে মনে করে রোবোটিক্স-এর জন্য প্রয়োজনীয় কিটসগুলো আরও সহসলভ্য হলে তারা আরও দ্রুত এগিয়ে যেতে পারবে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালে ওয়ার্ল্ড রোবট অলিম্পিয়াড-বাংলাদেশের জাতীয় পর্বের পৃষ্ঠপোষক অগমেডিক্স বাংলাদেশ। স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির হ্যাচ সেন্টারের সহযোগিতায় অলিম্পিয়াডটি আয়োজন করে বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘর এবং বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্ক।