দেশে বিভিন্ন স্থান থেকে আগত উদ্যোক্তাদের নিজের তৈরি পণ্য প্রদর্শনী ও বিকিকিনির মাধ্যমে শেষ হলো সপ্তম কালারফুল ফেস্ট। ৮০টি স্টলে ১৬০ জন উদ্যোক্তার পণ্য ছিলো দুই দিনের এই উৎসবে। উৎসবের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ফেসবুকের উদ্যোক্তাদের প্লাটফর্ম হিসেবে উই সম্ভবত দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বড় প্লাটফর্মের নজির স্থাপন করেছে। এখন এশিয়ার গণ্ডি পেরিয়ে তারা লন্ডন ও বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশের নারীদের এগিয়ে যাওয়ার গল্প তুলে ধরছে। আমরা তাদের এগিয়ে যাওয়ার জন্য গর্বিত। এই সাফল্যের ধারা তারা অব্যহত রাখবে। সরকারের ব্যবসায় সহায়ক নীতি গ্রহণ করে উই এর সফল নারী উদ্যোক্তারা দেশের অর্থনীতি সুদৃঢ় করবে।
এসময় সরকারে পুঁজি, প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তি সহায়তায় উদ্যোক্তাদের হাত ধরেই দেশ প্রগতির পথে এগিয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, প্রযুক্তি ব্যবহার করলে উদ্যোক্তারা শুন্য থেকে শতকোটিপতি হতে পারেন।
সৌদি বাদশাহ কিং সালমানের ভিশনকে বাংলাদেশের জন্য অমিত সম্ভাবনা সৃষ্টি করবে জানিয়ে তিনি বলেন, গত ফেব্রুয়ারিতে আমি সৌদিআরবে দিয়ে সৌদি পোস্টের ৫০০টি শক্তিশালী নেটওয়ার্ক এর সঙ্গে পরিচিত হয়েছি। সৌদি প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মাদ বিন সালমান ২০৩০ যে ভিশন নিয়েছেন তা খুবই প্রোগ্রেসিভ ও অ্যাগ্রেসিভ। তার আওতায় সেখানেও একটি নারী জাগরণ সৃষ্টি হয়েছে। আমার মনে হয়, আমাদের পরবর্তী মার্কেট হতে পারে রিয়াদ। যাতে করে আমাদের নারী উদ্যোক্তাদের নিজেদের পণ্যগুলো সেখানকার ২৮ লাখ প্রবাসী বাঙালী ও ৩ কোটি সৌদি নাগরিককে টার্গেট করে রফতানি করতে পারি। সৌদি পোস্টের সঙ্গে আমাদের আলোচনা চলছে। সেখানে উই-কে নিয়ে একটি চুক্তি করলে বিলিয়ন ডলার আয়ের সুযোগ সৃষ্টি করতে পারি। আমরা আশা করছি, শিগগিরই কম খরচে আমাদের এই নারী উদ্যোক্তাদের জন্য এই সুযোগ গ্রহণ করতে পারবেন।
প্রতিমন্ত্রী জানান, ই-কমার্স উদ্যোক্তাদের জন্য প্রতিটি জেলায় শেখ কামাল আইটি অ্যান্ড ইনোভেশন সেন্টারে একটি করে ওয়্যার হাউজ করা হবে। এছাড়াও আইডিয়া প্রকল্পে তৃতীয় অধ্যায়ে আরো ৫ হাজার নারী উদ্যোক্তা ৫০ হাজার টাকার সিড মানি পাবে এবং মাস্টার ক্লাস ৩ শুরু করতে আইসিটি বিভাগ সহায়তা করবে।
সভাপতির বক্তব্যে উই সভাপতি নাছিমা আক্তার নিসা জানান, মাস্টারক্লাস শেষ করা শিক্ষার্থী ও অংশগ্রহণকারীদের নিয়ে শিগগিরই উদ্যোক্তা প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। সেখান থেকে ১০০ জন উদ্যোক্তা নিয়ে আসা হবে যারা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া হবে। এটাই উই বিবর্তন অধ্যায়।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে উই উপদেষ্টা কবির সাকিব বলেন, নারীদের অ্যাক্সেস টু ফিন্যান্স-এ পিছিয়ে আছে। তাদের কখন কীভাবে আর্থায়ন সুবিধা লাগবে কীভাবে ফেরত দেবেন তা বোঝাতে প্রশিক্ষণ দরকার। একক ব্যবসায়ী থেকে বেরিয়ে সফল উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য।
যমুনা গ্রুপের পরিচালক আলমগীর আলম বলেন, নারীর গার্হস্থ্য কর্মঘণ্টার আর্থিক মূল্যায়ণ সময়ের দাবি। নারীদের জন্য বিশেষ দিবসের দরকার নেই। আমাদের প্রতিদিনই হোক নারী দিবস। পিছিয়ে পড়া নারীদের এখন নেতৃত্বে আনতে হবে।
সিল্কক গ্লোবাল এর সিইও এবং ইউ এর আন্তর্জাতিক উপদেষ্টা সৌম্য বসু বলেন, শিগগিরই ই-কমার্স উদ্যোক্তাদের মাস্টার ক্লাসের তৃতীয় অধ্যায় শুরু হবে।
অনুষ্ঠানে বেস্ট সেলার ও মাস্টার ক্লাসের তিন সেঞ্চুরিয়ানকে পুরস্কৃত করা হয়।