বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মবার্ষিকীর দ্বিতীয় উপহার হিসেবে এক হাজার স্মার্ট নারী উদ্যোক্তাকে ৫০ হাজার করে আইডিয়া প্রকল্প থেকে দেয়া হলো ৫ কোটি টাকার অনুদান। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের (বিআইসিসি) হল অব ফেইমে বৃহস্পতিবার দুপুরে ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব), উইমেন এন্ড ই-কমার্স (উই), আনন্দমেলা, উইমেন অন্ট্রপ্রিনিউরস্ অব বাংলাদেশ (ওয়েব), এসএমই ফাউন্ডেশন, ব্র্যাক, ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘ (টিএমএসএস) এবং এটুআই এর একশপ নারী উদ্যোক্তাদের হাতে এই অনুদানের ডামি চেক তুলে দেন জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী।
স্মার্ট নারী উদ্যোক্তা অনুদান প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্পিকার বলেন, প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে নারীর ক্ষমতায়ন ও লিঙ্গ সমতায় রোল মডেল হিসেবে দাঁড় করিয়েছেন। বাংলাদেশের নারীর অগ্রযাত্রায় ৭৮ হাজার নারীকে প্রতিষ্ঠিত করতে আইসিটি বিভাগ এর শি-পওয়ার প্রকল্প অনবদ্য ভূমিকা রেখেছে।
তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের নারী ক্ষমতায়নের অগ্রদূত। তিনি সারা বিশ্বে বাংলাদেশকে নারী ক্ষমতায়ন, নারী অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং জেন্ডার সমতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত বা রোল মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছেন। তারই নিরলস পরিশ্রম এবং দূরদৃষ্টি সম্পন্ন চিন্তাধারা, সংবেদনশীলতা এবং সকল কিছুর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের নারীরা দৃশ্যমানভাবে প্রতিটি ক্ষেত্রে এগিয়ে এসেছে।
সারা বিশ্বের মত বাংলাদেশও তথ্যপ্রযুক্তির অবাধ সুবর্ণ সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন স্পিকার। সবশেষে তিনি তথ্যপ্রযুক্তিকে কাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে নখদর্পণে নেওয়ার পাশাপাশি নিজেদের উন্নয়নের জন্য প্রতিটি ক্ষেত্রে এর সর্বাত্মক ব্যবহার নিশ্চিত করার পরামর্শ দেন।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যন্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আইসিটি বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব এন এম জিয়াউল আলম ও ই-ক্যাব সভাপতি শমী কায়সার।
সভাপতির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী বলেন, নারীর প্রকৃত ক্ষমতায়নে নারীর আর্থিক সক্ষমতার গুরুত্ব তার লেখনীর মাধ্যমে তুলে ধরেছেন বঙ্গবন্ধু। আর তা বাস্তাবায়ন করছেন বঙ্গবন্ধু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি নারী কর্মসৃজনের গুরু। তার গৃহীত নানা উদ্যোগের ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের মাধ্যমে ই-ক্যাব সভাপতি শমী কায়সার করোনায় ই-কমার্স কে লাইফ লাইনে পরিণত করেছেন। উই প্রতিষ্ঠাতা নাসিমা আক্তার নিশা নারীদের কর্ম সৃজনে অনবদ্য ভূমিকা রেখেছেন। তাদের কাজের ফলেই আমার সিংড়ার ১৮ বছরের আগেই সুহা সফল ফ্রিল্যান্সার ও উদ্যোক্তা হয়েছে।এমন পরিস্থিতিতে আগামীতে প্রযুক্তির মাধ্যমে ১৮ বছরের নিচের কিশোরী উদ্যোক্তাদেরও এই অনুদান দেয়ার ঘোষণা দেন ‘কমনসেন্স ইঞ্জিনিয়ারিং’ এ স্ব-শিক্ষিত পলক। তিনি প্রধান অতিথির পরামর্শ অনুযায়ী প্রত্যেক সংসদীয় আসনে আসনে ২জন নারী উদ্যোক্তাকেও অনুদান দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।
পলক বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ২৫০ কোটি টাকা থেকে চার বিভাগে ৫ মাসের প্রশিক্ষণ দিয়ে আমরা ২৫ হাজার স্মার্ট নারী উদ্যোক্তা তৈরি করবো।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে উইমেন অ্যান্ড ই-কমার্স ট্রাস্ট (উই) সভাপতি নাসিমা আক্তার নিশা বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ পূরণ হতে খুব একটা সময় লাগবে না। আমাদের নারী উদ্যোক্তারা ডিজিটাল বাংলাদেশের সুবিধা নিয়ে কোভিডে ঘুরে দাঁড়ান। আমরা নারী আমরা পারি প্রমাণ দিয়ে এবার তারাই স্মার্ট বাংলাদেশ গড়বো।
সকল নারী উদ্যোক্তাকে অভিবাদন জানিয়ে ই-ক্যাব সভাপতি শমী কায়সার বলেন, ফেসবুক থেকে ই-কমার্সের মূলধরায় আনতেই এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এই উদ্যোগ নারীকে তারও যে পারে তার প্রমাণ দিতে ভূমিকা রাখবে।
নিয়াজ মোহাম্মাদ জিয়াউল আলম বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান সুবর্ণ সময়ের রচয়িতা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অনেক উদ্যোগের মধ্যে আমার কাছে সবচেয়ে বড় সাফল্য মনে হয়েছে ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপকল্প বাস্তবায়ন।
অনুষ্ঠানে স্বারক সম্মাননা হিসেবে প্রধান অতিথিকে জমাদানির শাড়ি ও একটি নৌকা, বিশেষ অতিথিদেরকে একটি করে বনসাই গাছ এবং বিশেষ সম্মাননা স্মারক হিসেবে ই-ক্যাব এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি রাজিব আহমেদের হাতে নদী মাতৃক বাংলাদেশে প্রতীক হিসেবে পালতোলা নৌকা তুলে দেয়া হয়।
আইডিয়া প্রকল্প পরিচালক ও যুগ্ম সচিব মো. আলতাফ হোসেন, হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকর্ণকুমার ঘোষ, ই-ক্যাব পরিচালক আম্বরিন রেজা, একশপ টিম লিড রেজওয়ানুল হক জামি, ইউএনডিপি’র আনন্দমেলা উইং প্রজেক্টের কো-অর্ডিনেটর সারাহ জিতা প্রমুখ এসময় উপস্থিত ছিলেন।